শাহবাগে ফুলের দোকানে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে ৩ সাংবাদিককে কর্মচারীরা সংঘবদ্ধভাবে মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকালে শাহবাগ ফুলতলা ফ্লাওয়ার শপে এ ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার তিন সাংবাদিক হলেন- নিউজ বাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকমের মনিরুল ইসলাম, রেডিও টুডের মো. ইমদাদুল আজাদ ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের রাসেল সরকার। তারা সবাই গণমাধ্যমগুলোর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলার আবেদন করেছেন। এতে ৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৬-৭ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্তরা হলেন- পায়েল (৩৫), সাল্লু (২৭), আব্দুর রাজ্জাক (৩৫), বুলু (৩২), দিদার (৩১), বাবু (৩০) ও জাহাঙ্গীর (৩২)। তারা সবাই শাহবাগ ফুল মার্কেটের কর্মচারী।
শাহবাগ থানার ওসি মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘তিন জন সাংবাদিককে শাহবাগ ফুল মার্কেটে মারধরের অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে মামলা হবে, প্রক্রিয়াধীন আছে।’
মামলার এজাহারে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, আমি আমার সহকর্মী রাসেল সরকারকে নিয়ে শাহবাগ ফুল মার্কেটে ফুলের দাম বাড়ার কারণ সংক্রান্ত সংবাদ সংগ্রহে যাই। ফুলতলা ফ্লাওয়ার শপে কর্মরত পায়েলের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে সে আমাদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হয়নি। এক পর্যায়ে খারাপ আচরণ শুরু করে এবং আমাদের ভুয়া সাংবাদিক বলে আখ্যায়িত করে। আমরা মৌখিকভাবে প্রতিবাদ করলে সে উত্তেজিত হয়ে আমাকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি, চড়-থাপ্পর মারতে শুরু করে। আমার সহকর্মী প্রতিবাদ করতে গেলে বর্ণিত বিবাদীরাসহ অজ্ঞাতনামা ৬-৭ জন এসে আমাদের দুই জনকে মারধর করে।’
সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে যান রেডিও টুডের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মো. ইমদাদুল আজাদ। সাংবাদিক পরিচয়ে ঘটনার বিবরণ জানতে চাইলে বিবাদীরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকেও মারপিট করে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।
এতে বলা হয়, ইমদাদুল আজাদকে রাস্তায় ফেলে এলোপাতাড়ি মারপিট করলে তার ডান চোখ বেশ আঘাতপ্রাপ্ত হয়। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী আমাদের চিনতে পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে এবং ইমদাদুল আজাদকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। ইমদাদুল আজাদের চোখে রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মনিরুল ইসলাম।
বিকালে হামলার ঘটনা শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির নেতারা। সেখানে সাংবাদিক নেতারা কথা বলেন শাহবাগ থানার ওসি (অপারেশন) আরশাদ হোসেনের সঙ্গে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহবাগ ফুলতলা ফ্লাওয়ারর শপের মো. মেরিন শেখ বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। ঢাকার বাইরে আছি। শুনেছি দোকানে ঝামেলা হয়েছে। আমাদের দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে।’
এদিকে এই ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ঢাবি সাংবাদিক সমিতি। এ সময় তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন।