সশস্ত্র বাহিনীতে প্রথমবারের মতো মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ পালিত হয়েছে। ২০০৯ সালের এই দিনে পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদস্যদের হাতে নির্মমভাবে নিহত সেনা শহীদদের স্মরণে অন্তর্বর্তী সরকার দিনটিকে ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ হিসেবে পালনের জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করে। এরপরই দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনে সশস্ত্র বাহিনীতে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) জানায়, ২৫ ফেব্রুয়ারি ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ উপলক্ষে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। সকালে সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান এবং বিমান বাহিনী প্রধান নিজ নিজ বাহিনীর পক্ষ থেকে বনানী সামরিক কবরস্থানে শায়িত পিলখানায় শহীদ সামরিক কর্মকর্তা ও সদস্যদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এছাড়া, বাহিনী প্রধানদের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ, এক মিনিট নীরবতা পালন ও শেষে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।
বিশেষ এই দিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রধানরা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন। সশস্ত্র বাহিনীর দরবার, বোথ ওয়াচেস, অ্যাসেম্বলির মাধ্যমে বাণী পাঠ করা হয়। এছাড়া, দিবসটি উপলক্ষে দেশের সব সেনানিবাস, নৌ ঘাঁটি এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটির মসজিদে পিলখানায় সংঘটিত নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার সব শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় পবিত্র কোরআন খতম এবং বাদ জোহর বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত আয়োজন করা হয়।
২০০৯ সালে পিলখানায় সংঘটিত নির্মম হত্যাকাণ্ডে শাহাদত বরণকারী সেনা কর্মকর্তাদের স্মরণে রাজধানীর মহাখালীর রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েল ফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (রাওয়া) ক্লাবের হেলমেট হলে জাতীয় শহীদ সেনা দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। এই স্মরণসভায় শহীদদের পরিবার, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও পরিবারের পাশাপাশি সেনা ও নৌ বাহিনী প্রধান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার এবং সামরিক বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া, এই দিবসটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য এবং করণীয় ইত্যাদি বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
পরে সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষ থেকে জাতির সূর্য সন্তান শহীদ সেনাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও শোক সন্তপ্ত শহীদ পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা ও সহমর্মিতা জানানো হয়।