সচিবালয়কে একবার ব্যবহারযোগ্য (ওয়ান টাইম) প্লাস্টিকমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) সচিবালয়ে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘সুস্থ পরিবেশ, স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের লক্ষ্যে ১০০ কর্মদিবসের অগ্রাধিকার কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেন মন্ত্রী। মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন, অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) ড. ফাহমিদা খানম এবং পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. আব্দুল হামিদসহ আরও অনেকে এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, সচিবালয়ে ‘সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক’ (এসইউপি) ফ্রি ঘোষণা এবং অন্যান্য সরকারি অফিসগুলোতে একই ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা জারি করা হবে। পরিবেশদূষণ রোধে প্রতি বিভাগে দু’টি করে ‘সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক’ (এসইউপি) ফ্রি স্কুল ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন এবং উন্নত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে প্রতি বিভাগে দু’টি করে ‘জিরো ওয়েস্ট ভিলেজ’ চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উপলক্ষে ‘ন্যাশনাল ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক’ প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ এবং 'সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক' (এসইউপি) এর উৎপাদন ও ব্যবহার হ্রাসে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে। বর্জ্য সুষ্ঠুভাবে ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে ‘এক্সেন্টেড প্রডিউসার রেসপনসিবিলিটি' (ইপিআর) এর খসড়া চূড়ান্ত করা হবে।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, পানিদূষণ রোধে শিল্প কারখানার ইটিপি কার্যকরভাবে চালু রাখতে স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে অনলাইন মনিটরিং চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে। সবুজ ক্যাটাগরিভুক্ত ছাড়পত্র ‘সেল্ফ অ্যাসেসমেন্ট’ এর আওতায় আনার কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত পাহাড়, টিলা ও প্রাকৃতিক জলাধারের ম্যাপিং এবং পরিবেশ ছাড়পত্র প্রদান প্রক্রিয়া সহজ করারউদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
বনমন্ত্রী বলেন, জবরদখলকৃত ৫০ হাজার একর বনভূমির উচ্ছেদ প্রস্তাব প্রস্তুত করা এবং জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হবে। এর আগে পাঠানো এক লাখ ৮৭ হাজার একর জবরদখলকৃত বনভূমি উদ্ধারের প্রস্তাব বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। স্কুল-কলেজের সিলেবাস/পাঠ্যবইকে সবুজায়নের কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং কৃষিজমি রক্ষার্থে সরকারি নির্মাণ কাজে শতভাগ ব্লক ব্যবহারে সংশোধিত রোডম্যাপ অনুমোদন এবং দেশব্যাপী ন্যূনতম ৫০০ অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা এবং শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬ হালনাগাদ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। শিল্প প্রতিষ্ঠান বা প্রকল্পের কার্যক্রমের ব্যাপ্তি ও সৃষ্ট সম্ভাব্য দূষণের পরিধি, মাত্রা এবং পরিবেশ ও মানবস্বাস্থ্যের ওপর সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাব বিবেচনা করে শিল্প প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্পের ক্যাটাগরি হালনাগাদ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
পরিবেশমন্ত্রী আরও বলেন, পরিবেশ ও জলবায়ুর অভিঘাত মোকাবিলার লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ ক্লাইমেট ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ’ চূড়ান্তকরণ এবং আগামী এপ্রিল ২০২৪-এ ঢাকায় অনুষ্ঠেয় ‘ন্যাশনাল অ্যাডাপটেশন প্লান (এনএপি) এক্সপো’ আয়োজনের লক্ষ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হবে। ‘মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যান’ বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে কর্মকৌশল প্রণয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের আওতায় প্রস্তাবিত প্রস্তাবগুলো যাচাই-বাছাই করে গাইডলাইন প্রণয়ন এবং আন্তর্জাতিক ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড’ থেকে অর্থায়ন প্রাপ্তির লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ১০০ কর্মদিবসের অগ্রাধিকারের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ‘পার্টনারশিপ ফ্রেমওয়ার্ক'’এর উদ্যোগ গ্রহণ ও আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় বাড়ানোর মাধ্যমে ‘হোল অব গভর্নমেন্ট’ এবং ‘হোল অব সোসাইটি’ বাস্তবায়ন করা হবে। আসন্ন বাজেটে ‘ক্লিন অ্যান্ড গ্রিন’ থিম এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে কার্যকর পরিবীক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
