X
মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫
১০ আষাঢ় ১৪৩২

সিনেমা: হাদ আছে হু আছে, দুধ-বাটি নাই!

মাহমুদ মানজুর
মাহমুদ মানজুর
২৪ জুন ২০২৫, ১৪:০০আপডেট : ২৪ জুন ২০২৫, ১৭:৫৩

হাদ আছে হু আছে, দুধ-বাটি নাই! নোয়াখালী অঞ্চলের এমন একটি প্রাচীন উক্তি যেন ফিরে এলো ঢাকাই চলচ্চিত্রে। একটা সময় দর্শক ছিল, প্রেক্ষাগৃহ ছিল; কিন্তু সিনেমা ডুবে ছিল অশ্লীলতায়। হারালো সিনেমার প্রাণ, মধ্যবিত্ত দর্শক। ঘুরপাক খেলো নিম্নবিত্তে। সিনেমাও নামতে থাকলো নিচের দিকে। এটা শূন্য দশকের গল্প। ৯০ দশকের শেষ পর্যন্ত দেশে সিনেমা হলের সংখ্যা ছিল দেড় হাজারের মতো। ধারাবাহিক সিনেমাহীনতায় সেটি এখন নেমে এসেছে মাত্র ৫০টিতে, মতান্তরে ৪০-এর ঘরে!

একটি দেশের সবচেয়ে বড় শৈল্পিক ক্যানভাস ধরা হয় সিনেমাকে, সেটিতে যে দুর্ভিক্ষ লেগে আছে; তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।

শূন্য দশকের শেষের দিকে অশ্লীলতার ঘেরাটোপ কাটিয়ে ভালো সিনেমায় ইন্ডাস্ট্রি ফিরলেও বড় ক্রাইসিস তৈরি হলো প্রেক্ষাগৃহে দর্শক না ফেরার অভিযোগ। কারণ ততদিনে, সিনেমার মূল দর্শক হল থেকে সরে ডিশ এন্টেনায় মন বসিয়েছে। রমরমিয়ে চলেছে টিভিতে পুরনো সিনেমার জমাটি বাণিজ্য। সিনেমা হলে মাছি উড়লেও পাড়ার চায়ের দোকানের টিভি ঘিরে ছিল পুরনো সিনেমা দেখার উপচে পড়া ভিড়।

মূলত তখনই ক্রমশ সিনেমা হলগুলো বন্ধ হতে শুরু করলো। হল মালিকদের অভিযোগ ছিল দর্শক খরা। দর্শকদের অভিযোগ, সিনেমার মান ও হলের পরিবেশ। সময়কাল ২০১০ থেকে প্রায় ২০২০।

বিস্ময়কর হলেও সত্যি, একটু একটু করে গত ক’বছরে বাংলাদেশের সিনেমা মানের বিচারে ঘুরে দাঁড়ালেও ইন্ডাস্ট্রি হিসেবে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে এখনও। নজির টানতে বেশি দূরে যেতে হবে না। গত দুই ঈদে (রোজা ও কোরবানি) শেষ দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে জমজমাট ও মানসম্মত একঝাঁক সিনেমা মুক্তির উৎসব দেখা গেছে। প্রেক্ষাগৃহেও টানা তিন থেকে ৬ সপ্তাহ দর্শক ফিরেছে। বেশিরভাগ ছবিই হাউজফুল গিয়েছে। সবার মুখেই এক রকমের স্বস্তি ফিরেছে।

