X
শনিবার, ০৪ মে ২০২৪
২১ বৈশাখ ১৪৩১

‘দারিদ্র্য দূর করতে সামাজিক পুঁজিই বড় পুঁজি’

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৭ অক্টোবর ২০২৩, ১৬:৫৫আপডেট : ১৭ অক্টোবর ২০২৩, ১৬:৫৫

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ঘটনা মুক্তিযুদ্ধ। ওই সময় অন্য রাষ্ট্র থেকে নতুন রাষ্ট্র বিনির্মাণ হচ্ছে। তখনও মানুষ ঐক্যবদ্ধ ছিল, সক্রিয় ছিল উন্নয়ন। সবচেয়ে বড় পুঁজি ছিল আমাদের সামাজিক উন্নয়ন। ওই সময়ে আমরা আমাদের মনের দারিদ্র্য দূরীকরণে সবচেয়ে ভালো করেছি। সুতরাং, দারিদ্র্য দূর করতে হলে মানুষের ঐক্যবদ্ধ ও সামাজিক পুঁজিটাই সবচেয়ে বড় পুঁজি। আমরা নানা চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে এগোচ্ছি। কিন্তু, এখন মানুষ যখন ঐক্যবদ্ধ হতে পারছে, তখনই সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে মনের দারিদ্র্য কিংবা বাস্তব দারিদ্র্য দূর করবার।

মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আন্তর্জাতিক দারিদ্র বিমোচন দিবস ২০২৩ উপলক্ষে “শোভন কাজ ও সামাজিক সুরক্ষা: সকলের জন্য সমান মর্যাদা” শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

অ্যাসোসিয়েশন অব ডেভেলপমেন্ট এজেন্সিজ ইন বাংলাদেশ (এডাব) এবং বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ) যৌথভাবে এই আলোচনা সভা আয়োজন করে।

ড. আতিউর রহমান বলেন, আমাদের দেশের সরকার চেয়েছে মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজেরা কিছু করুক। সেই সুযোগ না দিলে কাজটা সরকারকেই করতে হতো। সরকারের হাতে এত অর্থ কোথায়? তখন সরকার আপনাদের উপর আরও কর আরোপ করতো। এই করের টাকা দিয়ে সামাজিক সুরক্ষার নামে সরকার কিছু সুযোগ-সুবিধা করে দিতো। আমার বিশ্বাস, শুধু সরকারি ব্যবস্থায় আজকের অবস্থান তৈরি হতো না। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগেই বাংলাদেশের আজকে এই অবস্থান।

তিনি বলেন,  আমরা আজকে হয়তো অনেক পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কথা বলছি। কিন্তু, একটা সময় তো ছিল আমাদের— যেখানে প্রায় শতকরা ৮০ ভাগ মানুষই সময়মতো খেতে পারতো না, একটির বেশি পোশাক পর‍তে পারতো না। শীতের সময় শীতবস্ত্র ছিল না। পায়ে কোনও জুতো ছিল না৷ বেশিরভাগই কুঁড়েঘরে থাকতো। সেই জায়গাগুলো তো বদলেছে। সেই বদলটা একা কেউ পারেনি৷ সবাই মিলেই আমরা করেছি। যেখানে রাষ্ট্র, বাজার, সামাজিক সংগঠন সকলেরই অংশগ্রহণ ছিল। এই কথাগুলো মেনে নেওয়া ভালো। তথ্য যা-ই বলুক না কেন, এগুলো আমরা খালি চোখে দেখতে পাই। তবে, নিঃসন্দেহে আরও অনেক বেশি পরিবর্তনের সুযোগ আছে। আরও বড়ো ধরণের জীবনমান পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা আমাদের আছে। কিন্তু, যতটুকু আমরা পেরেছি, সেটি স্বীকার করে আরও কী করা যায়, সেটি নিয়ে আমরা আলাপ করতে পারি।

