রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় যুবদল নেতা আরিফ সিকদার হত্যা মামলায় গ্রেফতার শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে ফতেহ আলীর সাত দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবদুল ওয়াহাবের আদালত এই আদেশ দেন।
এর আগে, মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম আসামিকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দশ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ বাদল মিয়া রিমান্ড বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরোধিতা করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজিজুল হক (দিদার) আসামির জামিন বাতিলপূর্বক রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আসামি দীর্ঘদিন ভারতের বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে থাকার পর গত ২০২৪-এর আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সাথে সাথে তার পূর্বের নিয়ন্ত্রণাধীন মগবাজার ও হাতিরঝিল এলাকায় পুনঃকর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি ইতোমধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহ, সশস্ত্র মহড়ার প্রস্তুতি, গোপন বৈঠকের মাধ্যমে সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি শুরু করেন মর্মে তদন্তে পাওয়া গেছে। এরই ধারাবাহিকতায় সুব্রত বাইন তার দলের জুনিয়র সদস্য এ মামলার এজাহারনামীয় আসামিদের মাধ্যমে ভিকটিম আরিফ সিকদারকে হত্যা করানো হয়েছে মর্মে প্রাথমিকভাবে তথ্য পাওয়া গেছে। এমতাবস্থায় এ হত্যা মামলার মূল রহস্য উদঘাটনসহ তার সহযোগী অন্যান্য ক্যাডারদের গ্রেফতার ও এ মামলায় ব্যবহৃত অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের লক্ষ্যে তাকে নিবিড় ও ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দশ দিনের পুলিশ রিমান্ডের প্রয়োজন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, রাজধানীর হাতিরঝিল থানাধীন এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আসামির সঙ্গে মামলার বাদীর ছোট ভাই আরিফ সিকদারে সাথে বিরোধ-শত্রুতা চলে আসছিল। এই শত্রুতার জের ধরে আসামিরা আরিফ সিকদারকে খুন-জখম করার পাঁয়তারা করতে থাকে। গত ১৯ এপ্রিল রাতে রাজধানীর হাতিরঝিল থানাধীন নয়াটোলা মোড়ল গলির ‘দি ঝিল ক্যাফে’র সামনে যুবদল নেতা মো. আরিফ সিকদারকে গুলি করা হয়। আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ এপ্রিল মৃত্যু হয় তার। নিহত আরিফ সিকদার ঢাকা মহানগর উত্তরের ৩৬ নং ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সহ-ক্রীড়া সম্পাদক। এই ঘটনায় নিহত আরিফের বোন রিমা আক্তার বাদী হয়ে সুব্রত বাইনের সহযোগী মাহফুজুর রহমান বিপুসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন– মো. ইয়াছিন (১৯), মো. আসিফ হোসেন (২১), মো. অনিক (১৯), মো. মিরাজ (১৯), মো. আশিক (১৯), মো. ইফতি (২৪), জাফর ইমাম তরফদার মন্টু (৪০), রতন শেখ (৪৫) ও আলিফ (১৯)।
উল্লেখ্য, গত ২৭ মে সুব্রত বাইন ও তার সহযোগী মোল্লা মাসুদসহ চারজনকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে যৌথবাহিনী। পরদিন হাতিরঝিল থানার অস্ত্র আইনের মামলায় সুব্রত বাইনের আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার একটি আদালত।