আগামী ৭ জুন উদযাপিত হবে ঈদুল আজহা। এই উৎসব প্রিয়জনদের সঙ্গে নিজ গ্রামে উদযাপন করতে রাজধানী ঢাকা ছাড়ছেন অসংখ্য মানুষ। আজ বুধবার (৪ জুন) কমলাপুর রেলস্টেশনে ঘরমুখো মানুষের প্রচণ্ড ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৫ জুন) থেকে শুরু হচ্ছে সরকারি ছুটি। ফলে বিকালের দিকে যাত্রীসংখ্যা আরও বাড়বে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে আজ থেকেই ঈদ উপলক্ষে বিশেষ ট্রেন সার্ভিস চালু হয়েছে। পাশাপাশি বিনা টিকিটে যাতায়াতকারীদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে পরিচালিত হচ্ছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে অনেক যাত্রী জানিয়েছেন, অনলাইনে টিকিট কাটার সুবিধার কারণে এবার ভোগান্তি কিছুটা কম।
আজ সকাল ১০টার দিকে কমলাপুর স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে বহু মানুষ রাজধানী ছাড়ছেন। প্রতিটি ট্রেনই যাত্রীতে ঠাসা। আন্তঃনগর ট্রেনগুলোতে টিকিট যাচাইয়ে কঠোরতা বাড়ানো হয়েছে। কেউ টিকিটবিহীন ধরা পড়লেই জরিমানা করা হচ্ছে এবং নামিয়ে দিয়ে নতুন টিকিট কিনে উঠতে বাধ্য করা হচ্ছে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ঈদযাত্রা আনুষ্ঠানিকভাবে ১ জুন থেকে শুরু হলেও গত কয়েকদিন যাত্রী চাপ ছিল তুলনামূলক কম। তবে সরকারি চাকরিজীবীদের ছুটি শুরু হওয়ায় আজ থেকে যাত্রীদের ভিড় বেড়েছে।
ভ্রমণ সহজ করতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ১০টি বিশেষ ট্রেন পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা ঈদের আগে ও পরে মোট ৯ দিন চলাচল করবে। এছাড়া ট্রেনের সময়সূচি ঠিক রাখতে ঢাকাগামী ৯টি আন্তঃনগর ট্রেনের বিমানবন্দর স্টেশনে যাত্রাবিরতি বাতিল করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে কমলাপুর রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক মো. সাজেদুল ইসলাম জানান, বর্তমানে ট্রেন চলাচলে কোনও শিডিউল বিপর্যয় নেই। সকাল ৬টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ২১টি ট্রেন ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে গেছে। আজ পুরো দিনে ৬৩টি ট্রেন ছাড়ার কথা রয়েছে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে কেবল একটি স্পেশাল ট্রেন ৩০ মিনিট বিলম্বে ছেড়েছে, বাকি সব নির্ধারিত সময়েই চলাচল করছে।
রংপুর এক্সপ্রেসের যাত্রী ইলিয়াস পাভেল বলেন, ‘ঈদযাত্রা হওয়ার পরও সময়মতো ট্রেন ছাড়ায় আমার কাছে স্বাভাবিকই লাগছে।’ একই ধরনের অভিজ্ঞতার কথা জানান আরও কয়েকজন যাত্রী।
এদিকে টিকিট ছাড়া ভ্রমণের দায়ে আজ ১২ জন যাত্রীকে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কমলাপুর স্টেশনে ঈদযাত্রার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে আসেন রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (পূর্ব) মো. সুবক্তগীনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এ সময় স্টেশনে বসে থাকা কয়েকজন যাত্রীর টিকিট যাচাই করে না থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে জরিমানা করা হয়।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ফাতেমা তুজ-জোহরা বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ১২ জনকে জরিমানা করা হয়েছে। যাত্রীদের শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা রক্ষায় এই অভিযান চলমান থাকবে।
তিনি আরও জানান, নিরাপত্তা নিশ্চিতে তিন স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। দায়িত্ব পালন করছে রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি) এবং রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি)।