এসএসসি পরীক্ষায় যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ‘হিন্দুধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা’ বিষয়ে ফল বিভ্রাটের কথা জানিয়েছে বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ। শনিবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. শাহ আলমগীর।
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের এই পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের কয়েক শ’ শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় ‘হিন্দুধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা’ বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
তিনি আরও জানান, হিন্দুধর্ম বিষয়ে পরীক্ষার্থী ছিল প্রায় সাড়ে ৯ হাজার। এদের মধ্যে ‘খ’ সেটের প্রশ্নপত্র পায় প্রায় ১১ ‘ পরীক্ষার্থী। যার মধ্যে কয়েক শ’ পরীক্ষার্থীর ফলাফলে বিপত্তি ঘটে। নৈর্ব্যক্তিক উত্তরপত্রের ‘ওএমআর শিট’ কম্পিউটারে দেখা হয়েছে। ফলে যান্ত্রিক ত্রুটিজনিত কারণে ফলাফলে কিছুটা ভুল হয়েছে।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শাহ আলমগীর বলেন, ওই বিষয়ের সকল পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র পুনরায় মূল্যায়ন করে ফলাফল ঘোষণা করা হবে। শিক্ষার্থীরা যাতে প্রত্যাশিত নম্বর পায় সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এদিকে, শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত শিক্ষা বোর্ডে অকৃতকার্য হওয়া আড়াই শতাধিক পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র পুনর্মূল্যায়নের আবেদন জমা পড়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ জিয়াউল হক বলেন, হিন্দুধর্ম বিষয়ে সমস্যাটা হয়েছে নৈর্ব্যক্তিক অংশে। সমস্যাটা কোথায় হয়েছে সেটা এরইমধ্যে নির্ণয় করা হয়েছে। পরীক্ষার্থীরা ‘খ’ সেটের প্রশ্নের যে উত্তর দিয়েছে তা কম্পিউটারে অন্য সেটের উত্তরপত্রের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তদন্তে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন পরীক্ষকের কর্তব্যে অবহেলার তথ্যও বেরিয়ে এসেছে। দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১১ মে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার পর অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেলেও শুধু এই বিষয়ে অকৃতকার্য হয়।
তেমনই একজন শিক্ষার্থী নগরীর উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সর্বজিত ঘোষ হৃদয় (১৭)। নিজেকে অকৃতকার্য দেখে তীব্র হতাশা ও ক্ষোভ থেকে সাত তলা উঁচু এক ভবন থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে এই মেধাবী শিক্ষার্থী।
এ ঘটনার পর ‘মেধাবী শিক্ষার্থীদের হিন্দু ধর্মে অকৃতকার্য হওয়ার নেপথ্যে যান্ত্রিক ত্রুটি দায়ী কিনা- এমন প্রশ্ন রেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোয় আলোচনা ঝড় তোলে। এতেই টনক নড়ে বরিশাল শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষের।
/এইচকে/