তামাকজাত পণ্যের কর বৃদ্ধি এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী দ্রুত পাসের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আহছানিয়া মিশন ইয়ুথ ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিয়িংয়ের উদ্যোগে ওই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে অংশ নেন– ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি, ইউআইটিএস, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ স্কলার্স, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থী।
তাদের দাবি, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে তামাকপণ্যের ওপর উচ্চহারে কর আরোপ এবং আইন সংশোধন করে কার্যকর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
তামাকের ভয়াবহতা ও কর বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে ১৫ বছরের বেশি বয়সী জনগোষ্ঠীর ৩৯ দশমিক ১ শতাংশ ধূমপান করেন, আর ৭ দশমিক ৫ শতাংশ শিশু বিভিন্নভাবে তামাকের সংস্পর্শে আসে। তামাক কোম্পানিগুলো বিজ্ঞাপন ও পণ্য প্রদর্শনীর মাধ্যমে তরুণদের তামাক ব্যবহারে উৎসাহিত করছে। এছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়লেও তামাকজাত দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি হয়নি বললেই চলে। ফলে তরুণরা সহজেই সস্তা তামাকপণ্য কিনতে পারছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দুর্বল হওয়ায় তামাক কোম্পানিগুলো নানা কৌশলে পণ্য প্রচার করছে। তারা তামাক বিক্রয়কেন্দ্রে প্রদর্শনীর মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়ে শিশু-কিশোরদের আকৃষ্ট করছে। আইনের ফাঁকফোকর দূর করে কঠোরভাবে এর বাস্তবায়ন জরুরি।
উচ্চ কর আরোপের দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, প্রতি বছর তামাকজাত দ্রব্যের অল্প পরিমাণ মূল্যবৃদ্ধি দরিদ্র ও তরুণ জনগোষ্ঠীকে নিরুৎসাহিত করতে পারছে না, বরং সস্তা সিগারেটের চাহিদা বাড়িয়ে দিচ্ছে। তারা দাবি করেন, পাশের দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে তামাকের কর অনেক কম। তাই তামাকপণ্যের মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে কর বাড়ানো উচিত, যাতে ধূমপান নিরুৎসাহিত হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করে কিছু দাবি পেশ করেন। উন্মুক্ত স্থানে ধূমপান নিষিদ্ধকরণ, তামাকপণ্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচার-প্রচারণা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, সিগারেট ও অন্যান্য তামাকজাত দ্রব্যের সহজলভ্যতা কমানো, তামাকজাত পণ্যে কার্যকরভাবে উচ্চহারে কর বৃদ্ধির দাবি জানান।
শিক্ষার্থীরা বলেন, সরকার ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা দিয়েছে। তবে এ লক্ষ্য অর্জন করতে হলে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং তরুণ প্রজন্মকে তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তারা।