রাজধানীর নিউমার্কেট থানার গাউছিয়া মার্কেটের সামনে মিরপুর সুপার লিংক লিমিটেড বাসে আগুন দেওয়া হয় গত ৪ নভেম্বর সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে। এ ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর (ডিবি) পুলিশের গোয়েন্দা-উত্তরা বিভাগ।
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও মহাগর গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন– তানভীর আহমেদ (২৭), দেলোয়ার হোসেন (৫১) ও মো. ফারুক হোসেন (৪৩)। তাদের মধ্যে তানভীর আহমেদ ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক। দেলোয়ার হোসেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি এবং ফারুক হোসেন বিএনপির সক্রিয় সদস্য।
গ্রেফতার ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানায়, বাসে অগ্নিসংযোগের ভিডিও লন্ডনে পাঠানো হতো। আগুন লাগানোর পর সিনিয়র নেতাদের ভিডিও পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এর মধ্যে লন্ডন ও ঢাকার ঊর্ধ্বতন নেতাদের কথাও তারা বলেছে।
হারুন অর রশীদ বলেন, ‘বাসে অগ্নিসংযোগকারী তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার তানভীর আহমেদই সেদিন বাসটিতে আগুন দেন। পরে তিনি নিজের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার থেকে আগুন লাগানোর কথা জানান তার এক বন্ধুর কাছে। কথোপকথনে তানভীর লিখেছেন, ‘আগুন লাগিয়ে কী হবে? আমরা আগুন লাগাচ্ছি আর লন্ডনে যারা আছেন তারা ভালো আছেন। উল্টো আগুন দিতে গিয়ে আমরা ধরা পড়ছি।’ তাদের মধ্যে এমন কথোপকথন হয়েছে। তাকে যখন ডিবিতে নিয়ে আসা হলো, তখন তিনি এটি লেখার কথা স্বীকার করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘তানভীর বলেছেন, আমরা আগুন লাগাচ্ছি, ককটেল নিক্ষেপ করছি। কিন্তু জেলে গেলে আমাদের দেখার কেউ নেই। যারা নির্দেশ দিচ্ছেন, তারা কোথাও লুকিয়ে আছেন অথবা বিদেশে অবস্থান করছেন।’
তানভীরকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘অনেকের নাম ও নম্বর পেয়েছি। তানভীরের সঙ্গে আর কারা কারা ছিল এসব বিষয় জানা যাবে। মাঠ পর্যায়ে কর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া থাকে, আগুন লাগানোর পর দলের সিনিয়র নেতাকর্মীদের ছবি-ভিডিও দেখাতে হবে। আগুন দেওয়ার সময় মুখে মাস্ক ও রুমাল ব্যবহার করতে হবে। যাত্রীবাহী চলন্ত বাসে আগুন দিতে হবে। এরপর আগুন লাগিয়ে টাকা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ককটেল কিনে এনে নিক্ষেপ করা হচ্ছে। আবার কোথাও পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়া হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডিবির বিভিন্ন টিম ইতোমধ্যে অনেককে আইনের আওতায় এনেছে। তাদের মধ্যে অনেকে আদালতে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। কে কে তাদের সহায়তা করছে তাদের নামও আমরা পেয়েছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে ডিবি মহানগর প্রধান বলেন, ‘আমরা অনেককে গ্রেফতার করেছি। তারা বলছেন, আগুন লাগানোর পরে সিনিয়র নেতাদের ভিডিও পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এর মধ্যে লন্ডন ও ঢাকার ঊর্ধ্বতন নেতাদের কথাও বলেছেন।’