সচিবালয় অভিমুখে যাওয়ার পথে হাইকোর্টের রায়ে নিয়োগ বাতিল হওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ওপর লাঠিপেটা, জলকামান ব্যবহার ও টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। এসময় কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৫টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।
সাময়িক ভয় দেখিয়ে ছত্রভঙ্গ করতে আন্দোলনকারী কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে। দাবি আদায়ের বিষয়টি আইনগতভাবে মোকাবিলা করতে আন্দোলনকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
মাসুদ আলম বলেন, সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা শাহবাগে ছিলেন। সেখান থেকে দুপুরের পর হঠাৎ তারা প্রেস ক্লাবের সামনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। নিয়োগ নিয়ে হাইকোর্টের রায় তাদের বিপক্ষে যায়। আজকে একটি রায় হওয়ার কথা ছিল, তা জানেন সবাই। পরে রায়টি আর হয়নি। কয়েকদিন পরে হবে হয়তো। এ বিষয় তারাও খুব ভালোভাবে জানে। কিন্তু তারা ইচ্ছা করে আমাদের বলছে, আমরা প্রেস ক্লাবে যাবো। প্রেস ক্লাবের কথা বলে তারা শিক্ষা ভবনের কাছে এসে সচিবালয়ের দিকে যাওয়া শুরু করেন।
সচিবালয় প্রটেকটিভ এরিয়া উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে ১৪৪ ধারা সবসময় জারি থাকে। আমরা সচিবালয়ের সামনে এলাও করতে পারি না। পরে আমরা শিক্ষা ভবন মোড়ে তাদের আটকে দিয়েছি। ছেলেরা চলে গেলেও মেয়েরা মোড়ে বসে পড়েন। তাদের পানি মারা হলেও সেখানে অবস্থান করেন। এরপর আমরা হালকা কাঁদানে গ্যাস দিই, যা তাদের চোখে লাগে। এরপর সবাই সেখান থেকে উঠে যান। এখন তারা বিভিন্ন দিকে চলে গেছেন।
ডিসি মাসুদ আলম বলেন, এই একই গ্রুপ গত দুই সপ্তাহে অন্তত সাত থেকে আট বার বিভিন্ন জায়গায় অন্যায়ভাবে যাচ্ছেন। কখনও রাস্তা দখল করছেন, কখনও সচিবালয়, কখনও হাইকোর্ট আবার কখনও শাহবাগ। আজকে আবার শিক্ষা ভবনের সামনে। আমি বারবার তাদের বলেছি, যেহেতু বিষয়টা নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ বা রায় হয়েছে, সেহেতু আইনগতভাবে মোকাবিলা করেন। তারপরও তারা রাস্তায় থাকছেন। তাদের ধারণা, রাস্তায় থাকলে চাকরি ফেরত পাবেন।
তিন ধাপে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত নিয়োগ কার্যক্রম শেষ হয়েছে। কিন্তু তৃতীয় ধাপ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ২০২৩ সালের ১৪ জুন তৃতীয় ধাপের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। লিখিত-মৌখিক পরীক্ষা শেষে গত বছরের ৩১ অক্টোবর ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এতে ৬ হাজার ৫৩১ জন উত্তীর্ণ হন। তবে নিয়োগবঞ্চিত কয়েকজন রিট করলে ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। পরে গত ৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট তাদের নিয়োগ কার্যক্রম বাতিল করে রায় দেন।