X
বুধবার, ১৫ মে ২০২৪
১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার কতটা সুরক্ষিত?

বাহাউদ্দিন ইমরান
০৪ নভেম্বর ২০২২, ১২:০০আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২২, ১৩:০৯

রাজনৈতিক পরিভাষায় সংবিধান হলো—রাষ্ট্রের মৌল ও সর্বোচ্চ আইন। ১৯৭২ সালে সব দল, মত ও রাজনৈতিক শক্তিগুলো প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সংবিধান প্রণয়নে অংশগ্রহণ করেছিল। ফলে নাগরিক অধিকারকে সংবিধানে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরা হয়েছিল। স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিক্রম করেও সংবিধানে নাগরিকদের অধিকার কতটা সুরক্ষিত, এ প্রশ্নে বিবিধ মন্তব্য করেছেন বিজ্ঞজনেরা।

মূলত সংবিধানের মৌলিক অধিকার অংশে চলাফেরার স্বাধীনতা, সমাবেশ, সংগঠন, চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা, পেশা ও বৃত্তির স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, সম্পত্তির অধিকার, গৃহ ও যোগাযোগের রক্ষণ বা গোপনীয়তার অধিকারের বাধ্যতামূলক সুরক্ষার বিধানকে নাগরিক অধিকার মর্মে বুঝানো হয়েছে।

তাই এসব অধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে মনে করলে তাকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন দেশের অন্যতম সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সংবিধানে প্রদত্ত অধিকার কারও ক্ষেত্রে ক্ষুণ্ন হলে তাকে তো প্রথমে এগিয়ে আসতে হবে। রিট মামলা দায়ের করতে হবে। কেউ যদি প্রতিকার না চান, তাহলে কীভাবে তিনি আদালত থেকে প্রতিকার পাবেন? যদিও যে কারণেই হোক, হয়তো বিচার বিভাগের ওপর জনগণের আস্থা নেই, বা বিচার বিলম্বের জটিলতার কারণে অনেকে আদালতে আসতে চান না। ফলে অধিকার লঙ্ঘনের সুরাহা হয় না।’

সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন হলো সংবিধান। আমাদের সংবিধানে প্রতিটি নাগরিকের জন্য তাদের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা আছে। সেসব অধিকার প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ সংবিধানেই রাখা হয়েছে। বলা হয়েছে, কেউ যদি সুরক্ষা না পান, তবে তার করণীয় কী হতে পারে। নাগরিকদের সত্যিকার অর্থে গড়ে উঠতে, আইন মেনে চলতে এবং নিয়মের বাইরে না যেতে এই সংবিধানে সবার কথা তুলে ধরা হয়েছে।’

সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘‘সংবিধানে কিছু মৌলিক অধিকার দিয়ে রাখা আছে এবং সেগুলো নিশ্চিতের কথা বলা হয়েছে। নাগরিক অধিকারের রক্ষাকবজ হিসেবে সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদে বলা আছে। এটি সুপ্রিম কোর্টের হাতে ন্যাস্ত রয়েছে। এই রক্ষাকবজ আমরা ব্যবহার করতে পারবো। কিন্তু প্রশাসনে যারা আছেন, তারা কিছু ‘টেকনিক’ ব্যবহার করেন, যার কারণে প্রতিকার বা অধিকারগুলো নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না। যেমন- ধরুন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে আদালতে হাজির করার বিষয়ে সংবিধানে বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু তারা কী করছে? তারা প্রথমে গ্রেফতার করে গোপন করে রাখছে। এর কয়েকদিন পর গ্রেফতার দেখিয়ে  ২৪ ঘণ্টার কথা বলে তারা ওই ব্যক্তিকে আদালতে হাজির করছে। ফলে ওই ব্যক্তিকে গোপন স্থানে আটকে রাখার ফলে তার যে প্রতিকার চাওয়ার সুযোগ ছিল, তা থেকে তিনি বঞ্চিত হচ্ছেন। এছাড়া সবারই সভা-সমাবেশ করার স্বাধীনতা রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে কী দেখছি? নিরাপত্তার কথা বলে অনুমতির অজুহাত দেখিয়ে সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। ফলে এ করকম টেকনিক্যাল কারণে সবসময় মৌলিক অধিকার বা প্রতিকার পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এসব ক্ষেত্রে আদালতে গেলেও প্রতিকার পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’

আশার বাণী শুনিয়ে মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘ভয়ের কারণ নেই। প্রতিকার যে আদালতের মাধ্যমে হচ্ছে না, তা কিন্তু না। যেসব ক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রমাণ আদালতের সামনে হাজির করতে পারছে, সেসব ক্ষেত্রে আদালত থেকে প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে।’

/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
নির্বাচন, শপথ ও মন্ত্রিসভা নিয়ে প্রশ্ন তোলা ভ্রান্ত ধারণা: অ্যাটর্নি জেনারেল
ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের বিরুদ্ধে রিভিউ শুনানি ১৮ জানুয়ারি
‘এপ্রিল পর্যন্ত নির্বাচন হতে পারে, সংবিধানে কোনও বাধা নেই’
সর্বশেষ খবর
আমাকে হরণ করে গেরুয়া উৎসার
আমাকে হরণ করে গেরুয়া উৎসার
মিশা-ডিপজলের কমিটির দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে নিপুণের রিট
মিশা-ডিপজলের কমিটির দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে নিপুণের রিট
অযত্নে নষ্ট হচ্ছে রাজধানীর ফুটওভার ব্রিজগুলো
অযত্নে নষ্ট হচ্ছে রাজধানীর ফুটওভার ব্রিজগুলো
ঝালকাঠিতে পথসভায় উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর ওপর হামলা
ঝালকাঠিতে পথসভায় উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর ওপর হামলা
সর্বাধিক পঠিত
শুক্রবারও চলবে মেট্রোরেল
শুক্রবারও চলবে মেট্রোরেল
সাকিব-তামিমের কারণে দলের পরিবেশ নষ্ট হয়েছে: ইমরুল 
সাকিব-তামিমের কারণে দলের পরিবেশ নষ্ট হয়েছে: ইমরুল 
সোনার অলংকার কেনাবেচায় নতুন হার নির্ধারণ
সোনার অলংকার কেনাবেচায় নতুন হার নির্ধারণ
পেঁয়াজ আমদানি শুরু
পেঁয়াজ আমদানি শুরু
তাসকিনকে সহ-অধিনায়ক করে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা
তাসকিনকে সহ-অধিনায়ক করে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা