আপনজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে গত কয়েকদিনে ধাপে ধাপে রাজধানী ছেড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। ফলে এখন রাজধানীর বেশিরভাগ রাস্তাই ফাঁকা। প্রধান সড়কে বাস চলছে হাতেগোনা। এতে যাতায়াতে দুই ধরনের বিড়ম্বনায় পড়ছেন নগরবাসী। একদিকে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও বাস পাওয়া যাচ্ছে না। অপরদিকে গাড়ি পেলেও আসন পূর্ণ করতে প্রতি স্টপেজে গাড়ি থামিয়ে রাখতে হচ্ছে চালকদের। এতে অনেক সময় চালক-হেলপারদের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়ছেন কোনও কোনও যাত্রী।
ঈদের তৃতীয় দিনেও দেখা গেছে একই চিত্র। অবশ্য যানবাহনের চাপ না থাকায় অনেকটা অলস সময় কাটছে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের।
সোমবার (৯ জুন) দুপুরে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে রাজধানীর শাহবাগ, সায়েন্সল্যাব, হাতিরপুল, কাওরান বাজার, বাংলামোটর, গুলিস্তান, মতিঝিল, শান্তিনগর, কাকরাইল, নয়া পল্টন, পল্টন, বাবুবাজার, মালিবাগ, শাহবাগ, ফার্মগেট, বিজয় সরণি, রামপুরা, বাড্ডা, কুড়িল, নিউমার্কেট ও আজিমপুরসহ প্রায় সব সড়কেই গণপরিবহন সংকট।
স্ত্রীকে নিয়ে হাতিরঝিলের উদ্দেশে যাওয়ার জন্য পল্টন মোড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন কলেজ শিক্ষক সাহিদ হোসেন। তিনি জানান, দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও বাস পাচ্ছেন না। এর আগে যাত্রাবাড়ী থেকে শিকড় পরিবহনের বাসে এ পর্যন্ত এলেও যাত্রী সংকটে প্রতিটি স্টপেজেই বাসগুলো অনেক সময় নষ্ট করেছে। ২০ মিনিটের জায়গায় লেগেছে প্রায় এক ঘণ্টা।
তিনি বলেন, ‘এ কারণে বাধ্য হয়ে অনেকে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে রিকশা বা উবার দিয়ে যাতায়াত করছেন। কিন্তু সবার তো এমন সামর্থ্য থাকে না।’
পুরান ঢাকার আজিমপুর থেকে গুলিস্তানের গোলাপশাহ মাজারের সামনে থেকে গাজীপুরগামী ভিআইপি পরিবহনের একাধিক যাত্রী জানান, এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও গাড়ির দেখা মিলছে না।
তারা বলেন, ‘আগে যানজটের কারণে রাস্তায় বিলম্ব হতো। আর এখন যাত্রী সংকটের কারণে স্টপেজে দেরি হচ্ছে।’
যাত্রাবাড়ী থেকে উত্তরার দিয়াবাড়ীগামী রাইদা পরিবহনের চালক হারুন বলেন, ‘যাত্রাবাড়ী থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মাত্র ১৫ জন যাত্রী পেয়েছি। এভাবে চললে তো তেলের খরচও উঠবে না। অন্যদিকে রাস্তায় একটু দেরি করলে যাত্রীদের নানান কথা শুনতে হয়।’
অপরদিকে গণপরিবহন কম হওয়ায় অধিকাংশ সিগন্যালে নেই ট্রাফিক পুলিশ। কোনও কোনও জায়গায় দুই-একজন ট্রাফিক পুলিশ সদস্য থাকলেও তারা অলস সময় কাটাচ্ছেন।