X
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১

‘কোনও ভুল করা যাবে না’

হিটলার এ. হালিম
০৬ মে ২০২২, ০৮:০০আপডেট : ০৪ মার্চ ২০২৩, ১৬:৫০

শৈশবে বাবাকে দেখে হতে চেয়েছিলেন সফল ব্যবসায়ী। সেটাই হয়েছেন স্টার কম্পিউটার সিস্টেমস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী রেজওয়ানা খান। প্রযুক্তি ও সফটওয়্যার খাতের উদ্যোক্তা হওয়ার পাশাপাশি সাইবার সচেতনতা নিয়েও কাজ করছেন।

বিদেশ থেকে উচ্চতর ডিগ্রিও নিয়েছেন বাংলাদেশ উইমেন ইন টেকনোলজির (বিডাব্লিউআইটি) সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ানা খান। উদ্যোক্তা হওয়ার আগে চাকরিও করেছেন। ছিলেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পরামর্শক। প্রযুক্তি খাতে নারীর কল্যাণে কাজ করাই এখন তার লক্ষ্য। তিনি চান নারীরা আরও বেশি প্রযুক্তি পেশায় আসুক।

 

বাংলা ট্রিবিউন: উদ্যোক্তা হলেন কীভাবে?

রেজওয়ানা খান: মূলত বাবাকে (আলী আকবর খান) দেখেই সব শিখেছি। ছোটবেলা থেকেই দেখতাম বাবা নিজের ব্যবসা ম্যানেজ করছেন। কর্মীদের ম্যানেজ করছেন। নিজের মতো করে সব করছেন। তখন থেকেই মনে হতো আমি বাবার মতো হবো। শৈশব থেকে উদ্যোক্তা হতে চেয়েছি।

 

বাংলা ট্রিবিউন: ব্যবসার জন্য প্রযুক্তিকে বেছে নিলেন কেন?

রেজওয়ানা খান: সবসময় একটা জিনিসই ভেবেছি—  আমি যে বিষয় নিয়ে পড়ালেখা করবো, সেটা নিয়েই উদ্যোক্তা হবো। অনেকে পড়ালেখা করেন এক বিষয়ে, চাকরি বা ব্যবসা করেন অন্য বিষয়ে। এটাকে আমি ইনজাস্টিজ মনে করি। আমি পড়েছি টেকনোলজি নিয়ে। এ কারণে টেকনোলজি উদ্যোক্তা হয়েছি।

 

বাংলা ট্রিবিউন: দেশে প্রযুক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ কম। ব্যবসায়েও তাই। আপনার বেলায় বিষয়টি কীভাবে কাজ করলো?

রেজওয়ানা খান: আমি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্স শেষ করি। এরপর বাবার পরামর্শেই এই সেক্টরে আসা। প্রযুক্তি খাতটি অনেক বড় ও সম্ভাবনাময়। ফলে চয়েজ করার ক্ষেত্রে জটিলতার মুখে পড়তে হয়নি। তাছাড়া আমার সিদ্ধান্তের পেছনে পরিবারের অনেক সাপোর্ট ছিল।

 

বাংলা ট্রিবিউন: প্রযুক্তি ব্যবসায় নারীরা এখনও কম আসছেন কেন?

 

রেজওয়ানা খান: সামাজিক ও পারিবারিক সংস্কৃতির কারণেই এমনটা হয়েছে। নারীরা পড়ালেখা করছেন, কিন্তু এসব জায়গায় আসছে না। সেদিক থেকে আমি সৌভাগ্যবান। পরিবার আমাকে সাপোর্ট দিয়েছে। তারা সবসময় বলেছে, বসে থাকলে চলবে না। কিছু একটা করতে হবে।

 

বাংলা ট্রিবিউন: গত ২০ বছরে এ খাতের চিত্র কেমন বদলালো?

রেজওয়ানা খান: আগেও মেয়েরা ভালো করতো। তবে পড়ালেখা শেষ করে এই খাতে আসতে চাইতো না। আমার সঙ্গে অনেকে পড়েছে। কিন্তু দেখা গেল তারা কেউ ব্যাংকে ঢুকে গেছে, কেউ সেলসে বা কেউ অন্য প্রতিষ্ঠানে। আইটিতে পড়ে আইটিতে আসছে না। এই পরিস্থিতি আগের চেয়ে কমেছে। তবে আরও উন্নতি প্রয়োজন।

 

বাংলা ট্রিবিউন: বাংলাদেশ উইমেন ইন টেকনোলজিতে (বিডাব্লিউআইটি) আপনি সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন। সংগঠনে এসে নারীদের কেমন দেখছেন?

রেজওয়ানা খান: নারী ব্যবসায়ীরা নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়ছেন। এসব চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি আমরা। আমরা তাদের কানেক্ট করছি। দক্ষ করে গড়ে তোলার প্রক্রিয়া শুরু করেছি।

 

বাংলা ট্রিবিউন: সংগঠনটিকে নারী কল্যাণে কীভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে?

