যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ এন্টার প্রাইজ ইনস্টিটিউটের (বিইআই) সভাপতি এম হুমায়ুন কবির বলেছেন, বাংলাদেশে বর্তমানে যে নতুন প্রজন্মের উত্থান হয়েছে, তারা অন্তত আগামী ৪০ বছর বাংলাদেশের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করবে। বাংলাদেশকে আগামী দিনে পৃথিবীর কাছে কিভাবে পরিচিত করাবে, পৃথিবীর সঙ্গে বাংলাদেশ কেমনভাবে সম্পৃক্ত হবে তারও নির্ধারক ভূমিকা পালন করবে এই নতুন প্রজন্মের উত্থান।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব পলিসি স্টাডিজ (বিআইপিএস) আয়োজিত ‘হাসিনা-পরবর্তী বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও কৌশলগত প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।
নতুন প্রজন্মকে জেনারেশনাল শিফট (প্রজন্মের পরিবর্তন) মন্তব্য করে এম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘প্রথম শিফট বা পরিবর্তন ১৯৪০-এর দশকে। ১৯৪৬ সালের নির্বাচনে তখনকার তরুণ প্রজন্ম একটা নির্ধারক ভূমিকা পালন করেছিল। এর ফলে আমরা ভারত ও পাকিস্তানের আবির্ভাব দেখি। এরপর ১৯৭০-এর সময়টায় আমরা তারুণ্যের উত্থান দেখেছি। তখন আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম। আমরা বাংলাদেশের গর্বিত নাগরিক হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেই, ওই প্রজন্ম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। আজ ২৪-এ এসে আমরা আরেকটা তরুণ প্রজন্মের উত্থান দেখলাম। এই প্রজন্ম বাংলাদেশকে নতুনভাবে সাজাবে।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, ‘জিওপলেটিকসের ক্ষেত্রে ভারত চায়নাসহ আরও যারা আছে তাদের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক থাকতে হবে। আমাদের এমন একটা ফরেন পলিসি হওয়া উচিত যেটা বাংলাদেশের জনগণের উপকারে আসবে। সরকার পরিবর্তন হলে আমাদের ফরেন পলিসি পরিবর্তন হয়। অন্য দেশে সরকারে সেই আসুক নিজের দেশের স্বার্থ ঠিক রেখে তারা ফরেন পলিসি তৈরি করে। সেই জায়গায় বাংলাদেশকে আসতে হবে।’
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঘটনা নিয়ে ভারতের বিবৃতি দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে ভারত একটা বিবৃতি দিয়েছে। আমাদের দেশে যখন গুম হয়েছে, খুন হয়েছে, জুলাই-আগস্টে টার্গেট করে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তখন ভারত কোনও বিবৃতি দেয়নি। এখন তারা বিবৃতি দিচ্ছে এটাকে আমরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানো বলবো।’
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আফজাল এইচ খান বলেন, ‘আমরা রিফর্মের কথা বলছি। কিন্তু সিনিসিয়ারিটি, অনেস্টি এনশিওর না করে কোনও রিফর্ম আমরা করতে পারবো না। আমাদের ফরেন পলিসিতে পারসন টু পারসন থেকে চলে আসতে হবে। ইন্ডিয়া বিগ ব্রাদার, তাদের হেজিমনি থাকবে। কিন্তু আমাদের সম্পর্ক থাকবে ঢাকা ও দিল্লির মধ্যে, হাসিনা ও মোদির মধ্যে না। পিপল টু পিপল কন্টাক্ট আমরা চাই। গভমেন্ট টু গভমেন্ট কোঅপারেশন চাই।’
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান ড. সিএএফ দৌলা। এছাড়া বক্তব্য রাখেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আমিনুল করিম প্রমুখ।