কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আর কাউকে গ্রেফতার করে জেলে নেওয়াও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাজ নয়। দুর্নীতি হওয়ার আগে ব্যবস্থা নেওয়া দুদকের কাজ বলে মন্তব্য করেছেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।
রবিবার (১৯ মে) চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ‘দুর্নীতি প্রতিরোধে তাদের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় ইকবাল মাহমুদ এ কথা বলেন। তিনি বলেন, শুধু উন্নয়ন করলে হবে না, টেকসই উন্নয়ন করতে হবে। শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে নজর দিতে হবে। বিদ্যালয় থেকেই যেন শিক্ষার্থীরা ঝরে না পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
২০১৭ ও ২০১৮ সালে চাঁদপুর জেলা থেকে পাওয়া অভিযোগের পরিসংখ্যান তুলে ধরে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, অন্যান্য জেলার তুলনায় এ জেলায় দুর্নীতির অভিযোগ কম।
আগামী এক বছরে চাঁদপুরকে দুর্নীতিমুক্ত অথবা সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা যায় কিনা প্রশ্ন রেখে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, এজন্য জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ‘দুর্নীতিমুক্ত জেলা বাস্তবায়ন কমিটি’ গঠন করা যেতে পারে। এছাড়া প্রতিটি সরকারি দফতরে ‘এই অফিস দুর্নীতিমুক্ত’ এ জাতীয় বিলবোর্ড ও সাইন বোর্ড লাগানো যেতে পারে।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থার গলদ দূর করতে হবে। শিক্ষার মান বাড়ানো না গেলে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা সম্ভব হবে না। তিনি জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা নিজেরা দুর্নীতিমুক্ত থাকলে জেলা পর্যায়ে দুর্নীতি হবে না। প্রশাসনকেই জনগণের কাছে গিয়ে সেবা দিতে হবে। এটাই আধুনিক প্রশাসনিক ব্যবস্থা।
সরকারি সেবার নামে মানুষের কাছ থেকে যারা অর্থ নেন তাদের প্রতি দুদকের নজর আছে জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আইন প্রয়োগে দুদকের কোনও অনুমতির প্রয়োজন নেই। দুদক স্বাধীনভাবে এ দায়িত্ব পালন করছে। গত তিন বছরে দুদককে কেউ চাপ দেয়নি। এখানে কাউকে চাপ বা হস্তক্ষেপের সুযোগ দেওয়া হয়নি।
পুলিশের বিদ্যমান সেবা প্রক্রিয়াকে জনবান্ধব করার অনুরোধ জানিয়ে ইকবাল মাহমুদ বলেন, পুলিশ শুধু আসামি গ্রেফতার করতে নাগরিকের বাড়িতে যাবে তা নয়, বরং তাদের বাড়িতে যাবে কুশলাদি জানতে। তাদের সুবিধা-অসুবিধা জানার জন্য যাবে। যদি কোনও অসুবিধা থাকে তাহলে তার সমাধান করবে। এমন পুলিশ হলে তাদের প্রতি মানুষের ভয় থাকবে না। মানুষ পুলিশকে তখন ভয় পাবে না।
জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খানের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান ও ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান।