জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে ‘রক্তঋণ’ শীর্ষক এক ব্যতিক্রমী স্মরণ সভা করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গীভূত ‘বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউট’। বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় জানায়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে বুদ্ধিজীবীদের অবদান তুলে ধরতে এ আয়োজন করা হয়।
রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত ব্যতিক্রমী স্মরণ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি বলেন, ‘একাত্তরে হানাদার বাহিনী আমাদের বুদ্ধিজীবীদের নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। এরমধ্যে ছিলেন শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, গবেষক, চলচ্চিত্রকার, সাহিত্যিক, কবিসহ বিশিষ্টজনেরা। এদের মধ্যে যিনি হার্টের চিকিৎসক ছিলেন তার হৃদয় ভেঙে ফেলা হয়েছে। যিনি চোখের চিকিৎসক ছিলেন তার চোখ উপড়ে ফেলা হয়েছে। এভাবে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করা হয়। অনেকে প্রশ্ন করেন রণাঙ্গনে বুদ্ধিজীবীরা যুদ্ধ করেননি। যারা এসব প্রশ্ন তোলেন তারা পাকিস্তানের দোসর। মুক্তিযুদ্ধে দেশের এই সূর্যসন্তানেরা বিভিন্নভাবে অবদান রেখেছেন। একারণেই তাদের খুঁজে খুঁজে হত্যা করা হয়েছে। জাতি শ্রদ্ধভরে তাদের স্মরণ করে।’
সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ২৫ মার্চের কালো রাতে নিরস্ত্র হাড্ডিসার মানুষের ওপরে হামলা শুরু হয়। সেই থেকে আমাদের বোধে রক্তঋণের স্থায়ী আবাসন। আমরা ২৫ মার্চের কালো রাতে পাকিস্তানি বাহিনীর হামলার শিকার হয়ে রক্তঋণে আবদ্ধ হয়েছি। দেশমাতৃকা রক্ষায় যারা প্রাণ দিয়েছেন, তাদের প্রতি আমাদের রক্তঋণ, যা শোধ করার নয়। ’
অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি ও গান পরিবেশন করে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতি স্মরণ করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বিভিন্ন কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও গবেষকরা। স্মৃতিচারণ শেষে সন্ধ্যায় শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে আগত অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এসময় মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন উপাচার্য ড. মো. মশিউর রহমান, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিজামউদ্দিন আহমেদ, ট্রেজারার অীধ্যাপক আবদুস সালাম হাওলাদার প্রমুখ।
‘রক্তঋণ’ শীর্ষক সভায় মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবীণ শিক্ষক অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন, বিভিন্ন দফতরের বিভাগীয় প্রধান, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিজামউদ্দিন আহমেদ, আরও বক্তব্য রাখেন ট্রেজারার প্রফেসর আবদুস সালাম হাওলাদার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন।