X
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
১৫ বৈশাখ ১৪৩১

জেলহত্যা মামলা: অনেক আসামিই বিচারের মুখোমুখি হয়নি

উদিসা ইসলাম
০২ নভেম্বর ২০১৬, ২২:৫৪আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০১৬, ২৩:৪২





চার জাতীয় নেতা জেলহত্যা মামলার বিচারে দণ্ডপ্রাপ্তদের অনেক আসামিকেই দণ্ড দেওয়া সম্ভব হয়নি। তাদের অনেকেই পলাতক। চারজনের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায়ও ফাঁসির রায় দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক টানাপড়েনে ১৯৭৫ থেকে বারবারই এই মামলা হোঁচট খেলেও শেষ রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
যদিও পরিবারের সদস্যরা বিচার থেমে যাওয়া, না হওয়া নিয়ে বছরের পর বছর কাটিয়েছেন শঙ্কায়। সর্বশেষ বিচারিক আদালতের রায় পাল্টে গিয়ে ২০১৩ সালের হাইকোর্টের রায়ে ষড়যন্ত্রকারীদের বিষয়ে কোনও আদেশ না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেছিলেন তারা। তবে আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে, মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত দুই আসামিকে খালাস দিয়ে হাই কোর্ট আইন প্রয়োগে ভুল করেছিলেন বলে উল্লেখ থাকায় অনেকটাই স্বস্তি ফিরে আসে। এখন পলাতকদের দণ্ড কার্যকর করা গেলে পূর্ণাঙ্গ স্বস্তি আসত বলে মন্তব্য তাদের।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর ৩ নভেম্বর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায় হত্যা করা হয়, তার অবর্তমানে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে। ওই ঘটনায় মামলা দায়েরের ২৩ বছর পর ১৯৯৮ সালের ১৫ অক্টোবর ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
২০০৪ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. মতিউর রহমান মামলার রায় দেন। এতে রিসালদার মোসলেম উদ্দিন (পলাতক), দফাদার মারফত আলী শাহ (পলাতক) ও এল ডি দফাদার আবুল হাসেম মৃধার বিরুদ্ধে (পলাতক) মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল হলে ২০০৮ সালে হাইকোর্ট মোসলেমের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে মারফত আলী ও হাশেম মৃধাকে খালাস দেন।
এই মামলায় বিচারিক আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন সেনা কর্মকর্তা খন্দকার আবদুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম, বজলুল হুদা, এমএইচএম বি নূর চৌধুরী, একেএম মহিউদ্দিন আহমেদ, এএম রাশেদ চৌধুরী, আহমদ শরিফুল হোসেন, আবদুল মাজেদ, মো. কিসমত হোসেন, নাজমুল হোসেন আনসার, সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খানকে। ফারুক, শাহরিয়ার রশিদ, বজলুল হুদা ও একেএম মহিউদ্দিনকেও খালাস দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে বঙ্গবন্ধুকে হত্যামামলায় এই চারজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। অন্যরা পলাতক। বিচারিক আদালতের রায়ে খালাস পেয়ে গেছেন বিএনপি নেতা প্রয়াত কে এম ওবায়দুর রহমান, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, নুরুল ইসলাম মঞ্জুর, তাহেরউদ্দিন ঠাকুর, সেনা কর্মকর্তা মো. খায়রুজ্জামান ও আজিজ পাশা।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের আবেদন (লিভ টু আপিল) করা হয়। ২০১১ সালের ১১ জানুয়ারি তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল আবেদন মঞ্জুর করেন। ফাঁসির তিন আসামির মধ্যে শুধু দুজনকে খালাস দেওয়ায় হাইকোর্টের রায়ের ওই অংশটির বিরুদ্ধে আপিল করেছিল রাষ্ট্রপক্ষ।
জেলহত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হওয়ার পর মোহম্মদ কামারুজ্জামানের ছেলে খায়রুজ্জামান লিটন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন আমরা বিচারপ্রত্যাশী ছিলাম। সর্বশেষ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষ উদ্যোগে এই বিচার পাওয়া গেছে। সবার দণ্ড কার্যকর করা গেলে আমরা আরও বেশি স্বস্তি পেতাম।’
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও বর্তমান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই মামলায় ষড়যন্ত্রকারীরাসহ আসামিদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগের বিচার সম্পন্ন হয়েছে। আমাদের স্পষ্ট যুক্তি ছিল, ষড়যন্ত্রকারীদের বিচার হতে হবে। আমরা ন্যয়বিচার পেয়েছি।’ হাইকোর্টে আসামি খালাস পেয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সেটি আইনের ভুল প্রয়োগ ছিল বলে আপিলবিভাগে প্রমাণিত হয়েছে। শুধরেও নেওয়া হয়েছে।’
/এমএনএইচ/

 

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
শিক্ষা খাতে বাজেটের যথাযথ ব্যবহারের ওপর জোর দিতে হবে: শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষা খাতে বাজেটের যথাযথ ব্যবহারের ওপর জোর দিতে হবে: শিক্ষামন্ত্রী
নিগারের একার লড়াই বৃথা গেলো, হারে শুরু বাংলাদেশের
বাংলাদেশ-ভারত টি-টোয়েন্টি সিরিজনিগারের একার লড়াই বৃথা গেলো, হারে শুরু বাংলাদেশের
জ্যাকসের ব্যাটিং তাণ্ডবে গুজরাটকে উড়িয়ে দিলো বেঙ্গালুরু
জ্যাকসের ব্যাটিং তাণ্ডবে গুজরাটকে উড়িয়ে দিলো বেঙ্গালুরু
‘বিএসটিআইর হালাল সনদ নিয়ে রফতানিতে কেউ বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন না’
‘বিএসটিআইর হালাল সনদ নিয়ে রফতানিতে কেউ বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন না’
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
ইমিগ্রেশনেই খারাপ অভিজ্ঞতা বিদেশি পর্যটকদের
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
মিয়ানমারে গিয়ে সেনা ট্রেনিং নিলেন ২ রোহিঙ্গা, বাংলাদেশে ঢুকলেন বুলেট নিয়ে
মিয়ানমারে গিয়ে সেনা ট্রেনিং নিলেন ২ রোহিঙ্গা, বাংলাদেশে ঢুকলেন বুলেট নিয়ে