রেজওয়ানা খান: এসএমই ও এটুআই’র সঙ্গে মিলে আমরা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি। এরইমধ্যে অনেক কর্মসূচি শেষ হয়েছে। সামনে আরও কর্মসূচি আসবে। মূলত মেয়েদের দক্ষ করে গড়ে তোলাই আমাদের টার্গেট।

‘কোনও ভুল করা যাবে না’

 

বাংলা ট্রিবিউন: সংগঠন নিয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী?

রেজওয়ানা খান: টেকনোলজিতে নারীদের সব ধরনের সহায়তা করা আমাদের প্রধান লক্ষ্য। এরমধ্যে আছে তাদের গাইডলাইন দেওয়া, মেন্টর হিসেবে কাজ করা, কোনও সমস্যায় পড়লে উত্তরণের পরামর্শ দেওয়া ইত্যাদি।

 

বাংলা ট্রিবিউন: করোনা থেকে কী শিক্ষা পেলেন?

রেজওয়ানা খান: আমার প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে হাইব্রিড সিস্টেম চালু আছে। অনেকে হোম অফিস করছেন। অনেকে সরাসরি অফিসে আসছেন। এতে খরচ কিছুটা কমেছে। তবে খুব বেশি যে কমেছে তা নয়। হোম অফিসের কারণে কিছু বাড়তি জায়গা পাচ্ছি। এটা অন্যভাবে ব্যবহার করা যাচ্ছে। সামগ্রিকভাবে ব্যবসার সম্প্রসারণে হোম অফিসের ভূমিকা আছে।

 

বাংলা ট্রিবিউন: দেশের হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার ও সলিউশন সার্ভিসের অবস্থা কেমন দেখছেন?

রেজওয়ানা খান: আমাদের প্রথমেই একটা জিনিস ভাবতে হবে, প্রতিযোগিতা করার মতো অবস্থায় আছি কিনা। আমাদের স্কিলড লেবার নেই। অনেক সময় টেন্ডারে যা চাওয়া হয় তা করার সক্ষমতা আমাদের থাকে। কিন্তু কিছু শর্ত পূরণ করা সম্ভব হয় না। ওইসব শর্ত পূরণের কোনও সুযোগই দেশে নেই। এ কারণে দেশিদের ছাপিয়ে বিদেশিরা সুযোগ পাচ্ছে। এ বিষয়গুলোর দিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া প্রয়োজন।

 

বাংলা ট্রিবিউন: প্রযুক্তি অঙ্গন নিয়ে কী স্বপ্ন দেখেন?

রেজওয়ানা খান: আমি কোনও অ্যাওয়ার্ডের পেছনে ঘুরি না। সবসময় মনে হয়, আমি কিছু দিতে পারলে সবার জন্য ভালো হবে। কাজের মাধ্যমে যেন উদাহরণ তৈরি করে যেতে পারি- এটাই চাওয়া।

আমাদের আরও অনেক দূর যেতে হবে। সব ক্ষেত্রে উন্নত ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা গেলে বাংলাদেশকে কেউ ঠেকাতে পারবে না। এর মধ্যে কোনও ভুল করা যাবে না।

/এফএ/
সম্পর্কিত
আলাপচারিতায় ব্যারিস্টার আমীর উল ইসলাম ও মানস ঘোষমুজিবনগরে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র ও সংবাদ সংগ্রহ
করারোপ নীতি শিক্ষা সম্প্রসারণকে বাধাগ্রস্ত করবে: সলিমুল্লাহ খান
বাংলা ট্রিবিউনকে ওয়াসিকা আয়শা খান‘নারীরা যে শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ দিয়ে চলেছেন, এর নেপথ্যে শেখ হাসিনা’
সর্বশেষ খবর
চট্টগ্রামে ক্রিকেটারদের ‘ক্লোজড ডোর’ অনুশীলন
চট্টগ্রামে ক্রিকেটারদের ‘ক্লোজড ডোর’ অনুশীলন
হাসপাতালের ৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১০ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
হাসপাতালের ৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১০ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
রাঙামাটিতে ডাম্প ট্রাক খাদে পড়ে ৬ শ্রমিক নিহত
রাঙামাটিতে ডাম্প ট্রাক খাদে পড়ে ৬ শ্রমিক নিহত
আরও বিস্তৃত হবে তাপপ্রবাহ, তবে সিলেটে হতে পারে বৃষ্টি
আরও বিস্তৃত হবে তাপপ্রবাহ, তবে সিলেটে হতে পারে বৃষ্টি
সর্বাধিক পঠিত
জরিপ চলাকালীন জমির মালিকদের জানাতে হবে: ভূমিমন্ত্রী
জরিপ চলাকালীন জমির মালিকদের জানাতে হবে: ভূমিমন্ত্রী
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের গল্প বাংলাদেশের পর্দায়
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের গল্প বাংলাদেশের পর্দায়
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?