ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায় ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগের বাহক এডিস মশা নিধনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থতার কারণ এবং দায়ীদের চিহ্নিত করতে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দাখিলে আরও দুই মাস সময় চেয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ বিষয়ে আবেদন করা হয়।
আদালতের দায়িত্বরত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার কাজী মাইনুল হাসান আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আগামী সোমবার (২০ জানুয়ারি) এই মামলার শুনানিতে আবেদনটি উত্থাপন করা হবে।
এদিকে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির প্রধান ঢাকার জেলা জজ হেলাল চৌধুরী স্বাক্ষরিত ওই আবেদনে বলা হয়েছে, হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত অনুসন্ধান কমিটি গত ১০ ডিসেম্বর ও ৬ জানুয়ারি দুটি সভা করেছে। ৬ জানুয়ারি সভার সিন্ধান্ত অনুযায়ী ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া রোগের কারণ, প্রতিকার, দমন ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা বিষয়ে মতামত চাওয়া হয়। ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীট-তত্ত্ব বিভাগের একজন করে শিক্ষক, আইসিডিডিআর,বির বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি, সরকারের প্ল্যান-প্রোটেকশন বিভাগের একজন এবং ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথের প্রতিনিধির কাছে এ মতামত চাওয়া হয়েছে। এ কারণে প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে আরও সময় প্রয়োজন। এছাড়া ওই আবেদনে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার বাহক এডিস মশা নিধনে সংশ্লিষ্টদের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থতার কারণ এবং দায়ীদের চিহ্নিত করতেও কাজ চলছে বলে জানানো হয়।
এরআগে, ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর এক আদেশে ঢাকা জেলা জজের নেতৃত্বে দুই সদস্যের বিচার বিভাগীয় কমিটিকে বিষয়টি তদন্ত করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। কমিটির অপর সদস্য হলেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিবের নীচে নয় এমন একজন কর্মকর্তা। এই কমিটিকে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলো।
প্রসঙ্গত, গত ১৪ জুলাই আদালত এক আদেশে ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া রোগ প্রতিরোধে কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানাতে ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটির মেয়র, নির্বাহী কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। একইসঙ্গে নাগরিকদের ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়াসহ এ ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়া বন্ধ করতে এবং এডিস মশা নিধনে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত হবে না, তা জানতে চেয়েও রুল জারি করা হয়েছিলো। পরে ওই বিষয়ে দুই সিটির পক্ষ থেকে গত ২২ জুলাই হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। তবে সে প্রতিবেদনে আদালত অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং দুই সিটি করপোরেশনের প্রধান দুই স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে তলব করলে গত ২৫ জুলাই তারা স্বশরীরে হাজির হয়ে আদালতে ব্যাখ্যা দেন। এ ধারাবাহিকতায় গত ২৬ আগস্ট ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ ও এডিস মশার আবাসস্থল ধবংসে ঢাকাসহ সারাদেশে ব্যাপকভাবে ওষুধ ছেটানো ও অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।