বিএনপির নারী নেত্রীদের নিয়ে অসম্মানজনক ও মানহানিকর বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ এনে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সংসদ সদস্যপদ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ৫৫ জন নারী আইনজীবী।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) জাতীয় সংসদের স্পিকারের কাছে লেখা এক চিঠিতে তারা এ দাবি জানান।
এর আগে গত ১১ আগস্ট জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট’ আয়োজিত এক সভায় বিএনপির উদ্দেশে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিদেশিদের পেছনে ছুটে কোনও লাভ নেই। ... রাত-বিরাতে আপনাদের (বিএনপি) মহিলা নেত্রীদের সাজগোজ করিয়ে নিয়ে বিদেশিদের কাছে ধরনা দেওয়া—এটা দয়া করে বন্ধ করুন। এতে কোনও লাভ হয় নাই। ওরা-সহ আপনারা যান, আমরা জানি। মানুষে নানা কথা বলে। আমি এগুলো বলতে পারবো না।’
ড. হাছান মাহমুদের এ ধরনের বক্তব্য ভিত্তিহীন, অনৈতিক, অশোভন, লিঙ্গ সংবেদনশীল এবং দায়িত্বহীনতার পরিচায়ক বলে মনে করেন ৫৫ নারী আইনজীবী। চিঠিতে তারা আরও বলেন, ‘আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রী ও সংসদের স্পিকার সবাই নারী। যখন সারা বিশ্ব নারীর ক্ষমতায়নের দিকে তাকিয়ে আছে, তখন হাছান মাহমুদের এমন অসভ্য ও নির্মম আচরণ সমাজ উন্নয়নের স্বাভাবিক স্রোতের বিপরীত।’
‘ড. হাছান মাহমুদের এমন বক্তব্য সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এছাড়া সংবিধানের ২৭, ২৮, ২৯ ও ৪০ অনুচ্ছেদ অনুসারে নারীরা পুরুষের সমান অধিকার ভোগ করার অধিকারী। সংবিধানের মর্যাদা রক্ষার শপথ নেওয়ার পরও নারীদের বিরুদ্ধে অসম্মানজনক, অশোভন ও মানহানিকর বক্তব্য দেওয়ার মাধ্যমে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। সে জন্য তার সংসদ সদস্যপদ বাতিল হওয়া প্রয়োজন।’
‘চিঠিতে ওপরে উল্লিখিত বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে এবং দেশের সচেতন নারী হিসাবে দেশের বৃহত্তর নিরাপত্তার স্বার্থে আপনার (স্পিকার) কাছে ড. হাছান মাহমুদের সংসদ সদস্যপদ বাতিলের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।’
৫৫ জন আইনজীবীর মধ্যে রয়েছেন—অ্যাডভোকেট ফাহিমা নাসরিন মুন্নি, আরিফা জেসমিন নাহিন, শামীমা সুলতানা দীপ্তি, সরকার তাহমিনা সন্ধ্যা, শামীমা আক্তার বানু, মর্জিনা রায়হান মদিনা, বেগম দেলওয়ারা হাবিব, শাহানারা বেগম, মৌসুমি আক্তার, আয়েশা আক্তার প্রমুখ।