X
শনিবার, ০৪ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১

২২ বছর পর যেভাবে মিজানুরকে পেলো পরিবার

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২১ আগস্ট ২০২৩, ১৪:৪৮আপডেট : ২১ আগস্ট ২০২৩, ১৪:৫৬

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শুক্রবার (১৮ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টায় এলোমেলোভাবে ঘুরছিলেন মধ্যবয়সী এক ব্যক্তি। স্বজনদের ঠিকানা বলতে পারছিলেন না, কোথায় যাবেন তাও বলতে পারছিলেন না। পরে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) তাকে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের কাছে হস্তান্তর করে। ব্র্যাকের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি ও পাসপোর্ট দিয়ে তার পরিবারের খোঁজ করা হয়। দুবাই থেকে ওসমান গনি নামে একজন তার পরিচয় শনাক্ত করেন। তিনি মিজানুর রহমান। রবিবার (২০ আগস্ট) পরিবারের কাছে ফেরেন মিজানুর।

জানা গেছে, মিজানুর ২০০১ সালে সৌদি আরব যান। এরপর থেকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না তার। পাসপোর্ট অনুযায়ী তার নাম মো. মিজানুর রহমান। বয়স ৫৭। বাড়ি চট্টগ্রামে কোতোয়ালি থানার ১২০ সদরঘাট রোড। বাবার নাম আব্দুল জব্বার, মায়ের নাম ফাতেমা বেগম।

এপিবিএন’র সহকারী পুলিশ সুপার জান্নাতুল ফেরদৌস সাংবাদিকদের বলেন, ‘শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বাংলাদেশ বিমানের বিজি-১৩৬ বিমানে ঢাকায় পৌঁছান মিজানুর। এ সময় তিনি এলোমেলোভাবে ঘুরছিলেন। স্বজনদের ঠিকানা বলতে পারছিলেন না, কোথায় যাবেন তাও বলতে পারছিলেন না। তার পরিবারের সন্ধান পেতে আমরা ব্রাকের সহায়তা নেই। শনিবার (১৯ আগস্ট) ভোরে তাকে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেখান থেকে আজ তিনি পরিবারের কাছে ফিরেছেন।’

ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক শরিফুল হাসান বলেন, ‘শনিবার মিজানুরকে রাজধানীর আশকোনায় ব্র্যাক সেন্টারে আনা হয়। তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে পুরোপুরি সুস্থ নন। তার বাম পায়ে গভীর ক্ষত রয়েছে। মানসিকভাবে কিছুটা ভারসাম্যহীন। পাসপোর্টে দেওয়া জরুরি নম্বরে ফোন করে আমরা জেনেছি সেটি পরিবারের কারও নম্বর নয়, বরং যে দালাল পাসপোর্ট করে দিয়েছিল তার নম্বর। চট্টগ্রামের পুলিশকে ছবি ও পাসপোর্টের বিস্তারিত জানাই। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি ও পাসপোর্ট দিয়ে তার পরিবারের খোঁজ করি। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলি। সেই ছবি ও পোস্ট দেখে দুবাই থেকে ওসমান গনি নামে একজন ফোন দিয়ে জানান মিজানুর তাদের ভাই।’

তিনি বলেন, ‘সরকার বিদেশফেরত মানুষের কল্যাণে রেইজ নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড। এজন্য সারা দেশে ৩০টা ওয়েলফেয়ার সেন্টার করেছে। মিজানুরের মতো মানুষরা সেই প্রকল্পে সহায়তা পেতে পারেন। তবে ঠিকানা থাকার পরও একজন মানুষ ঠিকানাহীন হবেন এটি ভীষণ বেদনার। প্রবাসীদের যেমন স্বজনদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করা উচিত তেমনই স্বজনদেরও খোঁজ রাখা উচিত।’

পরিবারের সদস্যরা জানান, মিজানুর ২০০১ সালে সৌদি আরব যাওয়ার পর থেকে আর কখনোই দেশে আসেননি। তিনি সেখানে গাড়ি চালাতেন। তিনি যে দেশে এসেছেন পরিবারের কেউ জানতেন না। পরে‌ ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পারেন তারা।

মিজানুরের আত্মীয় আমির হামজা বলেন, ‘দীর্ঘ দুই দশক ধরে মিজানুরের সঙ্গে পরিবারের যোগাযোগ নেই। সৌদি আরবে গাড়ি চালাতেন তিনি। কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বদরখালীতে তার বাড়ি। ছেলের শোকে তার বাবা মারা গেছেন। মা বেঁচে আছেন। তারা ছয় ভাই। মিজানুরকে দেখার জন্য তার মা অস্থির হয়ে আছেন।’

/এসও/আরকে/
সম্পর্কিত
১০ মাসে এলো রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স
প্রবাসীদের সমস্যা সমাধানে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে: প্রতিমন্ত্রী
ছয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী
সর্বশেষ খবর
ছেলের মৃত্যুর ৪ দিনের মাথায় চলে গেলেন বাবা, গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া
ছেলের মৃত্যুর ৪ দিনের মাথায় চলে গেলেন বাবা, গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া
গাজা ও ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে কাজ করতে চায় বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গাজা ও ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে কাজ করতে চায় বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
অনেক নার্ভাস ছিলেন সাইফউদ্দিন
অনেক নার্ভাস ছিলেন সাইফউদ্দিন
বকশিবাজার মোড়ে বাসের ধাক্কায় পথচারী নিহত
বকশিবাজার মোড়ে বাসের ধাক্কায় পথচারী নিহত
সর্বাধিক পঠিত
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
যশোরে আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
যশোরে আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
২৫ জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা শনিবার বন্ধ
২৫ জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা শনিবার বন্ধ
কেমন থাকবে আগামী কয়েকদিনের আবহাওয়া?
কেমন থাকবে আগামী কয়েকদিনের আবহাওয়া?
নদীতে ধরা পড়ছে না ইলিশ, কারণ জানালেন মৎস্য কর্মকর্তা
নদীতে ধরা পড়ছে না ইলিশ, কারণ জানালেন মৎস্য কর্মকর্তা