রাজধানীর কাফরুল থানায় করা অর্থপাচার মামলায় ফরিদপুরের দুই ভাই সাজ্জাদ হোসেন বরকত এবং ইমতিয়াজ হোসেন রুবেলসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে সিআইডি পুলিশ। বুধবার (৩ মার্চ) ঢাকা চিফ ম্যাট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সহকারী পুলিশ সুপার উত্তম কুমার বিশ্বাস।
এর আগে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বরকত ও রুবেলের ৪৮৭ তফসিলের সম্পত্তি ও ১৮৮ ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
গত বছরের (২০২০ সাল) ২৬ জুন রাজধানীর কাফরুল থানায় অর্থপাচারের অভিযোগ বরকত ও রুবেলের বিরুদ্ধে সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় ওই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে দুই হাজার কোটি টাকার সম্পদ অবৈধ উপায়ে উপার্জন ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়। ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন সংশোধনী-২০১৫-এর ৪(২) ধারায় এ মামলা করা হয়।
এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১০ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত ফরিদপুরের এলজিইডি, বিআরটিএ, সড়ক বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি বিভাগের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন সাজ্জাদ ও ইমতিয়াজ। এছাড়া মাদক ব্যবসা, ভূমি দখল করে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তারা। এসি, নন-এসিসহ ২৩টি বাস, ড্রাম ট্রাক, বোল্ডার, পাজেরো গাড়ির মালিক হয়েছেন। টাকার উল্লেখযোগ্য অংশ হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করেন তারা।
এজাহারে আরও বলা হয়, প্রথম জীবনে এই দুই ভাই রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে এক বিএনপি নেতার ফরমায়েশ খাটতেন। তখন তাদের সম্পদ বলতে তেমন কিছুই ছিল না। পরে তারা আওয়ামী লীগে যোগ দেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, গত বছরের ১৮ জুন তিনি (এসএম মিরাজ) এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত হয়ে কাজ শুরু করেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই দুই ভাই অন্তত দুই হাজার কোটি টাকার বেশি সম্পদ অবৈধ উপায়ে উপার্জন করেছেন।
গত ১৬ মে রাতে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে দুই দফা হামলার ঘটনা ঘটে। সুবল সাহার বাড়ি শহরের গোয়ালচামট মহল্লার মোল্লাবাড়ি সড়কে। এ ঘটনায় গত ১৮ মে সুবল সাহা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে ফরিদপুর কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা করেন।
গত বছরের ৭ জুন রাতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে হামলা মামলার আসামি হিসেবে শহরের বদরপুরসহ বিভিন্ন মহল্লায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ সাজ্জাদ হোসেন, তার ভাই ইমতিয়াজ হাসানসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করে।
এ ঘটনার পর বরকতকে শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং রুবেলকে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন-
সেই বরকত-রুবেলের ১৮৮টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও ৫৭০৬ বিঘা সম্পদ জব্দ
আ.লীগ নেতাসহ পাঁচ জনের ৮৮টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ
দুই হাজার কোটি টাকা পাচার: জেলা ছাত্রলীগ সভাপতির স্বীকারোক্তি
