X
বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫
১৯ আষাঢ় ১৪৩২

‘২৫টি ধর্ষণ মামলায় আসামি জামিন পেয়েছে ১৫ দিনের মধ্যেই’

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৪ জানুয়ারি ২০২১, ১৮:৩২আপডেট : ১৪ জানুয়ারি ২০২১, ১৮:৩২

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) ২০১২ সাল থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে হওয়া ২৫টি ধর্ষণ মামলা নিয়ে পর্যালোচনা করে দেখেছে প্রতিটি মামলাতেই আসামি ১৫ দিনের মধ্যে জামিন পেয়েছে। তিন জন অভিযুক্ত কারাগারে রয়েছে, দুই জন প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় রয়েছে, তারা ঘুরে বেড়াচ্ছে অথচ তাদের গ্রেফতার করা যায়নি।

২০১২ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ঘটে যাওয়া ২৫টি ধর্ষণ মামলার পর্যালোচনা সংক্রান্ত অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এমজেএফের সাতটি সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে এই ২৫টি মামলার ফলোআপ নেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, ‘ধর্ষণ মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতা ও দীর্ঘসূত্রিতা কেন হচ্ছে সে কারণগুলো খুঁজে বের করার জন্যই এ সংবাদ সম্মেলন।’

ঢাকা, গাজীপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, শেরপুর, জামালপুর ও জয়পুরহাট-এই ১০ জেলা থেকে ২৫টি মামলার তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

এই ২৫টি মামলার ভুক্তভোগীদের মধ্যে প্রতিবন্ধী নারী রয়েছেন তিন জন, পাঁচ থেকে ১০ বছরের শিশু রয়েছে চার জন, ১১ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে শিশু রয়েছে পাঁচ জন এবং ১৬ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে আছে ১৬ জন। দুইটি ধর্ষণের ঘটনায় দুই জন প্রতিবন্ধী নারীর দুইটি সন্তান রয়েছে। কিন্তু শিশু দুটি এখন পিতৃত্বের পরিচয় পায়নি। আর ধর্ষণের ফলে জন্ম হওয়া শিশুর দায়িত্ব রাষ্ট্র বহন করার কথা থাকলেও সেটা কার্যকর হচ্ছে না।

শাহীন আনাম বলেন, ‘ধর্ষণ মামলাতে মৃত্যুদণ্ডের বিধান থাকার পরও কেন ধর্ষণের হার বাড়ছে সেটা বড় প্রশ্ন। মানুষ জানতে চাইছে বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা, নানাধরনের আর্থ-রাজনৈতিক-সামাজিক প্রভাব এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদিচ্ছার অভাব কী এই জন্য দায়ী? অপরদিকে, আসামিপক্ষের বিভিন্ন রকম প্রভাবপ্রতিপত্তির কারণে, তারা নানা রকম প্রভাব বিস্তার করে যায়। আর এই প্রভাবের কারণে তারা জামিন পেয়ে যাচ্ছে। আর একবার জামিন পেয়ে গেলে তাকে পুনরায় আইনের আওতায় আনা খুব কষ্টকর। তাই যতদিন না অপরাধীর বিচার প্রক্রিয়া নিশ্চিত না হবে, ততদিন ধর্ষণ বন্ধ করা সম্ভব নয়।’

সর্বোপরি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, চিকিৎসকসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষের মানসিকতা যদি না বদলায়, তাহলে এটা বন্ধ হবে না বলেও মন্তব্য করেন শাহীন আনাম।

