কক্ষের ভেতরে ধূমপান, উচ্চ শব্দে গান বাজানো ও গাঁজা সেবনের প্রতিবাদ করায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শেখ রাসেল হলের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রকে মারধর ও লাঞ্ছনার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০টায় হলের ৮১৬ নং কক্ষে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
মারধরের শিকার শিক্ষার্থী মো. মাহিবি রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ ব্যাচের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও শেখ রাসেল হলের আবাসিক ছাত্র। এ ঘটনায় হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।
মারধর ও লাঞ্ছনার ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন- ৪৮ ব্যাচের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের (সিএসই) প্রিতম সাহা ও প্রকাশ মিত্র, ড্রামা এন্ড ড্রামাটিক্স বিভাগের মাহবুব রহমান উৎসব, নৃবিজ্ঞান বিভাগের মির্জা তৌফিক রায়হান এবং ৪৯ ব্যাচের পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের মুশফিকুর রহমান পরশ।
ভুক্তভোগীর অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, শেখ রাসেল হল চালু হওয়ার পর ৫০ ব্যাচের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের মাহিবি ও রাকিবসহ সিএসই বিভাগের দুই জনকে বরাদ্দ দেয়া হয় ৮১৬ নং কক্ষ। প্রথম দিনেই সিএসই বিভাগের ১৫-২০ জন এসে অন্যদের রুম ছেড়ে দিতে বলে। এতে রাজি না হওয়ায় সিএসই বিভাগের ৫০ ব্যাচের দুজনকে সরিয়ে ৪৮ ব্যাচের প্রিতম সাহা ও প্রকাশ মিত্র সেখানে উঠে। তারপর থেকে মাহিবি ও রাকিবকে কক্ষ ছাড়ার হুমকি দিতে থাকে তারা। এতে কাজ না হওয়ায় প্রিতম ও প্রকাশ কক্ষের ভেতর ধূমপান ও গাঁজা সেবন শুরু করে। শুধু তাই নয়, বন্ধুবান্ধব ও জুনিয়রদের নিয়ে নিয়মিত আড্ডা দেয়া থাকে তারা। এ ছাড়া গালিগালাজ এবং রাতভর উচ্চ শব্দে গান বাজাতেন তারা।
সোমবার রাতে ভুক্তভোগীরা এসবের প্রতিবাদ করলে আনুমানিক রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রিতম সাহা পরশ তার দুই বন্ধুকে ডেকে মাহিবিকে মারধর করে।
এ বিষয়ে শেখ মুশফিকুর পরশ বলেন, ‘একসাথে খেলাধুলা করার কারণে প্রিতম ভাইয়ের সাথে আমাদের ভালো সম্পর্ক ছিল। গতকাল রাতে ভাই যখন জানালেন যে জুনিয়র রুমমেট তার কথা শুনছে না তখন আমরা গিয়ে তাকে সতর্ক করি। গায়ে হাত তোলার কোনও ঘটনা ঘটেনি। এটি মিথ্যা কথা।’
অপর অভিযুক্ত প্রিতম বলেন, ‘মাহিবি জুনিয়র হওয়া সত্ত্বেও তার আচরণে যথেষ্ট সমস্যা ছিল। আমরা রুমে ধূমপান করি সত্য, তবে গাঁজা খাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। গতকাল রাতে তাকে জোরে ভিডিও ছাড়তে নিষেধ করেছি। সে না শোনায় আমার বন্ধুরা তাকে ধমক দিয়েছে। মারধরের ঘটনা ঘটেনি।’
এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ তাজউদ্দীন শিকদার বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি অভ্যন্তরীণভাবে সমাধানের চেষ্টা করছি। প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি।’