সাবেক এই গভর্নর বলেন, গত ৫২ বছরে যতটুকু সাফল্যই আমরা দেখতে পাচ্ছি, সেখানে যেখানেই মানুষ এক হবার চেষ্টা করেছে, সেখানে কিছু না কিছু সাফল্য তারা এনেছে। একারণেই বাংলাদেশ এগিয়েছে। যেকোনও সরকারই বলতে পারেন, আমরা এই পরিবেশটা তৈরি কর‍তে পেরেছি, যে কারণে মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করেছে। এর কৃতিত্ব সরকারকে দিতে হবে৷ সরকার বেসরকারি কাজ করতে নাও দিতে পারতো। অনেক দেশেই দেয় নাই, আপনারা জানেন।

তিনি আরও বলেন, আরও একটি পিলার আছে। সেটি হলো বাজার। যেটাকে অস্বীকার করার উপায় নেই। বাজারকেও বাদ দিয়ে শুধু সরকার বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশকে এ অবস্থায় আনতে পারতো না। বাজারের সরবরাহ চেইন থেকে আমরা সবাই সুবিধা নিচ্ছি। সুতরাং, পিলার কিন্তু ৩টি। রাষ্ট্র, বাজার এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান— এগুলো নিয়েই আমরা এগোচ্ছি। এই বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে আমরা সামনে কী করবো সেই আলাপ করতে পারি। আমরা আশা করছি যে, এই দৃষ্টিভঙ্গিটাই বজায় থাকুক।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সাবেক সভাপতি শারমীন রিনভী বলেন, আমরা পরিসংখ্যান ও অনুসন্ধানে দেখছি— আমাদের দারিদ্র্যর হার কমেছে। বাস্তবে কিন্তু তা হচ্ছে না। উন্নয়ন হয়েছে অবকাঠামোগত। সরকারি কর্মকর্তাদের সবচেয়ে বেশি বেতন-ভাতা বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে বাজারে আরও প্রভাব পড়েছে। আমরা এখন তথ্য দিয়ে মিথ্যাকে জায়েজ করার চেষ্টা করছি। কারণ, তথ্য যারা বানাচ্ছে, তারা যদি সত্য না বলে তাহলে তথ্যও সত্য হয় না।

সভাপতির বক্তব্যে এডাবের কোষাধ্যক্ষ মাসুদা ফারুক রত্না বলেন, আমাদের মানসিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। আমাদের গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির কারণে সরকারি পর্যায়ে গবেষণা বিকশিত হচ্ছে না। শুধু এনজিওকর্মীরাই গবেষণা এগিয়ে নিচ্ছে। নতুন করে বেসরকারি চাকরিজীবীদের উপর ট্যাক্স চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। যেটা দারিদ্র্য বিমোচনে অন্তরায়। আমাদের টেকসই উন্নয়নের দিকে আগাতে হবে।

আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এডাবের কর্মসূচি পরিচালক কাউসার আলম কনক।

/এএজে/এমএস/
সম্পর্কিত
চাই সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষার বাজেট
আ.লীগের ইশতেহার দেশের উন্নয়ন পরম্পরার রূপরেখা: ড. আতিউর রহমান 
ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আতিউর রহমানকে সংবর্ধনা
সর্বশেষ খবর
বিএনপি নেতাদের কথা মাঠকর্মীরা শোনে না: ওবায়দুল কাদের
বিএনপি নেতাদের কথা মাঠকর্মীরা শোনে না: ওবায়দুল কাদের
কয়েকটি দেশেই আটকে আছে সম্ভাবনাময় শ্রমবাজার
কয়েকটি দেশেই আটকে আছে সম্ভাবনাময় শ্রমবাজার
আফসোসে পুড়ছেন হৃদয়
আফসোসে পুড়ছেন হৃদয়
কাজ শুরু করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস, রাতভর জ্বলবে সুন্দরবন
কাজ শুরু করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস, রাতভর জ্বলবে সুন্দরবন
সর্বাধিক পঠিত
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
মিল্টনের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিতদের এখন কী হবে
মিল্টনের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিতদের এখন কী হবে
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
চট্টগ্রামে যান চলাচলের জন্য প্রস্তুত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
চট্টগ্রামে যান চলাচলের জন্য প্রস্তুত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
লিথুয়ানিয়ার ড্রোন হামলা ব্যর্থ হয়েছে: বেলারুশ
লিথুয়ানিয়ার ড্রোন হামলা ব্যর্থ হয়েছে: বেলারুশ