X
বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মুক্তি পেলেন জামায়াত নেতা এটিএম আজহার

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৮ মে ২০২৫, ০৯:৫১আপডেট : ২৮ মে ২০২৫, ১০:৩০

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ খালাস পেয়ে অবশেষে মুক্তি পেয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম। 

বুধবার (২৮ মে) সকাল ৯টা ৫ মিনিটে বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি) হাসপাতালে ভর্তিরত অবস্থায় কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

পরে তাকে হাসপাতাল থেকে একটি কালো রঙের গাড়িতে করে হাসপাতাল থেকে বের করে আনা হয়। তার সঙ্গে রয়েছেন জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান। সেখান থেকে এটিএম আজহারুল ইসলামকে শাহবাগ চত্বরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেখানে জামায়াতের পক্ষ থেকে একটি গণসংবর্ধনা দেওয়া হবে বলে জামায়াত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এজন্য এরইমধ্যে একটি মঞ্চও প্রস্তুত করা হয়েছে।

এর আগে, মঙ্গলবার (২৭ মে) সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে এটিএম আজহারকে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস দেন আপিল বিভাগ। সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের সর্বসম্মতিক্রমে এ রায় ঘোষণা করা হয়।

এদিন রাতেই রায়ের অনুলিপি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পিজি হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে কারা কর্তৃপক্ষ আজহারুল ইসলামের মুক্তির প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। ঢাকা বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) মো. জাহাঙ্গীর কবির তার মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, সকাল ৯টা ৫ মিনিটে হাসপাতাল থেকে মুক্তি দেওয়া হয় আজহারুল ইসলামকে।

২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জামায়াতে ইসলামীর নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে তিনটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড এবং দুটি অভিযোগে কারাদণ্ড দেন। ছয়টি অভিযোগের মধ্যে একটি থেকে তিনি খালাস পেয়েছিলেন।

যে অভিযোগগুলোয় তিনি সাজাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন—১৯৭১ সালের ১৬ এপ্রিল আজহারুল ইসলাম পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এবং জামায়াত সদস্যদের সঙ্গে মিলে মোকসেদপুর গ্রামে আক্রমণ চালান। তারা বাড়িঘরে লুটপাট চালায়, অগ্নিসংযোগ করে এবং অসংখ্য নিরস্ত্র সাধারণ মানুষকে হত্যা করে। অপরাধ প্রমাণ হওয়ায় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন আজহারুল।

১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল আজহারুল ইসলাম রংপুরের ঝাড়ুয়ারবিলের কাছে হিন্দু অধ্যুষিত একাধিক গ্রামে পরিকল্পিত হামলায় অংশ নেন। এতে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত এবং আরও ২০০ জনেরও বেশি মানুষকে অপহরণ ও হত্যা করা হয়। জয়েন্ট ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজের (জেসিই) অধীনে দোষী সাব্যস্ত হন আজহারুল। মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত।

১৯৭১ সালের ৩০ এপ্রিল আজহারুল ইসলাম রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে চারজন হিন্দু অধ্যাপক ও একজন অধ্যাপকের স্ত্রীকে অপহরণ করেন। পরে তাদের হত্যা করা হয়।

১৯৭১ সালের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত আজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে রংপুর টাউন হলে বেশ কয়েকজনকে অপহরণ করে আটক রাখা হয়। যেটি ধর্ষণ ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহৃত হতো। অপহরণ, আটক, নির্যাতন, ধর্ষণ এবং অন্যান্য অমানবিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ২৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।

১৯৭১ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে দুটি ঘটনায় আজহারুল ইসলাম এক যুবককে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ার জন্য চড় দেন এবং পরে তার ভাইকে অপহরণ ও নির্যাতনের নির্দেশ দেন। নির্যাতনে ওই ব্যক্তি স্থায়ীভাবে পঙ্গুত্বের শিকার হন। এতে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দেন আদালত।

/এমকে/ইউএস/
সম্পর্কিত
ছাত্র জোটের কর্মসূচিতে হামলায় আটকদের মুক্তি দাবিতে থানা ঘেরাও, নারীকে লাথি মারার ছবি ভাইরাল
আমি তো চুরি, ডাকাতি বা জমি দখল করিনি: এটিএম আজহার
শাহবাগের আন্দোলনকারীদের বিচার দাবি হেফাজতে ইসলামের
সর্বশেষ খবর
লাল-সবুজ জার্সিতে দেশের জন্য কিছু করার অপেক্ষায় ফাহামিদুল 
লাল-সবুজ জার্সিতে দেশের জন্য কিছু করার অপেক্ষায় ফাহামিদুল 
মার্কিনিদের বক্তব্য সেন্সর করলে জুটবে ভিসা নিষেধাজ্ঞা
মার্কিনিদের বক্তব্য সেন্সর করলে জুটবে ভিসা নিষেধাজ্ঞা
‘চট্টগ্রামে নারীকে লাথি মারা যুবক ছাত্র শিবিরের কর্মী’
‘চট্টগ্রামে নারীকে লাথি মারা যুবক ছাত্র শিবিরের কর্মী’
১ জুন বাজারে আসছে নতুন নোট
১ জুন বাজারে আসছে নতুন নোট
সর্বাধিক পঠিত
আনু মুহাম্মদের স্ট্যাটাসে আসিফ নজরুলের বিস্ময়
আনু মুহাম্মদের স্ট্যাটাসে আসিফ নজরুলের বিস্ময়
ঢাবিতে বামপন্থিদের মশাল মিছিল ঘিরে উত্তেজনা, ‘ভুয়া ভুয়া’ দুয়োধ্বনি
ঢাবিতে বামপন্থিদের মশাল মিছিল ঘিরে উত্তেজনা, ‘ভুয়া ভুয়া’ দুয়োধ্বনি
সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য জুয়েলারি ব্যবসা বন্ধ
সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য জুয়েলারি ব্যবসা বন্ধ
ভুয়া পরিচয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে ১২ বছর চাকরি: বরখাস্ত মামা-ভাগনে
ভুয়া পরিচয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে ১২ বছর চাকরি: বরখাস্ত মামা-ভাগনে
কঠোর কর্মসূচিতে যাচ্ছেন ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা
কঠোর কর্মসূচিতে যাচ্ছেন ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা