পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, ‘যেকোনও মূল্যে হাতি হত্যা বন্ধ করতে হবে। হাতিসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণী নিধনের সকল অপচেষ্টা প্রতিরোধে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে কাজ করছে। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি বন্যহাতিকে জঘন্য ও নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আর কোনও হাতি, বাঘ বা অন্য কোনও বন্যপ্রাণীর যেন অকারণে ও অপঘাতে মৃত্যু না হয় সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’ মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় আয়োজিত হাতি-সংরক্ষণ এবং হাতি ও মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসনকল্পে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব বলেন। মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
হাতি সংরক্ষণে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ উল্লেখ করেন পরিবেশমন্ত্রী, ‘হাতি চলাচলের প্রচলিত রাস্তা ও করিডোর পুনরুদ্ধার ও পুনঃবনায়ন করা হচ্ছে। হাতির খাবারের জন্য কলা গাছ এবং অন্যান্য তৃণ জাতীয় উদ্ভিদ চাষ করা হবে। সচেতনতা বৃদ্ধিসহ হাতি হত্যার শাস্তি এবং হাতির কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট বন বিভাগের কর্মীদের হাতি-মানুষ দ্বন্দ্ব নিরসন, লোকালয়ে হাতি প্রবেশ করলে বনে ফেরানো, সচেতন করার কৌশল ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বনাঞ্চলে অবৈধ বসবাসকারীদের অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। সকলের সহযোগিতায় এই মহাবিপন্ন প্রাণীকে অবশ্যই বাঁচার সুযোগ দিতে হবে।’
হাতি কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণের কাছে ক্ষতিপূরণের চেক হস্তান্তর করা হয় অনুষ্ঠানে। হাতির আক্রমণে নিহত একজনের পরিবারকে তিন লাখ টাকা এবং ফসলের ক্ষতির জন্য অন্য দুই জনকে ৪৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। এছাড়া হাতি হত্যা প্রতিরোধে কাজ করতে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জনগণ।
মতবিনিময়ে সভাপতিত্ব করেন বন অধিদফতরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম-১৫ আসনের সংসদ সদস্য প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) সঞ্জয় কুমার ভৌমিক, সাতকানিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ মোতালেব, বাঁশখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চৌধুরী মো. গালিব এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর।