ভাষার দক্ষতা বৃদ্ধি ও কোরিয়ান কোম্পানিগুলো চাইলে দক্ষিণ কোরিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর সংখ্যা আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন দেশটির রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক।
বুধবার (২৮ মে) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিস (বিস) আয়োজিত কান্ট্রি লেকচার সিরিজে তিনি একথা বলেন।
বাংলাদেশ থেকে যারা দক্ষিণ কোরিয়ায় যায় তাদের ভাষার দক্ষতা ৭৫ শতাংশ। অন্যদিকে নেপালিদের দক্ষতা ৯৮ শতাংশ। এছাড়া নেপালিরা দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়ার পর এক কোম্পানি থেকে অন্য কোম্পানিতে চাকরি নেয় না, বরং একই কোম্পানিতে চাকরি করে। বাংলাদেশি যারা কাজ করতে যায় তারা সেখানে থাকে না বলে অনেক কোরিয়ান কোম্পানির অভিযোগ। অন্যদিকে কোরিয়ায় নেপালি শ্রমিকদের একই কোম্পানিতে কাজ করার সুনাম আছে, জানান রাষ্ট্রদূত।
তিনি বলেন, ‘২০০৮ থেকে এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেমের অধীনে প্রায় ৩৫ হাজার কর্মী কোরিয়ায় গেছে। যদি ভাষার দক্ষতা বৃদ্ধি পায় এবং কোম্পানিগুলো চায় (অন্য জায়গায় চাকরি না নেয়) তবে এই সংখ্যা আরও বাড়বে।’
পার্ক ইয়ং সিক বলেন, ‘যেসব শ্রমিক টাকা, অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা নিয়ে ফেরত আসে, তারা বাংলাদেশে ব্যবসা শুরু এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে।’
কোরিয়ান বিনিয়োগ
দক্ষিণ কোরিয়ার অনেক বড় বড় কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্যে স্যামসাং ২০০৯ থেকে বাংলাদেশে মোবাইল ফোন, টিভি, ওয়াশিং মেশিন, রেফ্রিজারেটার তৈরি করছে। হুন্দাই ও কিয়া মোটরস অ্যাসেম্বলি প্ল্যান্ট তৈরি করেছে। এলজি বাটারফ্লাই টিভি, রেফ্রিজারেটর, ওয়াশিং মেশিনসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য তৈরি করছে।
রাষ্ট্রদূত জানান, ২০২৩ অর্থবছরে কোরিয়ায় প্রায় ৬০ কোটি ডলার বিনিয়োগ এসেছে। কিন্তু এখানে বিনিয়োগে কিছু বাধা আছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে জিডিপি-বিদেশি বিনিয়োগ অনুপাত পৃথিবীর সবচেয়ে কম। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এটি ০.৭৫ শতাংশ। ভারতের ক্ষেত্রে ১.৭ শতাংশ এবং ভিয়েতনামের জন্য ৪.৭ শতাংশ।’
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের পৃথিবীর সব দেশ একই ধরনের সুবিধা দিয়ে থাকে জানিয়ে রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক বলেন, ‘ভিসা প্রাপ্তি, কাস্টসম ক্লিয়ারেন্স, যৌত্তিক কর ও শুল্ক হার, লাভের টাকা ফেরত নিয়ে যাওয়ার সুবিধাসহ অন্যান্য বিষয়গুলো উন্নত করতে হবে।’
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে ১৯৭৯ সালে প্রথম কোরিয়ান কোস্পানি বিনিয়োগ করেছিল। এই খাত দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলেও তিনি জানান।