কোনও পূর্ব ঘোষণা বা গণপরামর্শ ছাড়াই যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় কর্তৃক পাবনার দুটি ঐতিহাসিক ক্রীড়া স্থাপনার নাম পরিবর্তনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ‘শেকড় পাবনা ফাউন্ডেশন’। সংগঠনটির সভাপতি খান হাবিব মোস্তফা ও সংগঠনের সেক্রেটারি ড. মোস্তাফিজুর রহমান খান এক বিবৃতিতে বলেন, মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পাবনার শহীদ আমিন উদ্দিন স্টেডিয়াম ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল সুইমিং পুলের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। শেকড় ফাউন্ডেশন বলছে, এই দুটি নাম পাবনার মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাসের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে।
শহীদ আমিন উদ্দিন ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনালগ্নে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ হন। তিনি পাবনা-সিরাজগঞ্জ অঞ্চলের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। অপরদিকে, রফিকুল ইসলাম বকুল ছিলেন পাবনার গর্বিত সন্তান, যিনি ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ পাবনায় প্রথম স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করেন। পরবর্তীকালে তিনি পাবনা-৫ আসন থেকে বারবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত জেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
শেকড় ফাউন্ডেশন মনে করে, নাগরিক সমাজ, ক্রীড়া সংগঠক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কোনও আলোচনার আয়োজন ছাড়াই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া অগণতান্ত্রিক এবং জনমানুষের আবেগ-অনুভূতির প্রতি চরম উদাসীনতা প্রদর্শন।
রবিবার (২৫ মে) সন্ধ্যায় ফাউন্ডেশনের জরুরি সভা শেষে পরিচালনা পর্ষদ বিবৃতিতে বলেছে, ‘যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের এই হটকারী সিদ্ধান্তে আমরা হতবাক ও ক্ষুব্ধ। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে পূর্বের নাম পুনর্বহালের দাবি জানাচ্ছি।’
এছাড়া, কোনও চক্রান্তকারী বা সুবিধাবাদী মহল ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টায় লিপ্ত কিনা, সেটিও খতিয়ে দেখার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
শেকড় ফাউন্ডেশন সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ‘দেশের সাধারণ মানুষের আবেগে আঘাত করে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনায় আস্থাশীল জনগণকে হতাশ করা যাবে না। এ ধরনের সিদ্ধান্ত জনবিচ্ছিন্ন ও রাজনৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য।’
পরিশেষে ফাউন্ডেশন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, ‘এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে জাতির সূর্য সন্তানদের স্মৃতি সংরক্ষণের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করুক।