ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র এবং স্যার এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহরিয়ার আলম সাম্যকে ছুরিকাঘাত করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় গ্রেফতার ছয়জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আসামিরা হলেন— মো. তামিম হাওলাদার, পলাশ সরদার ও সম্রাট মল্লিক, সোহাগ, হৃদয় ইসলাম ও রবিন।
বুধবার (২৮ মে) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামান শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
এদিন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাদের কারাগারে রাখার আবেদন করেন। পরে আদালত সেটি মঞ্জুর করেন।
এর আগে, ১৩ মে দিবাগত রাতে ঢাকার গ্রিন রোড ও রাজাবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তামিম, পলাশ ও মল্লিককে গ্রেফতার করে শাহবাগ থানা পুলিশ। পরের দিন ১৪ মে তাদের কারাগার পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। গত ১৭ মে তাদের ছয়দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ২৩ মে আবার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। গত ২৫ মে রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে সোহাগ, হৃদয় ও রবিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরের দিন আদালত তাদের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরমধ্যে হৃদয় ও নাহিদ হাসান পাপেল দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। আজকের আদেশসহ মোট ৯ জন কারাগারে আছে। ২ রিমান্ডে আছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ১৩ মে রাত পৌনে ১২টায় সাম্য তার বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু আশরাফুল আলম রাফি ও মো. আব্দুল্লাহ আল বায়েজিদকে নিয়ে মোটরসাইকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরছিলেন। ফেরার পথে রমনা কালীমন্দিরের উত্তর পাশে পুরাতন ফোয়ারার কাছে পৌঁছান। তখন অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন আসামি তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল দিয়ে ভুক্তভোগী সাম্যের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। তখন সাম্য ও তার দুই বন্ধু আসামিদের কাছে মোটরসাইকেল ধাক্কা দেওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করেন।
পরে অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন আসামি সাম্য ও তার বন্ধুকে ইট দিয়ে আঘাত করেন। তাদের কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তজমাট নীলাফুলা জখম করে। এদের মধ্যে একজন আসামি সাম্যকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার ডান পায়ের ডান রানের পিছনে উপর্যুপরি আঘাত করেন। তার বন্ধু মো. আব্দুল্লাহ আল বায়েজিদের ডান হাতের কব্জির ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন।
গুরুতর রক্তাক্ত জখম অবস্থায় সাম্য মাটিতে পড়ে গেলে এবং আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এলে আসামিরা তাদের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে চলে যায়। পরবর্তীতে সাম্যকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই শরীফুল ইসলাম শাহবাগ রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।