ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রদল নেতা এস এম শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যা মামলায় আসামি রাব্বি ওরফে কবুতর রাব্বি ও মেহেদী হাসানের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এদিন আসামি নাহিদ হাসান পাপেলের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
মঙ্গলবার (২৭ মে) ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্ল্যাহের আদালত শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন। আর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুয়েল রানা আদালতে নাহিদ হাসান দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিতে রাজি হলে আদালত তা রেকর্ড করেন।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মো. আখতার মোর্শেদ গ্রেফতার তিন আসামিকে আদালতে হাজির করে দুজনের ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আর নাহিদ জবানবন্দি দিতে রাজি হওয়ায়, তদন্ত কর্মকর্তা জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। পরে দুজনের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ও আর জবানবন্দি রেকর্ড শেষে নাহিদকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
গত ১৪ মে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানা এলাকা থেকে এ মামলায় মো. তামিম হাওলাদার, পলাশ সরদার ও সম্রাট মল্লিককে গ্রেফতার করা হয়। ওইদিন বিকাল তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। পরবর্তী সময়ে গত ১৭ মে প্রথম দফায় তাদের ছয় দিনের ও ২৩ মে দ্বিতীয় দফায় আরও পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। বর্তমানে তারা রিমান্ডে রয়েছে। এছাড়া ২৬ মে মো. রিপন এ মামলায় দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। একইদিন আসামি সোহাগ, হৃদয় ইসলাম ও রবিনের দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। একইসঙ্গে আসামি সুজন সরকারকে কারাগারে পাঠানোর হয়। এ মামলায় মোট ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ১৩ মে রাত পৌনে ১২টায় সাম্য তার বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু আশরাফুল আলম রাফি ও মো. আব্দুল্লাহ আল বায়েজিদকে নিয়ে মোটরসাইকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরছিলেন। ফেরার পথে রমনা কালীমন্দিরের উত্তর পাশে পুরাতন ফোয়ারার কাছে পৌঁছান। তখন অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ জন আসামি তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল দিয়ে সাম্যের মোটরসাইকেলে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। তখন সাম্য ও তার দুই বন্ধু আসামিদের কাছে ধাক্কা দেওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করলে আসামিরা সাম্য ও তার বন্ধুকে ইট দিয়ে আঘাত করেন। তাদের কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। এদের মধ্যে একজন আসামি সাম্যকে হত্যা করার উদ্দেশে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার ডান পায়ের পেছনে উপর্যপুরী আঘাত করেন। তার বন্ধু মো. আব্দুল্লাহ আল বায়েজিদের ডান হাতের কজির ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন।
গুরুতর রক্তাক্ত জখম অবস্থায় সাম্য মাটিতে পড়ে গেলে এবং আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিরা তাদের ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরবর্তী সময়ে সাম্যকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই শরীফুল ইসলাম শাহবাগ রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।