X
বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪
২৬ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের বড় সংকট শৌচাগার

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৭ মে ২০২৩, ১২:০০আপডেট : ১৮ মে ২০২৩, ২১:৪৮

সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষায় দিন-রাত ডিউটি করেন ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা। তবে তাদের জন্য শৌচাগারের কোনও ব্যবস্থা নেই। এ কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বিভিন্ন সিগন্যালে দায়িত্ব পালন করা ট্রাফিকের নারী ও পুরুষ সদস্যদের। আশপাশের বিভিন্ন মার্কেট, ভবন ও প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তাদের শৌচাগারের কাজ সারতে হয়। রাজধানীতে হাতে গোনা কয়েকটি সিগন্যালে ট্রাফিক বক্সে থাকলেও সেগুলোতেও নেই শৌচাগার ব্যবস্থা। এর ফলে পরবর্তীতে দেখা দিচ্ছে নানা শারীরিক জটিলতা।

রাজধানীর মতিঝিল, ফকিরাপুল, গুলিস্তান, পুরানা পল্টন ও নয়া পল্টন মোড়, শাহবাগ, কাকরাইল, রাজারবাগ শান্তিনগর, রামপুরা, মগবাজার, পান্থপথ ও ধানমন্ডির রাসেল স্কয়ারসহ বিভিন্ন সিগন্যালে ট্রাফিক পুলিশ বক্স রয়েছে। তবে এসব পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, সেগুলোর অধিকাংশতেই শৌচাগার নেই। যে দুয়েকটিতে যাও আছে, সেটাও সংরক্ষিত থাকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জন্য। ব্যবহার করতে পারেন না সার্জেন্ট ও ট্রাফিক সদস্যরা।

ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, অতিরিক্ত গাড়ির চাপ সামলাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগকে আট ইউনিটে ভাগ করা হয়েছে। কিন্তু সুযোগ-সুবিধার দিক থেকে তারা সবাই বঞ্চিত। ফলে তাদের মধ্যে রয়েছে নানা অসন্তোষ।

ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের বড় সংকট শৌচাগার

কর্মকর্তারা জানান, ট্রাফিকের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) প্রায় সময় এলাকা পরিদর্শনে (রাউন্ডে) বের হন। পরিদর্শন শেষ করে কোনও একটি বক্সে বসে তার নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকা মনিটরিং করেন। সাধারণত এসি যেই বক্সে বসেন, সেখানে ছোট আকারে তার জন্য সংরক্ষিত একটি শৌচাগারের ব্যবস্থা আছে। পাশাপাশি সার্জেন্ট ও ট্রাফিক সদস্যদের জন্যেও আলাদা ব্যবস্থা আছে। তবে বেশিরভাগ ট্রাফিক বক্সেই কোনও শৌচাগার নেই। অন্যদিকে, সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে প্রায়ই ট্রাফিক পুলিশ বক্স ভাঙার জন্য অভিযান চালানো হয়। এতেও অসন্তুষ্ট তারা।

ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল ট্রাফিক বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) এস এম বজলুর রশিদ বলেন, ‘ঢাকা সিটির প্রতিটি ট্রাফিক বক্সে শৌচাগারের ব্যবস্থা করা উচিত। কিছু কিছু বক্সে শৌচাগার আছে। অনেক জায়গায় নারী সদস্যরা ডিউটি করেন। প্রতিদিন মোড়ের কোনও দোকান কিংবা মার্কেটের শৌচাগার ব্যবহার করাও বিব্রতকর। সিটি করপোরেশনের সঙ্গে মৌখিক আলোচনা করেই ট্রাফিক বক্সগুলো করা হয়েছে।’

এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা ডিউটি এলাকার আশপাশের কোনও সরকারি অফিস, মসজিদ, দোকান ও মার্কেটের শৌচাগার ব্যবহার করেন। কিন্তু এটা কোনও সমাধান নয়। আমরা সারা দিন-রাত রাস্তায় ডিউটি করি। কিন্তু আমাদের ন্যূনতম সুবিধাটুকু নিশ্চিত হওয়া দরকার।’ এজন্য ডিএমপির সদিচ্ছার চেয়ে সিটি করপোরেশনের অসহযোগিতাকেই বেশি দায়ী করেন তিনি।

ট্রাফিক পুলিশের ভোগান্তি নিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মুনিবুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ট্রাফিক পুলিশ বক্সের বিষয়ে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা চলছে। রোদ-বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেক সময় মাঝে-মধ্যে একটু বসা কিংবা পানি পান করার প্রয়োজন হয়। এখন রাস্তার মোড়ে একটি বক্স থাকলে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যদের মধ্যে স্বস্তি থাকে। এছাড়া ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে সিটি করপোরেশনের কাছে বিভিন্ন চাহিদা দেওয়া হয়েছে। তারা (সিটি) চাহিদার ভিত্তিতে রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে বা পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশ বক্সগুলো করে দেবে। এছাড়া এবার নতুন করে তৈরি করা ট্রাফিক পুলিশ বক্সগুলোতে শৌচাগারসহ ফ্যান, পানি ও প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাও থাকবে।

তিনি আরও বলেন, রাস্তায় রাস্তায় দায়িত্ব পালন করা ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের শৌচাগার একটি বড় সমস্যা। এখানে (ট্রাফিক) নারী সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করেন। তাদের ভোগান্তি আরও বেশি। আমরা আমাদের অভিজ্ঞতার কথা বলেছি। এছাড়া সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নতুন করে তৈরি করা বক্সগুলোতে সব সুবিধা রাখার জন্য চাহিদা দেওয়া হয়েছে।

ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের বড় সংকট শৌচাগার

ট্রাফিক বক্সে সিটি করপোরেশনের অভিযান বিব্রতকর
ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) কাজী মিজানুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সিটি করপোরেশন বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে ট্রাফিক পুলিশ বক্স ভাঙে। এই বিষয় নিয়ে পুলিশ সদস্যরা বিব্রত। এখন সিটি করপোরেশনের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আশা করা যায় বিষয়টি সমাধান হয়ে যাবে।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, রাজধানীতে অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। সেগুলোর দিকে খেয়াল নেই। ঢাকার ফুটপাতগুলো অবৈধ ভাসমান ব্যবসায়ী, দোকান ও মার্কেটের দখলে।কিন্তু অভিযান চালানো হয় ক্লান্ত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের বিশ্রাম নেওয়ার জন্য করা ট্রাফিক বক্সগুলোতে। এটা উদ্দেশ্যমূলক। কিছুদিন আগে আসাদ গেট এলাকায় একটি ট্রাফিক বক্স ভাঙতে গেলে পুলিশ সদস্যদের বাধার মুখে ফিরে যেতে বাধ্য হয় উত্তর সিটির লোকজন। এরপর আর কোনও ট্রাফিক পুলিশ বক্স ভাঙার অভিযানে যায়নি তারা।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মুনিবুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন সহযোগিতার কথা জানিয়েছে। তারা ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের জন্য বক্স নির্মাণের জন্য পরিকল্পনা করেছে বলে জানতে পেরেছি। সেখানে ট্রাফিক সদস্যদের অসুবিধার কথা আবারও বলা হবে। তবে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ওয়ারীতে কয়েকটা করে দিয়েছে। কিছু কিছু পুরান ট্রাফিক বক্স নিয়ে সিটি করপোরেশনের আপত্তি রয়েছে। কিন্তু সিটি করপোরেশনকে বলা হয়েছে, তারা যেন নতুন একটি বক্স প্রস্তুত করে পুরাতন বক্স ও আপত্তি থাকা বক্সগুলো অপসারণ করে।

/এএইচ/জেইউ/ইউএস/এফএস/এমওএফ/
সম্পর্কিত
পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু: ওসি-চিকিৎসকসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা
কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার
ভুয়া পুলিশ সদস্য আটক
সর্বশেষ খবর
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা: আজিজ মোহাম্মদসহ ৩ জনের যাবজ্জীবন
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা: আজিজ মোহাম্মদসহ ৩ জনের যাবজ্জীবন
যে কারণে রুশ তেলের ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হচ্ছে না
যে কারণে রুশ তেলের ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হচ্ছে না
আমার সুন্দর স্বপ্নটিও এত মধুর হয় না: মাদ্রিদের জয়ের নায়ক জোসেলু 
আমার সুন্দর স্বপ্নটিও এত মধুর হয় না: মাদ্রিদের জয়ের নায়ক জোসেলু 
উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে আ.লীগের জয়জয়কার
উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে আ.লীগের জয়জয়কার
সর্বাধিক পঠিত
এবার কি ফুটপাত দখলমুক্ত হবে?
এবার কি ফুটপাত দখলমুক্ত হবে?
ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর ইস্যুতে ন্যাটোকে রাশিয়ার সতর্কতা
ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর ইস্যুতে ন্যাটোকে রাশিয়ার সতর্কতা
‘চুন্নু স্বৈরাচারের দোসর’, বললেন ব্যারিস্টার সুমন
‘চুন্নু স্বৈরাচারের দোসর’, বললেন ব্যারিস্টার সুমন
এক লাফে ডলারের দাম বাড়লো ৭ টাকা
এক লাফে ডলারের দাম বাড়লো ৭ টাকা
‘প্রেমটা থাকুক, বিয়ে কোনও এক সময় হয়ে যাবে’
‘প্রেমটা থাকুক, বিয়ে কোনও এক সময় হয়ে যাবে’