জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যায় সাবেক সেনাশাসক জিয়াউর রহমান সরারসি জড়িত ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। সোমবার (১৪ অগাস্ট) দুপুরে নগরীর মেরাজনগর সুপার মার্কেট এলাকায় আয়োজিত ‘১৫ অগাস্ট জাতীয় শোক দিবস’ উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মেয়র বলেন, ৭৫ সালের মার্চ মাসে খুনি রশিদ, ফারুক জিয়াউর রহমানের সঙ্গে দেখা করে। খুনিরা সেদিন সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিফ অব আর্মি স্টাফ জিয়াউর রহমানকে বলেছিল, আমরা রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চাই। খুনি রশিদ, ফারুক সেদিন রাষ্ট্রদ্রোহী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও জিয়া তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেননি। মার্শাল ল-এ তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেননি। তাদের আটক করা বা গ্রেফতার করার কোনও চেষ্টা করেন নাই। মার্চ থেকে আগস্ট, এই দীর্ঘ সময়ে জিয়া তাদের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অথবা রাষ্ট্রপতি অথবা সরকারের কাছে তথ্য দেননি। বরং তিনি সেই সব খুনিদের বলেছেন ‘ইউ গো এহেড’ তোমরা এগিয়ে যাও। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা যখন অধস্তন কর্মকর্তাকে বলে তোমরা এগিয়ে যাও, তার মানে রাষ্ট্রপতিকে হত্যা করতে তিনি তাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন এতগুলো জীবন্ত প্রাণকে হত্যা করার।
মেয়র বলেন, জিয়াউর রহমান আরও ঘৃণ্য রাষ্ট্রদ্রোহী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিল। আপনারা জানেন, তখন জাসদ গঠন করা হয়েছিল সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ড করার জন্য, সেই জাসদের সঙ্গে নেপথ্যে জিয়াউর রহমানের সম্পর্ক ছিল এবং তাদের সঙ্গে সে জড়িত ছিল। সেটা প্রমাণ পাওয়া যায়, ৭ নভেম্বরে যে ঘটনা ঘটেছিল, সেই ঘটনায় সিরাজুল আলম খান বলেছিলেন, জিয়াউর রহমান এক ব্যক্তির মাধ্যমে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাদের গণবাহিনীকে ব্যবহার করে ৭ নভেম্বরের সেই ঘটনা ঘটায়। সিরাজুল আলম খান তার জীবদ্দশায় লেখনিতেও এই ঘটনাপ্রবাহ লিখে গেছেন। তাহলে একজন সেনা কর্মকর্তা কেন একটি বিরোধী রাজনৈতিক গোষ্ঠী, যারা রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিল, আজ যেমনি জঙ্গিবাদীরা রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত, সেরকম একটি গোষ্ঠীর সঙ্গে কী কারণে আদান-প্রদান, কী কারণে জড়িত-সম্পৃক্ত? এ ঘটনাপ্রবাহ থেকে পরিষ্কার হয় যে জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর হত্যার ষড়যন্ত্র এবং হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত ছিল।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য অ্যাড. সানজিদা খানম বক্তব্য রাখেন।