সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে দুর্যোগ মোকাবিলায় ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার (এনইওসি) প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। এছাড়াও হিউম্যানিটিরিয়ান স্টেজিং এরিয়া স্থাপনের কাজও চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস-২০২৩’ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা জানান। মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে ছিল স্যুভেনির প্রকাশ, ভিডিও ক্লিপ প্রদর্শন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সিপিবির স্বেচ্ছাসেবক পুরস্কার বিতরণ, ক্রোড়পত্র প্রকাশ, পোস্টার ও লিফলেট বিতরণ, আলোচনা অনুষ্ঠান, গোলটেবিল বৈঠক, ভূমিকম্প ও অগ্নিকাণ্ড বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি মহড়া, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার ইত্যাদি।
এছাড়াও ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান ছাড়াও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি’র সভাপতি এ বি তাজুল ইসলাম ও সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক মিজানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ভৌগলিক অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ সংঘটিত হয়ে থাকে। এ বিষয়টি চিন্তা করে দূরদর্শী জাতির পিতা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসরণে বর্তমান সরকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাসে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। বর্তমান সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হল, প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগের ঝুঁকি মোকাবিলায় যুগোপযোগী ও সমন্বিত দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাস ও প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম গ্রহণের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এদেশে দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাস কর্মসূচির মূল ভিত্তি গড়ে গেছেন বলেও মন্তব্য করেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘তার সুযোগ্য কন্যা প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্ব ও সুশাসনে আজ তা এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা, পরিশ্রম, দূরদর্শী পরিকল্পনা ও নতুন নতুন কৌশলকে কাজে লাগিয়ে বর্তমান সরকার আজ দেশকে সারা বিশ্বের কাছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় অনুকরণীয় রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।’
যে কোনও দুর্যোগে যথাযথ পূর্বাভাস, প্রস্তুতি ও ঝুঁকিহ্রাস করে জনগণের জনমালের ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব উল্লেখ করে ডা. এনামুর রহমান বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকারের নীতি পরিকল্পনায় ইতোমধ্যে দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাস কৌশল অন্তর্ভূক্ত হয়েছে এবং সবধরনের দুর্যোগের প্রস্তুতিতে সরকার বহুমুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। দেশবাসীকে আগাম সর্তকর্বাতা দিতে দেশের আটটি স্থানে পরীক্ষামূলকভাবে বজ্রপাত চিহ্নিতকরণ যন্ত্র বা লাইটেনিং ডিটেকটিভ সেন্সর বসানো হয়েছে। তাছাড়া বজ্রপাত প্রবণ ১৫টি জেলায় ৩৩৫টি বজ্র নিরোধক দণ্ড স্থাপন করা হয়েছে।’