ভুয়া ভিসা ও জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর ভুয়া বিএমইটি স্মার্টকার্ড তৈরি চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) মিরপুর বিভাগের গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মো. সোনাহর আলী শরীফ তাদের গ্রেফতার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলো- মো. ওমর ফারুক (৪৬), শিউলি আক্তার (৩২) ও মো. শাকিল হোসেন (২৩)।
এডিসি মো. সোনাহর আলী শরীফ বলেন, মিরপুর এলাকায় ধারাবাহিক অভিযানে তাদের গ্রেফতার করে ডিবি-মিরপুর বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ, গাড়ি চুরি প্রতিরোধ ও উদ্ধার টিম।
তিনি জানান, গত রবিবার ডিবি-মিরপুর বিভাগের ওই টিম অভিযান চালিয়ে মগবাজার এলাকায় অবস্থানকালে লাইসেন্সবিহীন কিছু এজেন্সি ভুয়া বিএমইটি স্মার্টকার্ড ও জাল ভিসা তৈরি করে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। ঘটনার সত্যতা যাচাই ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে মিরপুর কমার্স কলেজ সংলগ্ন ডাচ বাংলা ব্যাংকের শাখা থেকে শিউলি আক্তারকে আটক করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুরান পল্টনের সখ সেন্টারের ৮ম তলায় অবস্থিত মা মনি ওভারসিজ লিমিটেডের অফিসে অভিযান চালিয়ে মো. ওমর ফারুককে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার ওমর ফারুককে জিজ্ঞাসাবাদে সে অবৈধভাবে বিএমইটি স্মার্টকার্ড ও জাল রাশিয়ান ভিসা তৈরি করে বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সির কাছে সরবরাহ করে আসছিল বলে জানায়।
পরবর্তী সময়ে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মো. শাকিল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেখানো মতে তার অফিসে তল্লাশি চালিয়ে একটি কম্পিউটার, ২৩টি বিএমইটি স্মার্টকার্ডের হার্ডকপি, দুটি মোবাইল ফোন ও ভুয়া ওয়েবসাইট ব্যবহার করে অবৈধভাবে বিএমইটি স্মার্টকার্ড ও জাল রাশিয়ান ভিসা তৈরিতে ব্যবহুত পিসির স্কিন রেকর্ডের একটি সিডি জব্দ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে শাকিল আরও জানায় তার সবুজবাগ থানাস্থ মানিকনগরের ভাড়া বাসায় ভুয়া ভিসা সম্বলিত পাসপোর্ট রয়েছে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মানিকনগরের বাসায় অভিযান চালিয়ে ১৪টি ভুয়া ভিসা সম্বলিত পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার শিউলি আক্তারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিজয়নগর এলাকায় তার অফিসে অভিযান চালিয়ে আরও কয়েকটি ভুয়া ভিসা সম্বলিত পাসপোর্ট এবং দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বরাতে এডিসি জানান, তারা একটি সংঘবদ্ধ ভিসা প্রতারক চক্রের সদস্য। তারা দীর্ঘদিন ধরে ভুয়া ভিসা ও বিএমইটি কার্ড তৈরি করে লোকজনের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল। তারা ১০ থেকে ১২ জন এজেন্টের মাধ্যমে ভুয়া বিএমইটি স্মার্টকার্ড ও ভুয়া রাশিয়ান ভিসা দেখিয়ে প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ জন লোকের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে মর্মে স্বীকার করেছে। এই ঘটনায় পল্টন থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। এই চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান ডিবির এই কর্মকর্তা।