বেশ কিছুদিন ধরেই আকাশচুম্বী কাঁচা মরিচের দাম। ভারত থেকে আমদানির খবরে কিছুটা কমেছিল। তবে আমদানির পরও তা স্থায়ী হয়নি। একদিন কমে তো আরেকদিন বাড়ে। এই অস্থির দাম নিয়ে খুচরা দোকানদাররা দুষছেন পাইকারি ব্যবসায়ীদের। বাজারে কাঁচা মরিচে পাশাপাশি দাম বাড়তি আলুরও। বর্তমানে খুচরা বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা কেজিতে; যা কয়েকদিন আগেও ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
শুক্রবার (৭ জুলাই) মিরপুর ১ ও ২ নম্বরের কাঁচা বাজার, ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতা এবং কাওরানবাজার সরেজমিনে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
মিরপুর ২ নম্বরের ভ্রাম্যমাণ সবজি বিক্রেতা ইকবাল বলেন, আজ দেশি কাঁচা মরিচ বিক্রি করছি এক পোয়া (২৫০ গ্রাম) ৬০ টাকায়, ২৪০ টাকা কেজি। ভারতীয় মরিচ আজ আনিনি, এর দাম বেশি।
মিরপুর ১ নম্বরের কাঁচা বাজারের মরিচ বিক্রেতা মো. ইউসুফ বলেন, ‘আজ ভারতীয় মরিচ ৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি।’
অথচ গত বুধবারও মিরপুর ১ নম্বরে কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ৪০০ থেকে ৪৮০ টাকা কেজিতে। একদিনের ব্যবধানেই কমেছে ১৬০ টাকা। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, তারা জানেন না কখন কীভাবে দাম বাড়ছে-কমছে।
বাজার করতে আসা এক ক্রেতা বলেন, ‘অদ্ভুত এক অবস্থা চলছে বাজারে। সকালে এক দাম তো রাতে আরেক দাম।’
কয়েকদিন ধরে বাজারে বাড়তে শুরু করেছে আলুর দামও। আজ পাড়ামহল্লায় ও কাঁচা বাজারের খুচরা বিক্রেতারা আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা কেজি দরে। বাজারের কিছু কিছু দোকানে বগুড়ার লাল আলু বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা কেজিতে।
ভ্রাম্যমাণ আলু বিক্রেতা বেলাল বলেন, ‘আমার কেনা ৩৮ টাকা, আনতে খরচ হয় দুই টাকা। তারপর কাটা আলু আলাদা করে রাখি। শেষে ভালো আলু ৪৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করি।’
ভ্রাম্যমাণ আরেক বিক্রেতা বলেন, ‘ঈদের পর থেকেই আলুর দাম বেড়ে গেছে। তাই আমাদের বেশি দামেই বিক্রি করতে হয়।’
মিরপুর ১ নম্বরের আলুর পাইকারি বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৩ থেকে ৩৫ টাকা কেজিতে। আর কাওরানবাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩৬ থেকে ৩৭ টাকা কেজিতে।
মিরপুর ১ নম্বরের কাঁচা বাজারে আলুর পাইকারি ব্যবসায়ী হাবিব বলেন, ‘আমি ৩৩ থেকে ৩৫ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করছি। সাইজ আর কোয়ালিটি অনুযায়ী দামটা বেশি-কম হয়।’ রাজশাহী ও মুন্সীগঞ্জ থেকে আলু আনেন এই ব্যবসায়ী। খুচরা বিক্রেতারা তাদের যাতায়াত খরচ যোগ করে তারপর তাদের দাম ঠিক করেন বলেও জানান তিনি।
কাওরানবাজারের আলুর পাইকারি ব্যবসায়ী বাদল বলেন, ‘এবার মুন্সিগঞ্জে অতিরিক্ত গরমের কারণে আলুর উৎপাদন কম হয়েছে। এজন্য এখন দামও বেড়ে গেছে।’
তিনি জানান, প্রতি বস্তা আলু ৩৬ থেকে ৩৭ কেজিতে বিক্রি করছেন তিনি। প্রতিটি বস্তা ৬৫ কেজির হয়। এছাড়া কেউ যদি এক পাল্লা (৫ কেজি) করে কেনে সেক্ষেত্রে প্রতি কেজি ৪০ টাকা করে বিক্রি করেন।
বাজারে আসা এক ক্রেতা বলেন, আর কি কি দ্রব্যের দাম বাড়ানো বাকি আছে? কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ, আদা, রসুনের শেষে এখন আলুতে এসে ঠেকেছে।