রুম থেকে ডেকে নেওয়ার পর কী ঘটেছিল তা কেবল আবরার ফাহাদের জানা। আবরার নেই তবে রুম থেকে বের হওয়ার আগে রেখে যাওয়া চেয়ার-টেবিল,বিছানা, কাঁথা সেভাবেই পড়ে আছে। ছেড়ে যাওয়া এলোমেলো জিনিসই তার সাক্ষী। আবরারের শরীরে বিভিন্ন জায়গা থেতলানো, কালসিটে পড়া আঘাতের চিহ্ন। কী নিদারুণভাবে পেটানো হলে একজনের দেহ এভাবে ক্ষতবিক্ষত হয়। আর হলের মধ্যে এমন ঘটনা দেখে অনেকেই বিস্মিত, ভীত। মন ঘৃণায় ভরে গেলেও প্রকাশ করতে পারছেন না। চিৎকার করে কাঁদছেন কেউ কেউ, তারপরও আড়াল খুঁজছেন।
আবরারের রুমের সামনের করিডোর এখন ফাঁকা। করিডোরটি ক্রাইমসিনের দখলে। হলুদ বারের ওপারে আবরারের নিভে যাওয়া জীবনের চিহ্ন আর এপারে তার শূন্যতা।
আবরার ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। সহপাঠীরা জানান, হলের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে কয়েকজন ছাত্র রবিবার রাত সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে ৮টার দিকে তাকে ডেকে নিয়ে যায়। রবিবার গভীর রাতে হলের সিঁড়িতে মেলে তার লাশ। এরপর থেকেই সহপাঠীরা সংগঠিত হচ্ছে আবরার হত্যার প্রতিবাদ জানাতে। অনেকে হত্যার বিচার চেয়ে ফেসবুকে সরব হয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সহপাঠী বলেন, ‘ফেসবুকে স্ট্যাটাসের কারণে যেখানে জীবন যায় সেখানে মুখ খুলবো কোন সাহসে।’
একই করিডরের অন্য রুমের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘কাল (রবিবার) ওকে ডেকে নিয়ে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরে এসে তার পোশাক নিয়ে গেছে রুম থেকে দু’জন। তখনই বুঝেছি বিপদ কিছু ঘটেছে। কিন্তু কাকে বলবো এসব আমরা?’
সকালে আবরারের লাশ পাওয়ার পর পুলিশ হত্যার আসল কারণ বের করতে তদন্ত শুরু করেছে। জড়িতদের খুঁজে বের করতে শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তে পিটিয়ে হত্যার প্রমাণ পেয়েছে বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন:
‘ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমার ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করেছে’
আবরারকে পিটিয়ে হত্যার প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