সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার সালমান এফ রহমান, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, সাবেক সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন, সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু এবং সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকের দুর্নীতির অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
শেয়ারবাজার জালিয়াতি, প্লেসমেন্ট শেয়ার কারসাজি ও প্রতারণার মাধ্যমে শেয়ার হোল্ডারদের হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট, অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতসহ হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে। এছাড়াও গত ১৬ আগস্ট ‘দৈনিক কালের কণ্ঠ' ও 'দৈনিক ইত্তেফাক’ পত্রিকায় প্রকাশিত সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে প্রকাশিত অভিযোগগুলো কমিশনের বিশেষ তদন্ত শাখা থেকে অনুসন্ধানের জন্য বিশেষ তদন্ত শাখার মহাপরিচালক বরাবর পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
ভোলা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে নানা দুর্নীতি ও অনৈতিক কার্যক্রমসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে লালমোহন ও তজুমদ্দিন উপজেলার টি.আর. ২ কোটি ২৯ লাখ ৮৪ হাজার ৭৯৭ টাকা কাবিখা ও কাবিটা ৩ কোটি ৫৯ লাখ ৪০ হাজার ৫৪৬ টাকা এবং ২৬০ দশমিক ৩৯ মেট্রিক টন গম ও ২৩৪ দশমিক ৩৩ মেট্রিক টন চাল বিভিন্ন প্রকল্প দেখিয়ে আত্মসাৎ করেছেন মর্মে জানা যায়।
পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনৈতিক কার্যক্রমসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ৫ বছর মেয়াদী এক হাজার ৫০২ কোটি টাকার "সুফল প্রকল্পে মন্ত্রী ও তার ছেলে ‘টেন পারসেন্ট’" (১০ শতাংশ) কমিশন নিয়ে ঠিকাদারদের কাজ দিয়েছেন। বিভিন্ন খাতে ভুয়া খরচ দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ৮০ থেকে ৯০ লাখ টাকা ঘুষের বিনিময়ে বন কর্মকর্তাদের বদলি ও পোস্টিং দিয়েছেন। এছাড়া পরিবেশ দূষণে মারাত্মক প্রভাব রয়েছে এমন তরল বর্জ্য সৃষ্টিকারী বিভিন্ন কল-কারখানায় ইটিপি পরিদর্শন না করেই তারা সার্টিফিকেট প্রদান করেন। প্রায় সাত কোটি টাকার বিনিময়ে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের জমির রেজুলেশনে স্বাক্ষর করে বিএফডিআইসি'র তৎকালীন চেয়ারম্যানকে ওই জমি জলবায়ু ট্রাস্টকে প্রদানে বাধ্য করেছেন প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে।
এছাড়াও ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু এবং সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।