তিনি বলেন, ‘ধর্ষণ ঘটনার দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শান্তি না হওয়ায় ধর্ষণের ঘটনা না কমে বরং বেড়েই চলছে। তাই আমরা সব ধর্ষণ মামলার দ্রুত বিচার চাইছি। কিন্তু বিচারের বদলে বাড়ছে ধর্ষণ, ধর্ষণের আগে নির্যাতন এবং ধর্ষণের শিকার শিশু ও নারীর পোশাক, চলাফেরা, কাজের ক্ষেত্র ও পরিবারের প্রতি নানাধরনের অভিযোগ। আমরা আরও দেখেছি ধর্ষণের শিকার নারী ও শিশুকে দোষ দেওয়ার ফলে প্রকৃত অপরাধীরা উৎসাহতি হচ্ছে।’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আসামিরা জামিনে মুক্ত হয়ে মামলাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে এবং ভিক্টিমের পরিবারকে নানাভাবে হেনস্তা করছে, তারা হয়ে উঠেছে বেপরোয়া।

 এ সময় জানানো হয়, এই ২৫টি ধর্ষণ মামলার মধ্যে ছয় মাসের মধ্যে চার্জশিট হয়েছে ২২টি মামলার। অপরদিকে, ২০১৪ সাল থেকে ২০১৫ সালে চার্জশিট হয়েছে এমন ৯টি মামলার, ২০১৬ সাল থেকে ২০১৭ সালে চার্জশিট হয়েছে এমন ১২টি মামলার রায় এখনও হয়নি। এসব মামলার তেমন কোনও অগ্রগতিও নেই। আর তিনটি মামলার অভিযোগপত্রই দেওয়া হয়নি। অপরদিকে, ২৫টি মামলার মধ্যে দুইটি মামলা রয়েছে নিষ্ক্রিয় অবস্থায়, আর চারটি মামলার নথিই পাওয়া যাচ্ছে না। একটি মামলার মেডিকো-লিগ্যাল টেস্ট হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বেশিরভাগ মামলাতেই সাক্ষী হাজির না হওয়াতে মামলার তারিখ বারবার পিছিয়েছে। আর বারবার তারিখ পেছানোতে অভিভাবকরা হতাশ হয়ে আর কোর্টে যেতে চান না। আবার যারা দরিদ্র রয়েছেন তারা আর্থিক অসুবিধার কারণে মামলা চালিয়ে যেতে নারাজ থাকেন।

কেন ধর্ষণ মামলার বিচারের দেরি হচ্ছে এই কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা গেছে, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে, মামলা বিচারের জন্য নথি প্রাপ্তির তারিখ হতে ১৮০ দিনের মধ্যে কাজ শেষ করা এবং মামলার শুনানি শুরু হলে, তা শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রতি কর্মদিবসে একটানা পরিচালনার নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও তা যথাযথভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে না।

তদন্তে দীর্ঘসূত্রতার কারণে আইন দ্বারা নির্ধারিত সময়সীমা তথা ৯০ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করা হচ্ছে না। এছাড়া পাবলিক প্রসিকিউটর ভিকটিম ও সাক্ষীকে মামলার তারিখে আদালতে হাজির করানোর ব্যাপারে কোনও উদ্যোগ নেন না। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, থানা পুলিশ এবং বিচার প্রক্রিয়ায় ধর্ষণের শিকার শিশু ও নারীকেই নানাভাবে দোষারোপ করা হয়।

আসামিপক্ষের আইনজীবীরা ধর্ষনের শিকার শিশু ও নারীর প্রতি ইচ্ছাকৃত খারাপ আচরণ করেন। এমনকি আইনে ধর্ষণের অপরাধ আপস অযোগ্য হলেও, পারিপার্শ্বিক চাপে আপস রফার ক্ষেত্রে আদালত অনেক সময় নির্লিপ্ত থাকেন। মেডিকো লিগ্যাল ও সাক্ষ্য প্রমাণের ক্ষেত্রে টু-ফিঙ্গার টেস্টের মতো অবমাননাকর পদ্ধতি উচ্চ আদালতের রায়ে নিষিদ্ধ হলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলে এই প্রক্রিয়া এখনও চলছে।

এমজেএফের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, অভিযুক্ত ৫ আসামি জামিনে মুক্ত হয়ে মামলাকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। ভিকটিম ও তার পরিবারকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য ভয়ভীতি প্রর্দশন করাসহ নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করছে ৪ অভিযুক্ত। মামলার সাক্ষীদের সাক্ষ্য না দেওয়ার জন্য ভীতি প্রর্দশন করছে ৪ জন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা ও প্রভাবশালীদের প্রভাবিত করে বিভিন্ন মাধ্যমে সহিংসতার শিকার নারী ও তার পরিবারকে আপস রফা করতে চাপ প্রয়োগ করছে ৬ জন অভিযুক্ত। ভিকটিমকে সহযোগিতা করার জন্য যে সমাজকর্মীরা এগিয়ে এসেছেন, তাদের হুমকি দিয়ে নিবৃত্ত করার অপচষ্টো করছে ২ জন।

উল্টোদিকে দেখা গেছে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা ধর্ষণের শিকার শিশু ও নারীকে অশোভন প্রশ্নবাণে জর্জরিত করেন। ধর্ষণের ঘটনাটি পুনরাবৃত্তি করে ভিকটিমকে বর্ণনা করতে বাধ্য করেন এবং নানাভাবে চরিত্র হনন করেন। অভিযুক্তকে আটক করার ক্ষেত্রে অনীহা বা ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে।

অস্বাভাবিক দেরিতে ভিকটিমের মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হয় বলে আলামত নষ্ট হয়ে যায়। মেডিক্যাল রিপোর্ট সঠিকভাবে লিখা হয় না। ভিকটিমের বয়সের সঙ্গে ধর্ষণের মামলা নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত হলেও রিপোর্টে বয়স সঠিকভাবে লেখা হয় না। অস্বাভাবিক দেরিতে যে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়, তা ভিকটিমকে সরবরাহ করা হয় না। দেশের বেশির ভাগ জেলা সদর হাসপাতালে ভিকটিমের বয়স নির্ধারণের ব্যবস্থা নেই। অনেক ক্ষেত্রেই ডিএনএ টেস্ট করা হয় না। আর হলেও আসামি ডিএনএ টেস্টের ফলাফল প্রভাবিত করে।

এই সংবাদ সম্মেলনে ধর্ষণের শিকার নারীর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কয়েকটি দাবি জানানো হয়েছে। যেমন ধর্ষণ-সংক্রান্ত আইন সংস্কার করা, সাক্ষী সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা, নির্ধারিত সময়ে তদন্ত ও বিচার শেষ করা ও আইনি বিধানসমূহ সঠিকভাবে প্রতিপালিত হচ্ছে কি-না সে বিষয়ে শক্তিশালী মনিটরিং ব্যবস্থা প্রবর্তন ও দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা, ধর্ষণের মামলা আপস করা বা আপসের চেষ্টা করাকে কঠোর শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা।

প্রয়োজনে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০-এর ১৫ ও ১৬ ধারা সংশোধন করা। আর ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধিতে ভাষা ও শ্রবণ এবং বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা যাতে ধর্ষণ মামলায় সাক্ষ্য দিতে পারে, এমন ব্যবস্থা রেখে আইনটির সংশোধন করা।

মেডিক্যাল রিপোর্টে কোনোরকম ত্রুটি শাস্তিযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করা। ভিকটিমের আইনি সহায়তা নিশ্চিত করা। কেবল আইনজীবীর সহযোগিতা না দিয়ে ধর্ষণের শিকার নারী ও শিশু এবং সাক্ষীর আদালতসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত ও অন্যান্য ব্যয় বহন করা। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে পুলিশ, বিচারক, আইনজীবী, চিকিৎসক, কোর্ট স্টাফ ও ধর্ষণ মামলার বিচার সংশ্লিষ্ট সব স্টেকহোল্ডারদের জেন্ডার সমতা, হাইকোর্টের নির্দেশনা, সংস্কারকৃত আইন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রটোকল সম্পর্কে নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।

