X
বুধবার, ০১ মে ২০২৪
১৮ বৈশাখ ১৪৩১

বিশেষ দিনগুলোতে ফুল বিক্রি কমেছে

জুবায়ের আহমেদ
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২৩:৪৮আপডেট : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:৪২

বছরের যেকোনও দিবসে ফুল ব্যবসায়ীদের বড় বিক্রির লক্ষ্য থাকে। বিশেষ করে ফেব্রুয়ারি মাসে পহেলা ফাল্গুন, ভালোবাসা দিবস ও শহীদ দিবসে ফুলের চাহিদা বেশি থাকে। তাই এই মাসে ফুল বিক্রির বড় ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখেন ব্যবসায়ীরা। তবে গত কয়েক বছর ধরে তাদের এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকছে না বলে জানান শাহবাগের ফুল ব্যবসায়ীরা। তারা জানান, সিন্ডিকেটে দাম বৃদ্ধি ও মানুষের আগ্রহ কম থাকায় বিনিয়োগ তোলা কষ্ট হয়ে যায়।

বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) শাহাবাগ মোড়ে ফুলের মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, সকালে শহীদ মিনারে অর্পণের জন্য দল বেঁধে লোকজন এসে একটি করে পুষ্পস্তবক কিনে নিচ্ছে। আলাদা করে কাউকে ফুল বা ফুলের তোড়া নিতে দেখা যায়নি। ব্যবসায়ীরা জানান, গতকাল রাতেও অনেকে এই শ্রদ্ধাঞ্জলি কিনে নিয়ে গেছেন। তবে সকালের পর আর তেমন ফুল বিক্রি বাড়েনি। বিকালে দেখা যায়, মেয়েদের মাথার রিং বিক্রি হচ্ছে বেশি। তবে তোড়া তেমন কাউকে কিনতে দেখা যায়নি।

শাহজালাল পুষ্প বিতানের ব্যবসায়ী রাফসান বলেন, ‘২১ ফেব্রুয়ারিতে বেশি আইটেমের ফুল উঠাইতে হয় না। এ দিন গোলাপ আর রজনীগন্ধা বেশি চলে। আর শ্রদ্ধাঞ্জলি বানায়া রাখি। এর জন্য বেশি খরচের ঝামেলায় যাইতে হয় না। বিক্রি না হলে পরে কাজে লাগানো যায়। কিন্তু ১৪ ফেব্রুয়ারি আমার প্রায় ১ লাখ টাকার ফুল রইয়া গেছিলো।’

শাহবাগের একটি দোকানে সাজানো রঙ-বেরঙের ফুল

ঝাড়বেলা পুষ্প বিতানের মালিক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আগে শুধু শ্রদ্ধাঞ্জলি বিক্রি কইরা টাকা উইঠা যাইতো। সঙ্গে ফুলের তোড়া আর বাকি সব বিক্রি হইতো। আজ তিন দোকান মিলা ২০টা শ্রদ্ধাঞ্জলি বিক্রি করতে পারছে কিনা সন্দেহ। একদিকে বেশি দামে কিনতে হয়, আবার বিক্রি করতে গেলে কাস্টমার ফুলের দাম দিতে চায় না। একটা শ্রদ্ধাঞ্জলি কম কইরা ১৫০০-২০০০ টাকা বিক্রি করলে কিছু থাকে। মানুষ আইসা দাম কয় ৬০০-৮০০ টাকা। আমার তো দোকানে একটা লোক খাটাইতে মজুরি দেওয়া লাগে ১০০০-১২০০ টাকা।’

নাঈম পুষ্প বিতানের মালিক গাজী নাঈমুর ইসলাম বলেন, ‘মাঝে সিন্ডিকেট ঢুকে ফুলের মার্কেটা নষ্ট করে দিছে। মানুষ এখন ফুল কেনা থেকে মুখ ফিরায়া নিছে। কিছু পাইকার আগে কম দামে ফুল কিনে কোল্ড স্টোরেজ করে রাখে। পরে সিজনের দিন একটু কম দামেই বিক্রি করে। তখন কাস্টেমাররা ওইটা কেনার প্রতি আগ্রহ দেখায়। তারা তো আর বোঝে না একদিন পরেই ওই ফুলের পাপড়ি ঝরে যায়। আর তাজা ফুল ৭ দিন পর্যন্ত রাখা যায়। তাজা কিনতে গেলে বেশি দাম দিতে হয় আমাদের।’

এদিকে বিকালে ফুলের দোকানের ভিড় থাকলেও প্রকৃত ক্রেতা ছিল কম। অধিকাংশ তরুণী ফুলের দোকানে গিয়ে ফুলকে ব্যাকগ্রাউন্ড করে ছবি তোলায় ব্যস্ত ছিল। এছাড়া ফুলের দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতারাও ফিরে যাচ্ছিলেন দোকান থেকে।

সাইফুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘ফুলের ছোট একটা তোড়া কিনতে চেয়েছিলাম। ৩০০ টাকা বলে। দামটা বেশি লাগলো।’

শ্রদ্ধাঞ্জলির জন্য বানিয়ে রাখা পুষ্পস্তবক

শাহবাগে ফুলের দোকান রয়েছে ৫০টি। ব্যবসায়ীদের সমিতি থেকে জানা যায়, বিশেষ দিবস উপলক্ষে ফুল মার্কেটে প্রায় ৫০ লাখ টাকার ফুল তোলা হয়। লক্ষ্য থাকে দেড় থেকে দুই কোটি টাকা বেচাবিক্রির। তবে সেই লক্ষ্য পূরণ করতেই হিমশিম খেতে হয়। খরচ শেষে লাভ থাকে না বলে জানান ব্যবসায়ীরা। তবে বছরের অন্যান্য দিন বিয়ের গাড়ি সাজানো, বিভিন্ন ইভেন্টে ও খুচরা বিক্রি করে চলে যায় ব্যবসায়ীদের। তখন ফুলের দামও অনেক কম থাকে।

শাহবাগ বটতলা ক্ষুদ্র ফুল ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালো গেছে। তবে ২১ ফেব্রুয়ারি এখন পর্যন্ত তেমন ভালো কোনও সংবাদ পাই নাই। আমরা একেক দোকানে ৫০ থেকে ২০০টা পর্যন্ত শ্রদ্ধাঞ্জলি বানানোর টার্গেট নিছিলাম। কিন্তু ওইভাবে বিক্রি হয় নাই। যে ২০টা টার্গেট নিছিলো তার ৫টা বিক্রি হইছে। যে ৫০টা টার্গেট নিছিলো তার ১০টা বিক্রি হইছে। আমি ২০০ টার মতো আশা করছিলাম ২৫টা বিক্রি করতে পারছি। ভালো না বাজার।’

ফুল কম বিক্রির জন্য সিন্ডিকেট ও মানুষের আগ্রহ কম কারণ দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতি একুশে ফেব্রুয়ারি সকালে বাচ্চারা ছোট ছোট ফুলের তোড়া নেয় ১০০ থেকে ৫০ টাকা করে। আজ এগুলো কিনতে কেউ আসে নাই বলা চলে। এলাকাগুলাতেও এখন আয়োজন করে না। এদিকে মাঝে কিছু লোক দাম বাড়ায়া দেয়। বেশি দামে নিয়া বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। তখন মানুষও আগ্রহ দেখায় না। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি টার্গেট ছিল দেড় থেকে দুই কোটি টাকা বেচাবিক্রি হবে। কিন্তু পুরা মার্কেট মিলে দুই লাখ টাকা উঠাইতে পারছে।’

ছবি: প্রতিবেদক

/আরআইজে/
সম্পর্কিত
লাল কৃষ্ণচূড়া, বেগুনি জারুলে ছুঁয়ে যায় তপ্ত হৃদয়
তাসখন্দে শহীদ মিনার স্থাপনের প্রস্তাব
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের রজতজয়ন্তী পালন করবে ইউনেস্কো
সর্বশেষ খবর
বঙ্গবন্ধু শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন: এমপি কাজী নাবিল
বঙ্গবন্ধু শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন: এমপি কাজী নাবিল
ত্যাগের মহিমায় স্বামী বিবেকানন্দ মানবসেবা করে গেছেন: মেয়র তাপস
ত্যাগের মহিমায় স্বামী বিবেকানন্দ মানবসেবা করে গেছেন: মেয়র তাপস
জাকের পার্টির ‘বিশ্ব ইসলামি সম্মেলন’ অনুষ্ঠিত
জাকের পার্টির ‘বিশ্ব ইসলামি সম্মেলন’ অনুষ্ঠিত
গাজায় ইউক্রেনের চেয়েও বেশি ধ্বংসস্তূপ রয়েছে: জাতিসংঘ
গাজায় ইউক্রেনের চেয়েও বেশি ধ্বংসস্তূপ রয়েছে: জাতিসংঘ
সর্বাধিক পঠিত
শিশু ঝুমুরকে ধর্ষণ ও হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে চোখ মুছলেন র‌্যাব কর্মকর্তা
শিশু ঝুমুরকে ধর্ষণ ও হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে চোখ মুছলেন র‌্যাব কর্মকর্তা
‘মানুষের কত ফ্রেন্ড, কাউকে পাশে পাইলে আমার এমন মৃত্যু হইতো না’
‘মানুষের কত ফ্রেন্ড, কাউকে পাশে পাইলে আমার এমন মৃত্যু হইতো না’
মিল্টন সমাদ্দার আটক
মিল্টন সমাদ্দার আটক
আজও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে, পথচারীদের জন্য শরবত-পানির ব্যবস্থা
আজও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে, পথচারীদের জন্য শরবত-পানির ব্যবস্থা
একজন অপরাধীর গল্প বলতে চেয়েছিলেন তিশা
একজন অপরাধীর গল্প বলতে চেয়েছিলেন তিশা