রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে দাফন করা জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে নিহতদের লাশ ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে শনাক্ত করে যথাযথ মর্যাদা প্রদান এবং কবরে নামফলক দেওয়াসহ চার দফা দাবি জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। আগামী ১ জুলাইয়ের মধ্যে তাদের দাবিগুলো পূরণ না হলে সচিবালয়ের সামনে অনশন করার ঘোষণা দেন তারা।
বুধবার (২৮ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে জুলাই রেভুলেশনারি অ্যালায়েন্স এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানায়।
সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনে নিহত সোহেল রানার ছোট ভাই মো. নাবিল হোসেন বলেন, আমার ভাইসহ রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে ১১৪ জনকে দাফন করা হয়েছে। ১০ মাস পার হয়ে গেলেও এখনও সরকার বা সংশ্লিষ্ট কেউ কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। শুধু মিথ্যা আশ্বাস দিয়েছে। সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ২৫ জানুয়ারি কবরস্থানে গিয়ে ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে শনাক্ত করার আশ্বাস দিলেও কিছুদিন পর তিনি পদত্যাগ করেন।
এসময় তিনি সরকারের কাছে তাদের চারটি দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো— প্রত্যেকটি কবর শনাক্ত করতে হবে ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে। শনাক্তের পর প্রত্যেকটা কবরে নামফলক লাগাতে হবে। কবরস্থানের নামকরণ করতে হবে এবং জুলাই ঘোষণাপত্রে গণকবরের বিষয়ে উল্লেখ রাখতে হবে।
এসময় উত্তরায় নিহত মোহাম্মদ আসাদুল্লার স্ত্রী ফারজানা আক্তার বলেন, আমার ছেলের বয়স ১০, মেয়ের ৫। ওরা জিজ্ঞেস করে, ‘বাবা কোথায়?’ আমি কোনও জবাব দিতে পারি না। আমার মেয়েটা ভাবে— তার বাবা কাজে গেছে, ফিরবে। ছেলেটা বলে, ‘আম্মু, তুমি কি একদিন আমাকে বাবার কবর দেখাতে নিয়ে যাবে না?’ কিন্তু রায়েরবাজার কবরস্থানের যেখানটায় দাফন করা হয়েছে, তা এখন শুধু একটি গর্ত। না আছে কোনও চিহ্ন, না আছে পরিচয়। আমরা চাই, সব কবর সঠিকভাবে শনাক্ত করা হোক এবং শহীদদের যথাযথ মর্যাদা দেওয়া হোক।
জুলাই রেভুলোশনারি অ্যালায়েন্সের আহ্বায়ক সালেহ মোহাম্মদ রায়হানের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন— শহীদ শেখ শাহরিয়ার বিন মতিনের বাবা আব্দুল মতিন, শহীদ জাবির হোসেনের বাবা কবির হোসেন প্রমুখ।