X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘রিফাত-রিশান আমাকে বাবা ডাকে, ডাহা মিথ্যা কথা’

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০১ জুলাই ২০১৯, ০১:৩২আপডেট : ০১ জুলাই ২০১৯, ০১:৫২

বরগুনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সাবেক সংসদ সদস্য দেলোয়ার হোসেন

বরগুনা সদরে প্রকাশ্য দিবালোকে শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা মামলার অন্যতম দুই আসামি রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজীর সঙ্গে গত ৪-৫ বছর আগে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করছেন বলে আবারও দাবি করেছেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সাবেক সংসদ সদস্য দেলোয়ার হোসেন। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বলা হচ্ছে, ওরা (রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজী) আমাকে বাবা বলে সম্বোধন করতো। ওরা আমাকে বাবা ডাকে—এটা ডাহা মিথ্যা কথা।’

রবিবার দিনগত রাতে বেসরকারি টিভি চ্যানেল একাত্তর টিভির ‘একাত্তর জার্নাল’ অনুষ্ঠানে ভিডিও কলে সংযুক্ত হয়ে এ দাবি করেন তিনি।

শুরুতেই শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক, হৃদয় বিদারক। বরগুনার ইতিহাসে এমন ঘটনা আর ঘটে নাই কোনোদিন; এটাই প্রথম। এ ঘটনায় আমি দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি। একইসঙ্গে খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।’

গত চার দিনেও রিফাত হত্যা মামলার প্রধান আসামিরা ধরা না পড়ার পেছনে কাকে দায়ী মনে করেন—এমন প্রশ্নের জবাবে সাবেক এই এমপি বলেন, ‘পুলিশের দোষ দেখছি না, তাদের দোষ দিতে পারি না। তারা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’

আত্মীয় হওয়ায় আপনার প্রশ্রয়ে রিফাত হত্যা মামলার প্রধান আসামিদের উত্থান হয়েছে বলে অভিযোগ আছে, একথার জবাবে তিনি বলেন, ‘ওরা (রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজী) আমার রক্তের আত্মীয় না। আমার ভাই আছে, বোন আছে। তাদের নামে কোনও অভিযোগ নেই। যাদের নামে অভিযোগ তাদের নামে মামলা আছে। আজ থেকে চার-পাঁচ বছর আগে তাদের (রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজী) সঙ্গে আমি সম্পর্ক ছিন্ন করি।’

রিফাত হত্যার পর গত ২৭ জুন হত্যাকারীদের ফাঁসি চেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর ছেলে ও জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুনাম দেবনাথ। এতে তিনি রিফাত হত্যা মামলার প্রধান দুই আসামি রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজীকে বর্তমান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের ভায়রার ছেলে উল্লেখ করে এ দুই ভাইয়ের বিভিন্ন সময়ে ঘটানো কিছু অপকর্মের চিত্র তুলে ধরেন। একইসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজীর বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে দেলোয়ার হোসেনের কাছে গেলে তিনি অভিযোগকারীদের নানাভাবে অপদস্থ করতেন। আর তার এমন প্রশ্রয়ে ওই দুই ভাই এতো বেপরোয়া হয়ে ওঠে।

এ ব্যাপারে প্রশ্ন রাখা হলে দেলোয়ার হোসেন বলেন, তারা আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। এই জায়গা থেকে তাদের ক্ষোভ আছে; যার প্রকাশ ওই স্ট্যাটাস।

৪-৫ বছর আগে তো রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজীর সঙ্গে আপনার সম্পর্ক ছিল, একথার জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি কোনও অপরাধীকে প্রশ্রয় দিই না। এই রিফাতকে কয়েকবার আইনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে সে কোর্ট থেকে খালাস পেয়েছে।’

এপর্যায়ে প্রশ্ন রাখা হয়, কোর্ট থেকে ছাড়া পাওয়ার পেছনে বরগুনার কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের হাত আছে কিনা বা কারা এদের প্রশ্রয় দিতেন?

উত্তরে দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘বরগুনায় এমন কোনও রাজনৈতিক নেতা আমি দেখি নাই, যারা এদের প্রশ্রয় দিতেন। আমিও অন্যায়কে প্রশ্রয় দিই না এবং দেবোও না।’

আপনার শহরে এমন ঘটনা ঘটলো, আপনি এর দায়-দায়িত্ব নেবেন না, এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি কেন দায়িত্ব নেবো; দায়িত্ব নেবে প্রশাসন। প্রশাসন সহযোগিতা চাইলে আমি সহযোগিতা করবো।’

বরগুনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সাবেক সংসদ সদস্য দেলোয়ার হোসেন

অভিযোগ আছে, রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজীরা আপনার বাড়িতে এসেও থাকতো—এমন প্রশ্নের জবাবে বরগুনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি চ্যালেঞ্জ করছি, কেউ যদি প্রমাণ করতে পারে যে, গত ৫-৬ বছর সময়ে সে রিফাত ফরাজীদের কখনও আমার বাসায় দেখেছে, তবে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেবো।’

প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা করেছেন; মাদকসেবীদের ধরিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে আপনার কোনও দায়িত্ব আছে বলে মনে করেন কিনা, এই প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, দায়িত্ব আছে আমার। আমার সাধ্যমতো আমি সে দায়িত্ব পালন করছি। প্রশাসনকে এ ব্যাপারে আমি সহযোগিতা করি।’

নয়ন বন্ডের সঙ্গে রিফাত ফরাজীও জেল খেটেছে, এটা তখন আপনি কী জানতেন—এ প্রশ্নের জবাবে সাবেক এই এমপি দাবি করেন, ‘নয়ন বন্ড কে, আমি চিনিই না। এখনও পর্যন্ত আমি তাকে দেখিই নাই।’

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ছবি ছড়িয়েছে; যাতে বলা হচ্ছে, গত ৩ মাস আগেও আপনার এক জনসভায় রিফাত ফরাজীকে দেখা গেছে। এ ব্যাপারে কী বলবেন?

এ কথার জবাবে দেলোয়ার হোসেন দাবি করেন, ‘দেখুন, আমার কোনও জনসভায় সে ছিল না, থাকার কথাও নয়। কেউ যদি এমন ছবি ছড়িয়ে থাকে, তবে সে তা এডিট করে আমার ছবিতে জুড়ে দিয়ে ছড়িয়েছে।’

 

আরও পড়ুন–

রিফাতের হত্যাকারীদের প্রশ্রয়দাতা কে?

/এমএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
‘ডে আফটার টুমরো’ নয়, টুডে
‘ডে আফটার টুমরো’ নয়, টুডে
জিম্মি মুক্তির বিষয়ে আন্তরিক হলেও গাজায় আগে যুদ্ধবিরতি চায় হামাস
জিম্মি মুক্তির বিষয়ে আন্তরিক হলেও গাজায় আগে যুদ্ধবিরতি চায় হামাস
হাসিনা-তাভিসিন আন্তরিক বৈঠক, থাইল্যান্ডের সঙ্গে ৫ দলিল স্বাক্ষর
হাসিনা-তাভিসিন আন্তরিক বৈঠক, থাইল্যান্ডের সঙ্গে ৫ দলিল স্বাক্ষর
৯ মে পর্যন্ত বন্ধ থাকবে চুয়েট, হলে থাকতে পারবেন শিক্ষার্থীরা
৯ মে পর্যন্ত বন্ধ থাকবে চুয়েট, হলে থাকতে পারবেন শিক্ষার্থীরা
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী