ঈদের ছুটি শুরু হতেই রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছেন ঘরমুখো মানুষ। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে শুরু করে কমলাপুর রেলস্টেশনসহ রাজধানীর প্রত্যেকটা বাসস্ট্যান্ডে যাত্রীদের ভিড়।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকাল থেকেই লঞ্চ টার্মিনাল, রেলওয়ে স্টেশন, মহাখালী, গাবতলী ও সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ডে যাত্রীদের ভিড় দেখা যায়। টিকিট না পেয়ে অনেককে সড়কের পাশে বসে থাকতে দেখা গেছে।
সরেজমিন রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে গন্তব্যের বাস, ট্রাক ও প্রাইভেটকারের দীর্ঘ সারি লক্ষ্য করা গেছে। কিছু কিছু গাড়ি এক জায়গায় দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে আছে। বাসের যাত্রীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন টিকিট পাওয়ার প্রত্যাশায়। অনেককে মিনি ট্রাকেও বাড়ি ফিরতে দেখা যায়।
ভোরে সায়দাবাদ এলাকায় দেখা গেছে, যাত্রীরা টিকিটের আশায় কাউন্টারের সামনে ভিড় করে দাঁড়িয়ে আছেন। কিন্তু টিকিট পাচ্ছেন না। টিকিট প্রতি ঈদ উপলক্ষে ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বাড়ানোর অভিযোগও করেন যাত্রীরা।
সায়দাবাদে নোয়াখালীগামী সবুজ আলম ফিরোজ নামে এক যাত্রী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, নোয়াখালীর টিকিট স্বাভাবিকভাবে ৪০০ টাকা নেয়। এখন ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। যার কাছ থেকে যেমন পারছে সেভাবে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে।
আরেকযাত্রী বলেন, ঈদ এলেই টিকিটের দাম বেড়ে যায়। যাত্রীদের জিম্মি করে বাস মালিকরা অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে। অথচ এ বিষয়ে নির্বিকার পুলিশ প্রশাসন। আমাদের বাড়ি ফেরার তাড়া থাকে, তাই বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে টিকিট কিনতে হয়।
এদিকে সকাল ৯টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে তীব্র যানজট দেখো গেছে। রাস্তার পাশে, ফুটপাতে, এমনকি ডিভাইডারের ওপরে বসে আছে মানুষজন। অনেকেই জানান, তাদের বাস ছাড়ার কথা ছিল সকাল ৮টায়, কিন্তু এখনও বাসের দেখা নেই।
সকাল থেকেই রাজধানীর উত্তরার আব্দুল্লাহপুর থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের প্রায় প্রতিটি অংশেই থেমে থেমে যানজট। কোথাও কোথাও পুরোপুরি স্থবির হয়ে ছিল যান চলাচল। বিশেষ করে টঙ্গী, কলেজ গেট, গাজীপুর চৌরাস্তা ও বোর্ডবাজার এলাকায় ছিল তীব্র যানজট।
ময়মনসিংহগামী যাত্রীরা বলেন, সকাল ৭টার দিকে মহাখালী থেকে রওনা দিয়েছি। এখন সাড়ে ৯টা বাজে, অথচ এখনও চৌরাস্তা পার হতে পারিনি।
একজন ট্রাকচালক বলেন, গতকাল রাত ৩টায় চট্টগ্রাম থেকে মাল নিয়ে রওনা দিয়েছি। ভোরেই ঢাকায় ঢুকে পড়ছি, কিন্তু এখনও গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছি না। এত জ্যাম আগে দেখি নাই।
এদিকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানজট আরও বাড়তে দেখা গেছে। যানজট নিয়ন্ত্রণে নিরলস কাজ করছেন দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা। ট্রাফিক পুলিশকে বিভিন্ন জায়গায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে দেখা গেছে। সায়েদাবাদ এলাকায় দায়িত্বরত এক ট্রাফিক পুলিশ বলেন, ঈদের ছুটির শুরু আজ। তাই ভোর থেকেই গাড়ির চাপ বেড়ে গেছে। যানজট নিয়ন্ত্রণে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। সড়কে স্বাভাবিক গতি ফিরতে কিছুটা সময় লাগবে।
উল্লেখ্য, পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে আজ থেকে শুরু হয়েছে টানা ১০ দিনের সরকারি ছুটি। আগামী ৭ জুন উদযাপিত হবে ঈদ। এই ছুটি প্রযোজ্য হয়েছে সচিবালয়সহ সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধাস্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে।