X
রবিবার, ১২ মে ২০২৪
২৯ বৈশাখ ১৪৩১

যা থাকছে গৃহহীনদের জন্য পুলিশের উপহারের বাড়িতে

রিয়াদ তালুকদার
১০ এপ্রিল ২০২২, ০৩:২৮আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২২, ০৩:২৯

‘মুজিব শতবর্ষে বাংলাদেশের কোনও মানুষ গৃহহীন থাকবে না’—প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই অঙ্গীকার বাস্তবায়নের সহায়ক হিসেবে তার নির্দেশনায় বাংলাদেশ পুলিশ দেশের প্রতিটি থানায় একটি করে গৃহহীন পরিবারকে বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য কর্মসূচি গ্রহণ করে। এ কর্মসূচির আওতায় প্রতিটি থানায় একটি করে গৃহহীন পরিবারকে ন্যূনতম এক কাঠা জমিসহ একটি বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার (১০ এপ্রিল ) গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এসব গৃহ হস্তান্তর এবং নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাজারবাগ প্রান্তে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন। প্রাথমিক পর্যায়ে ৪০০ বাড়ি হস্তান্তর করা হচ্ছে।

পুলিশ সদর দফতর বলছে, প্রতিটি বাড়ির আয়তন ৪১৫ বর্গফুট এবং এসব বাড়ি নির্মাণে আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। নির্মিত বাড়িসমূহে মোট ৩টি কক্ষ রয়েছে। মুজিববর্ষ উদযাপনের জন্য বছরব্যাপী নানা কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল বাংলাদেশ পুলিশ। করোনা মহামারির কারণে গৃহীত সে সব পরিকল্পনা পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়ায় কিছু অর্থ সাশ্রয় হয়। সে অর্থ দিয়ে গৃহহীনদের জন্য বাড়ি নির্মাণ করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবিত ‘সকলের জন্য আবাসন’ কার্যক্রমে শামিল হয় বাংলাদেশ পুলিশ।

পুলিশ সদর দফতরের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিকেশন্স বিভাগের এআইজি মো. কামরুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, মুজিববর্ষ উদযাপনের লক্ষ্যে বছরব্যাপী নানা কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল পুলিশ। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে সেসব পরিকল্পনা পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়ায় কিছু অর্থ বেঁচে যায়। সেই অর্থ দিয়ে গৃহহীনদের জন্য গৃহনির্মাণ করে প্রধানমন্ত্রীর আবাসন কার্যক্রমে শামিল হয় পুলিশ।

যা থাকছে গৃহহীনদের জন্য পুলিশের উপহারের বাড়িতে যে প্রক্রিয়ায় বাছাই হয় গৃহহীন পরিবার

বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা নারী, প্রতিবন্ধী, উপার্জনে অক্ষম, অতিবৃদ্ধ ও পরিবারে উপার্জনক্ষম সদস্য নেই-এমন পরিবার অথবা অসহায় মুক্তিযোদ্ধাকে এই প্রকল্পে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা নিজ নিজ থানা থেকে কমপক্ষে ১৫টি পরিবারকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করে নির্ধারিত ছক মোতাবেক তথ্য জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পাঠায়। পুলিশ সুপাররা প্রত্যেক থানা হতে পাওয়া (৫টি পরিবারের) তথ্য জেলা বিশেষ শাখার মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে প্রতিটি থানা থেকে ৩টি প্রার্থীর নাম অগ্রাধিকারক্রম নির্ধারণ করে নির্ধারিত ছকে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে পাঠানো হয়।

কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এর একজন প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে পাঠানো ৩টি প্রার্থীর নাম যাচাই বাছাই করে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে প্রতিটি থানা থেকে একটি পরিবারকে নির্বাচন করা হয়। গৃহহীন পরিবার বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ভৌগলিক ও আর্থিকভাবে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে একযোগে গৃহহীন পরিবারের বাড়ি নির্মাণের জন্য আরকিটেকচার রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। ওই প্রতিষ্ঠান সারাদেশে একযোগে বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করে। নির্মাণ কাজের জন্য শ্রমিক নিয়োগে সংশ্লিষ্ট গৃহহীন পরিবারকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স হতে সার্বক্ষণিক এসব বাড়ির নির্মাণ কাজ তদারকি করা হয়।

যা থাকছে গৃহহীনদের জন্য পুলিশের উপহারের বাড়িতে প্রকল্পে যা রয়েছে

দেশের সব থানায় একটি করে গৃহহীন পরিবারের জন্য গৃহনির্মাণ কর্মসূচির আওতায় দেশের প্রতিটি থানা এলাকায় বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি বাড়ি নির্মাণে খরচ হয়েছে আড়াই লাখ টাকা। দেশব্যাপী ৫২০টি বাড়ি নির্মাণে খরচ হয়েছে ১৩ কোটি টাকা।

বাড়ির নির্মাণে যেসব সামগ্রী ব্যবহৃত হয়েছে

বাংলাদেশ পুলিশের উদ্যোগে গৃহহীন পরিবারের জন্য নির্মিত বাড়ির আয়তন ৪১৫ বর্গফুট। এসব বাড়ির দেয়াল নির্মাণে প্রিকাস্ট লাইট ওয়েট ফোম কংক্রিট ব্লক, আরসিসি পিলার এবং ছাদের জন্য স্থানীয়ভাবে তৈরি স্যান্ডউইচ প্যানেল ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতিটি বাড়িতে একটি স্টিলের দরজা, ২টি পিভিসি দরজা এবং ৩টি করে স্টিলের জানালা রয়েছে। প্রিকাস্ট লাইট ওয়েট ফোম কংক্রিট ব্লক ব্যবহার হয়েছে দেয়াল নির্মাণে। ইটের বিকল্প ফোম কংক্রিট ব্লক ব্যবহার হয়েছে, যা পরিবেশবান্ধব।

ব্লকের আয়তন বড় হওয়ায় নির্মাণ সময় এবং খরচ সাশ্রয় হয়। যেকোনও স্থানে পরিবহন করে সহজে জরুরি সময়ে এটি নির্মাণ করা সম্ভব। আরসিসি পিলার এবং বিম ব্যবহার করা হয়েছে, বিধায় এগুলো টেকসই এবং আধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ। হিট প্রুফ অর্থাৎ গরমের সময় ঠান্ডা ও ঠান্ডার সময় গরম অনুভূত হবে।

নির্মাণ সামগ্রীর বিশেষত্বের কারণে বাড়িসমূহ সুন্দর ও দৃষ্টিনন্দন হয়েছে। ভূমিকম্প প্রতিরোধক ও ফায়ার রেজিস্টেন্ট। বাড়ি তৈরিতে যে ধরনের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে তা বিশেষ করে ইউরোপের দেশগুলোতে বাড়ি নির্মাণে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বাড়িটি বুয়েটের ইনস্টিটিউট অব অ্যাপ্রোপ্রিয়েট টেকনোলোজি কর্তৃক অনুমোদিত।

 

/আইএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে সুপারিশ আর কার্যকর নেই: শিক্ষামন্ত্রী
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে সুপারিশ আর কার্যকর নেই: শিক্ষামন্ত্রী
ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় রাশিয়ার ভলগোগ্রাদ শোধনাগারে আগুন
ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় রাশিয়ার ভলগোগ্রাদ শোধনাগারে আগুন
উল্লাসে মেতেছে শিক্ষার্থীরা
উল্লাসে মেতেছে শিক্ষার্থীরা
ঈদের পর শনিবার স্কুল খোলা থাকছে না
ঈদের পর শনিবার স্কুল খোলা থাকছে না
সর্বাধিক পঠিত
ইএফডিতে নজর দিয়ে হিরো হতে পারেন এনবিআরের চেয়ারম্যান
ইএফডিতে নজর দিয়ে হিরো হতে পারেন এনবিআরের চেয়ারম্যান
এসএসসি পরীক্ষার ফল জানা যাবে যেভাবে
এসএসসি পরীক্ষার ফল জানা যাবে যেভাবে
টাকা দিয়ে কেনা সনদের তালিকা পেয়েছি: ডিবি হারুন
টাকা দিয়ে কেনা সনদের তালিকা পেয়েছি: ডিবি হারুন
সোনার দাম আরও বাড়লো
সোনার দাম আরও বাড়লো
আজ বিশ্ব মা দিবস
আজ বিশ্ব মা দিবস