রাজধানীর সড়কে ৭ মার্চ আওয়ামী লীগের মিছিল থেকে যৌন নিপীড়নের একটি ঘটনার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পেয়েছে পুলিশ। তবে নিপীড়নের সঙ্গে জড়িত কেউ এখনও গ্রেফতার হয়নি। শনাক্ত করা যায়নি কারা এর সঙ্গে জড়িত। এ ঘটনায় পুলিশ এখনও কোনও আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গত বুধবারের জনসভাকে ঘিরে রাজধানীর সড়কগুলোয় ব্যাপক জনসমাগমের মধ্যে বাংলামোটরে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় একটি মামলা হয়। বৃহস্পতিবার (৮ মার্চ) রমনা থানায় ভিকটিমের বাবা মামলাটি দায়ের করেন। বর্তমানে মামলাটি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) দক্ষিণ বিভাগ তদন্ত করছে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশে (ডিবি) আসার পর তেমন অগ্রগতি হয়নি। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। তবে এখনও কেউ গ্রেফতার নেই।’
কোনও অপরাধী শনাক্ত হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না, এখনও কেউ শনাক্ত হয়নি।’ এতদিনেও অপরাধীরা গ্রেফতার না হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মামলার কোনও অগ্রগতি হয়নি, তদন্ত চলছে।’
৭ মার্চ (বুধবার) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ওই সমাবেশে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল আসে। ওইদিন বিকালে ও রাতে অনেক নারী সড়কে হয়রানি হওয়ার কথা জানায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এরপর পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য ভিকটিমদের সঙ্গে কথা বলেন। পরদিন একজন ভিকটিমের বাবা রমনা থানায় মামলা দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: জনসভার জনস্রোতে যৌন হয়রানি
ওই ভিকটিমের বাবা মামলার এজাহারে অভিযোগ করেন, তিনি ওইদিন (৭ মার্চ) রাত ৯টায় কর্মস্থল থেকে বাসায় ফিরে জানতে পারেন তার মেয়ে (ভিকটিম) তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেইলি রোড ক্যাম্পাস থেকে ফেরার সময় শান্তিনগর মোড়ে বাস না পেয়ে কাকরাইল মোড়ে হেঁটে যায়। সেখানেও বাস না পেয়ে অফিসার্স ক্লাবের আগের সিগন্যালে এসে ফার্মগেটগামী একটি বাসে ওঠে সে। বাসটি মগবাজার হয়ে বাংলামোটরের দিকে যাওয়ার সময় তীব্র যানজটে পড়ে। তখন তার মেয়ে বাস থেকে নেমে হেঁটে বাংলামোটরের দিকে যেতে লাগলে আনুমানিক আড়াইটা থেকে ৩টার মধ্যে ৮৯ নম্বর নিউ ইস্কাটন বাসার সামনের ফুটপাতে সাদা টি-শার্ট পরা আনুমানিক ২৫-৩০ বছর বয়সী অন্তত ১৫ জন ছেলে তাকে ঘিরে ধরে টিজিং করে। তাকে টানাহেঁচড়া করে স্কুল ড্রেসের জামার শোল্ডার ও দুটি বোতাম ছিঁড়ে ফেলে তারা। একজন ট্রাফিক পুলিশ তাকে উদ্ধার করে একটি বাসে তুলে দিলে সে বাসায় আসে।
এজাহারে ভিকটিমের বাবা বলেন, ‘আমার মেয়ে এ ব্যাপারে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয়। আমরা মেয়ের শ্লীলতাহানি করার কারণে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এজাহার দায়ের করলাম।’
আরও পড়ুন: ৭ মার্চের সমাবেশকে কেন্দ্র করে নারীদের শ্লীলতাহানির ভিডিও ফুটেজ হাতে এসেছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বৃহস্পতিবার বিকালে ওই ভিকটিমের বাবা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মামলা করার পর পুলিশ কয়েক দফা আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। তবে বর্তমানে কোনও অগ্রগতির কথা আমার জানা নেই।’
মামলার অগ্রগতির বিষেয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা পুলিশের দক্ষিণ বিভাগের উপ কমিশনার জামিল হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা তদন্ত করছি। মামলার অগ্রগতি হলে জানানো হবে।’