সংবাদ সম্মেলনে মামলার দিক নিয়ে কথা বলেন মানবাধিকারকর্মী ও আইনজীবী অ্যাডভোকেট এলিনা খান। তিনি বলেন, 'ধর্ষকের সঙ্গে ভিক্টিমের বিয়ে কোনোভাবেই আমি মেনে নিচ্ছি না।'

একইসঙ্গে এসব মামলার চার্জশিট এবং তদন্ত খুবই দুর্বলভাবে দেওয়া হয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, 'এসব মামলাতে তদন্ত এবং চার্জশিট এত দুর্বলভাবে করে দেওয়া হয় যে, অপরাধীদের শতভাগ বের হয়ে যাওয়ার মতো কারণ থাকে। সাক্ষী সুরক্ষা আইন খুব দরকার।' আর সাক্ষী আইন পরিবর্তন না হলে ভিক্টিম ব্লেইমিই চলতেই থাকবে বলেও জানান তিনি।

ধর্ষনের মামলা কার্যক্রম এবং এর বিচার বিলম্বিত করার কারণ সর্ম্পকে আইনের প্রয়োগ যথাযথভাবে না হওয়া এবং বিচারক স্বল্পতার কথা উল্লেখ করেন তিনি। অ্যাডভোকেট এলিনা খান বলেন, 'তাই ধর্ষণ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা পরিচালনা করার জন্য ডেডিকেটেড বিচারক দেওয়া দরকার।'

অ্যাডভোকেট এলিনা খান বলেন, 'ধর্ষণের শিকার নারীদের জন্য ২৪ ঘণ্টা মেডিক্যাল ফরেনসিক ল্যাব দরকার, নয়তো ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য নারীদের অনেক ভোগান্তি হচ্ছে। আর ২৪ ঘণ্টা যদি এ ল্যাব খোলা না থাকে তাহলে আলামত সংগ্রহ করা যাবে না।'

 

/জেএ/আইএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ইন্দোনেশিয়ায় ফেরি ডুবে নিহত ৪, নিখোঁজ ৩০
ইন্দোনেশিয়ায় ফেরি ডুবে নিহত ৪, নিখোঁজ ৩০
প্রবাসীদের সুবিধা দিয়ে ব্যাগেজ রুলস সংশোধন করলো এনবিআর
প্রবাসীদের সুবিধা দিয়ে ব্যাগেজ রুলস সংশোধন করলো এনবিআর
ধানমন্ডিতে  ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে এইচএসসি পরীক্ষার্থী আহত
ধানমন্ডিতে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে এইচএসসি পরীক্ষার্থী আহত
চোরের ছুরিকাঘাতে স্কুলছাত্র নিহত
চোরের ছুরিকাঘাতে স্কুলছাত্র নিহত
সর্বাধিক পঠিত
নবম পে-কমিশন গঠনের কার্যক্রম শুরুর আশ্বাস অর্থ উপদেষ্টার
সংযুক্ত কর্মচারী প‌রিষ‌দের জরু‌রি সভানবম পে-কমিশন গঠনের কার্যক্রম শুরুর আশ্বাস অর্থ উপদেষ্টার
বরখাস্ত হলেন সেই ম্যাজিস্ট্রেট তাবাসসুম ঊর্মি
বরখাস্ত হলেন সেই ম্যাজিস্ট্রেট তাবাসসুম ঊর্মি
পরীক্ষার প্রশ্নে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ, তদন্তে কমিটি
পরীক্ষার প্রশ্নে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ, তদন্তে কমিটি
অনুদান কমিটি থেকে অভিনেত্রীর অব্যাহতি!
অনুদান কমিটি থেকে অভিনেত্রীর অব্যাহতি!
কার দোষে শ্রমবাজার বন্ধ হয় জানালেন আসিফ নজরুল
কার দোষে শ্রমবাজার বন্ধ হয় জানালেন আসিফ নজরুল