উন্নয়নের লক্ষ্যে নেওয়া পদক্ষেপগুলোয় ন্যায়বিচার নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে ন্যায্যতা সম্পর্কিত সংসদীয় ককাস। দ্বাদশ সংসদের অভিজ্ঞ ও নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের নিয়ে গঠিত এই ককাস ভবিষ্যতে সামাজিক বৈষম্য মোকাবিলা এবং সব ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার বজায় রাখার শপথও নিয়েছে।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এই ককাসের এক সভা হয়। সেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমতাবাদী আদর্শকে ভিত্তি হিসেবে নিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে জাতির যাত্রার ওপর আলোকপাত করা হয়।
বৈঠকে জাস্টিস ককাসের চেয়াম্যান এবং সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয় দেশের প্রযুক্তিগত অগ্রগতির কার্যক্রম বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। পাশাপাশি শিক্ষা ক্ষেত্রে সংস্কারের মাধ্যমে বৈশ্বিক সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেন।
টাঙ্গাইল-৫ আসনের সংসদ সদস্য মো. ছানোয়ার হোসেন বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কর্মসূচিগুলো নতুন করে সাজানোর মধ্য দিয়ে শ্রম ও অভিবাসনের ক্ষেত্রে ন্যায়বিচারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়াও বৈঠকে জলবায়ুর ক্ষেত্রে ন্যায়বিচারের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করা হয়। পটুয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য এস এম শাহজাদা বিভিন্ন কমিউনিটির ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের অসম প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন।
রাজশাহী-৫ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ দারা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সমতার ক্ষেত্রে মৌলবাদের প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। অন্যদিকে, জামালপুর-১ এর সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদ বাংলাদেশের ভিশন- ২০৪১ এর লক্ষ্যপূরণে শিক্ষার ন্যায্যতা নিশ্চিতের গুরুত্বারোপ করেন। তিনি সবার জন্য মানসম্পন্ন শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিতে সংস্কারের আহ্বান জানান।
বৈঠকে বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের অধিকার নিয়েও আলোচনা করা হয়। আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারের সঙ্গে সামঞ্জস্য অনুযায়ী এক্ষেত্রে প্রতিনিধিত্বসহ অন্যান্য সুযোগ বৃদ্ধির আহ্বান জানান সংসদ সদস্য আরমা দত্ত। পাশাপাশি, স্থানীয় ও প্রবাসী কর্মীরা যে বৈষম্য ও অন্যায়ের মুখোমুখি হন তা মোকাবিলায় বহুভাষিক শিক্ষার গুরুত্বের ওপর জোর দেন সাবেক সংসদ সদস্য এবং জাস্টিস ককাসের সাধারণ সম্পাদক মাহজাবীন খালেদ।
ককাসের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট গভর্নমেন্ট, স্মার্ট সোসাইটি ও স্মার্ট ইকোনমিকে কেন্দ্র করে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এমন নীতিমালা প্রয়োজন যার মাধ্যমে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শুধু অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত হবে না, পাশাপাশি তাদের উন্নয়নও নিশ্চিত করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে সবার জন্য প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগের সম্প্রসারণ, সর্বতোভাবে ডিজিটাল সাক্ষরতা বৃদ্ধি, সরকারি সেবাসমূহ আরও স্বচ্ছ করা এবং এক্ষেত্রে দায়বদ্ধতা নিশ্চিতে ই-গভর্নেন্সের সুবিধা নেওয়া এবং ডিজিটাল স্বাধীনতার সুরক্ষায় আইনের নিয়মের সংশোধন। এছাড়াও ককাস কমিউনিটির সঙ্গে সম্পৃক্ততা আরও সক্রিয় করা এবং সব উদ্যোগ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা তা নিশ্চিত করা, উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
বৈঠকে আরও অংশ নেন ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেটিকস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইআইডি) সাঈদ আহমেদ ও শাহীন পারভীন।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে সংসদ সদস্যদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে ন্যায্যতা সম্পর্কিত সংসদীয় ককাস প্রতিষ্ঠিত হয় যা ‘ন্যায্যতা ককাস’ নামে পরিচিত।