সব সংস্থাকে তাদের আওতাধীন জলাশয় পরিষ্কার রাখার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘সব সংস্থাকে নিজেদের খাল, জলাশয় ও ডোবা পরিষ্কার করতে হবে। নিজেদের অধীন এলাকা পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব নিতে হবে সংস্থাগুলোকে।'
বুধবার (৭ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর বিমানবন্দরের কুর্মিটোলায় সিভিল এভিয়েশন স্কুল অ্যান্ড কলেজ সংলগ্ন কাওলা খাল এলাকায় মশার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসির স্বাস্থ্য বিভাগ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও প্রকৌশল বিভাগের সমন্বয়ে ১৫ দিনব্যাপী সমন্বিত মশক নিধন কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আজ ৭ ডিসেম্বর শুরু হওয়া সমন্বিত মশক নিধন কার্যক্রম একযোগে প্রতিটি ওয়ার্ডে ১৫ দিন ধরে চলবে। এ কার্যক্রম উদ্বোধন শেষে ডিএনসিসি মেয়র সিভিল এভিয়েশনের অধীন জলাশয় ও এয়ারপোর্ট বাউন্ডারি সংলগ্ন খাল, রাজউকের অধীন উত্তরা ১৫ নং সেক্টরের ২ নম্বর ব্রিজ পাড়ের খাল পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, 'এয়ারপোর্টের পার্শ্ববর্তী খাল, জলাশয় ও ডোবাগুলোতেই মশার চাষ হচ্ছে। এগুলো সিভিল এভিয়েশন, রাজউক, গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষসহ অন্যান্য সংস্থার অধীন। সরেজমিনে এসে দেখলাম এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে কচুরিপানা। এই কচুরিপানা পরিষ্কার না করলে আমরা সিটি করপোরেশন থেকে যতই মশার ওষুধ দেই না কেন মশা নিধন করা সম্ভব না। সব সংস্থাকে নিজেদের খাল, জলাশয় ও ডোবা পরিষ্কার করতে হবে। সংস্থাগুলোকে নিজেদের অধীন এলাকা পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব নিতে হবে।'
এসময় মেয়র আরও বলেন, 'সংস্থাগুলো সমন্বিতভাবে কাজ না করলে খাল ও জলাশয় থেকে মশা নিধন খুব দুরূহ কাজ। সিটি করপোরেশনের একার পক্ষে এটি সম্ভব না। আমরা বারবার বলেও ব্যর্থ হচ্ছি। বারবার বলা সত্ত্বেও কেউ কর্ণপাত করছে না। এটি একজন আরেকজনকে দোষারোপ করার বিষয় নয়। সব সংস্থাকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে, তাহলেই সমাধান সম্ভব।'
আন্তমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘আন্তমন্ত্রণালয় মিটিং হয়েছে। তাতে সিভিল এভিয়েশন, রাজউক, রেলওয়ে, পানি উন্নয়ন বোর্ড অংশ নিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে, যার যার জায়গার কচুরিপানা নিজেরা পরিষ্কার করবে। সবাইকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। সিভিল এভিয়েশনের জায়গা আপনারা নিজেরা পরিষ্কার করে দেন। সিভিল এভিয়েশন পরিষ্কার করতে না পারলে ওই জায়গা আমাদের দিয়ে দিক। আমরা পরিষ্কার করে নেবো।’
মো. আতিকুল ইসলাম আরও বলেন, ‘খাল তো আমরা পরিষ্কার করেছি। আগে কী অবস্থা ছিল আপনারা দেখেছেন। জায়গার দায়িত্ব না নিতে পারলে কাগজে রেজিস্ট্রি করে দেন। আমরা পরিচ্ছন্ন রাখব। যে জায়গায় বা জলাশয়ে কচুরিপানা নেই, সেখানে আমরা মশার ওষুধ স্প্রে করে দেবো। কিন্তু যেখানে কচুরিপানা দিয়ে ভর্তি, সেখানে স্প্রে করবো কীভাবে!’
এসময় মেয়র সিভিল এভিয়েশন ও রাজউকের প্রতিনিধিদের সাতদিনের মধ্যে জলাশয়ের কচুরিপানা পরিষ্কার করার আহ্বান করেন। সাতদিনের মধ্যে কচুরিপানা পরিষ্কার না হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
অভিযানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন—ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, মেয়রের উপদেষ্টা অধ্যাপক কবিরুল বাসার, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহ. আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, স্থানীয় কাউন্সিলরবৃন্দ, অঞ্চল-১ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা জুলকার নায়ন ও অঞ্চল-৬ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া আফরীন।