৯ বছর ধরে পরিচয় গোপন রেখে দেশের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করছিল একুশে পদক পাওয়া প্রবীণ সাংবাদিক আফতাব আহমেদ হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. রাজু মুন্সি (২৫)।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী থানাধীন শালগ্রাম সীমান্তবর্তী দুর্গম এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশের বিশেষায়িত বাহিনী এন্টি টেরোরিজম ইউনিট। বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর বারিধারায় এন্টি টেরিজম ইউনিটের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ইন্টেলিজেন্স বিভাগের পুলিশ সুপার এস এম হাসানুল জাহিদ।
তিনি আরও বলেন, ২০১৩ সালে গ্রেফতার হয়ে এক বছর কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পেয়ে পালিয়ে যান রাজু। পরে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু করেন। দীর্ঘদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে থাকার পর সর্বশেষ দেশের বাইরে পালানোর পরিকল্পনা করছিল।
গ্রেফতার মো. রাজু মুন্সির বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেন জানান পুলিশ সুপার।
উল্লেখ্য, আফতাব আহমেদ দৈনিক ইত্তেফাকের ফটোসাংবাদিক ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ ও পরবর্তী সময়ে অনেক দুর্লভ ছবি তুলে আলোকচিত্র সাংবাদিকতায় অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ একুশে পদকে ভূষিত হয়েছিলেন।
আফতাব আহমেদ রাজধানীর পশ্চিম রামপুরার ৬৩ নং ওয়াপদা রোডে নিজ বাসার তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটে একাকী বসবাস করতেন। ২০১৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর রাতে তিনি বাসায় একা ছিলেন। এ সুযোগে তার ব্যক্তিগত গাড়িচালক হুমায়ুন কবির ও মো. রাজু মুন্সিসহ অন্য আসামিরা টাকা লুট করার সময় আফতাব চিৎকার করলে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। গাড়িচালক হুমায়ুন কবির গ্রেফতার রাজুর চাচাতো মামা।
এ ঘটনায় নিহতের ছেলে মনোয়ার আহম্মেদ সাগর বাদী মামলা করেন রামপুরা থানায়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ২৫ মার্চ রাজু মুন্সিসহ অন্যদের বিরুদ্ধে রামপুরা থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিযোগপত্র করেন।
ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ মামলার বিচারকার্য শেষে ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ গ্রেফতার মো. রাজু মুন্সিসহ পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন। আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি শেষে হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০২২ সালের ২২ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতের রায় বহাল রেখে আদেশ দেন।