হতাশার তথ্য, সে অর্থে একটি সিনেমাও তার লগ্নি তুলে নিতে পারেনি। কারণ, রোল নম্বর এক হলেই কী! ক্লাসে শিক্ষার্থীই তো মোটে তিন জন! ঢালিউডে এখন মানসম্মত সিনেমা হচ্ছে, দর্শকও হলে ফিরেছে, কিন্তু সেগুলো প্রদর্শনের জন্য পর্যাপ্ত সিনেমা হল আর নেই। কোরবানিতে মুক্তি পাওয়া ছয় সিনেমার পোস্টার চলচ্চিত্র পরিবেশক সমিতির তথ্যমতে, শুধু ঈদ উৎসবে টেনে টুনে শ’দেড়েক প্রেক্ষাগৃহের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়, মতান্তরে ১৩০-৪০। এর বাইরে সারা বছর সচল থাকে ৫০ থেকে ৫৫টি হল, মতান্তরে ৩৫-৪০টি। যার অর্ধেকে চালানো হয় পুরনো সিনেমা বা কাটপিস। সেসব হলের পরিবেশ ও প্রজেকশন থাকে মানহীন। এর বাইরে ঈদকেন্দ্রিক যে একশ’টি হল পাওয়া যায়, তার প্রায় সবগুলোই সারা বছর থাকে গোডাউন কিংবা অন্য কাজে নিয়োজিত। শুধু ঈদ এলে দুই সপ্তাহের জন্য সেটিকে সিনেমা হলে রূপান্তর ঘটানো হয়। এসব হলে সিনেমা দেখার চেয়ে না দেখা প্রায় সমান, অভিযোগ প্রায় সব দর্শক-নির্মাতার।

এমন পরিস্থিতিতে, সিনেমাওয়ালা আর দর্শকদের একটাই আক্ষেপ, ‘হাদ (সাধ) আছে, হু (ফুঁ) আছে, দুধ-বাটি নাই’। মানে হলো, গরম দুধ ফুঁ দিয়ে জুড়িয়ে খাওয়ার সাধ আছে, কিন্তু খাওয়ার জন্য যে বাটি বা গ্লাস দরকার, সেটি নেই! যার জন্য দুধ খাওয়া হচ্ছে না। বাংলাদেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির অবস্থাও তাই, সিনেমা আছে দর্শকও আছে, শুধু সিনেমা হল আর নেই।

তার মানে কি আপাতত অপরাধী হল মালিকরাই? যুক্তি আছে এখানেও। বেশিরভাগ পরিবেশক ও হল মালিকের বয়ান এমন, ঈদ ছাড়া ভালো কোনও সিনেমা সারা বছর মুক্তি পায় না বললেই চলে। এমন পরিস্থিতিতে, ঈদের বাইরে গোটা বছর একটা সিনেমা হল চালিয়ে রাখা আত্মহত্যার শামিল। সংশ্লিষ্টরা আরও জানিয়েছেন, বছরের পর বছর গচ্ছা দিয়ে হল খোলা রাখার কারণেই বর্তমান বাংলাদেশ এখন হলশূন্যের পথে হাঁটছে। এ থেকে উত্তরণের জন্য দরকার বছরজুড়ে ভালো সিনেমা।

কিন্তু সেটি হচ্ছে না কেন? কেন প্রতি ঈদেই বছরের সকল স্তরের সিনেমা মুক্তির হিড়িক পড়ে। তাই নয়, ভয়ংকর তথ্য এই- ঈদের বাজারে বড় ছবির দাপটে ছোট ছোট ছবি মাল্টিপ্লেক্সের অন্তত দিনে একটি শো বের করতে পারলেও সেটি মুক্তি দিচ্ছে! তবু ঈদের বাইরে যেতে প্রস্তুত নন। এটিও বছরজুড়ে হলগুলোয় সিনেমা তথা দর্শকশূন্যতার অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন বেশিরভাগ হল সংশ্লিষ্টরা। জাহিদ হাসান অভি সময়ের অন্যতম সফল পরিবেশক ও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান দ্য অভি কথাচিত্রের প্রধান জাহিদ হাসান অভি বাংলা ট্রিবিউনকে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘ঈদেই কেন? এই প্রশ্নটা আমারও। আগে সারা বছর ভালো-মন্দ আর ছোট-বড় সিনেমা মুক্তি পেতো। আর ঈদের জন্য মূলত শাকিব খানের একটা সিনেমা ফিক্স থাকতো। তখন আরেকটা ট্যাবু ছিল, ঈদে শাকিব খানের ছবি ছাড়া অন্য সিনেমা চলে না। কিন্তু ‘পরাণ’ সিনেমা সেই ট্যাবু ভেঙে দেয়। প্রমাণ হয়, ঈদ উৎসবে শাকিব খান ছাড়াও সিনেমা হিট করা সম্ভব। মূলত এরপর থেকেই ঈদে শাকিব খানের সঙ্গে অন্য সিনেমাগুলোও মুক্তির জোয়ারে শামিল হয়। এটাও সত্যি, ঈদে দর্শকরা সিনেমা হলে প্রচুর আসে। ফলে ছবির প্রযোজকরা খানিকটা রিস্ক ফ্রি থাকেন। ঈদের সময় প্রচারণাও ভালো পাওয়া যায়। দর্শকরা হলে আসার জন্য লম্বা সময় পায়। তবে আমি মনে করি এই ট্রেন্ড ভাঙা উচিত। হল বাঁচাতে হলে ১২ মাস আমাদের সিনেমা রিলিজ দিতে হবে। ঈদের বাইরেও আমাদের অসংখ্য সুপারহিট ছবি রয়েছে। যেমন ‘হাওয়া’, ‘ঢাকা অ্যাটাক’, ‘আয়নাবাজি’, ‘মনপুরা’। আমার বিশ্বাস, ঈদে সিনেমা মুক্তির যে ট্রেন্ড সেটি আরও বছর দুয়েক থাকবে। এর মধ্যে আমাদের হল সংখ্যা ও মান বাড়াতে হবে, যদি শিল্পটা টেকাতে হয়।’’

২০ কোটি মানুষের দেশে সিনেমা হলের সংখ্যা গত তিন দশকে কমেছে চক্রবৃদ্ধি হারে। দেড় হাজার হল থেকে সেটি নেমে এসেছে ৫০-এ। এর মধ্যে প্রজেকশন ও পরিবেশ বিবেচনায় ভালো হলের সংখ্যা ১০টির বেশি হবে না। আরও ভয়ংকর তথ্য, দেশে অন্তত ৩২টি জেলা শহরে এখন আর কোনও সিনেমা হল নেই। অন্যদিকে ২২টি জেলার কোথাও একটি হলও নেই! এসব জেলায় গড়ে ন্যূনতম ১০টি করে সিনেমা হল ছিল ১০ বছর আগেও। এমন তথ্য মিলেছে প্রযোজক পরিবেশক সমিতির বরাতে।    

সদ্য শেষ হওয়া ঈদুল আজহায় মুক্তি পেয়েছে ছয়টি সিনেমা- ‘তাণ্ডব’, ‘ইনসাফ’, ‘নীলচক্র’, ‘উৎসব’, ‘এশা মার্ডার: কর্মফল’ এবং ‘টগর’। প্রতিটি ছবিই প্রশংসা কুড়িয়েছে। কিন্তু হল সংকটে বেশিরভাগ ছবিই পড়েছে মুখ থুবড়ে। কারণ, চালু থাকা দেড়শত হলের মধ্যে ‘তাণ্ডব’ একাই নিয়েছে ১৩২টি! আর একই ঈদের দ্বিতীয় আলোচিত সিনেমা ‘ইনসাফ’ পেয়েছে মাত্র ১৬টি প্রেক্ষাগৃহ। এর মধ্যে ৯টি মাল্টিপ্লেক্স, ৭টি সিঙ্গেল স্ক্রিন। বাকি চার সিনেমার অবস্থা কতটা নাজুক, সেটি ভাবার অবকাশ নেই।

অনেকেরই মতামত, হল সংখ্যা যদি দ্বিগুণ হতো, তবে প্রতিটি ছবিই তার লগ্নি তুলে ঘরে ফিরতে পারতো। কারণ, সিনেমা দেখার দর্শক তৈরি হলেও সেটি দেখার সুযোগ পায়নি দেশের বেশিরভাগ দর্শক।

প্রসঙ্গক্রমে ‘ইনসাফ’ নির্মাতা সঞ্জয় সমদ্দার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, “আজ যদি দেশে ৩০০টি হল থাকতো, তাহলে চিত্রটা আরও দারুণ হতে পারতো। তবে এটাও ঠিক, শুধু সংখ্যা গুনলেই হবে না। ধরেন দেড়শ’ হলের মধ্যে যদি ১০০টিরই প্রজেকশন কোয়ালিটি খারাপ থাকে, তাহলে সেই হল থাকা না থাকা প্রায় সমান। এতে সিনেমা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, দর্শকরাও আশাহত হয়। আমার অভিজ্ঞতায়, দেশে যে হলগুলো আছে তার বেশির ভাগেরই প্রজেকশন মানসম্পন্ন নয়। এখন সেটার উন্নয়ন কেমন করে ঘটবে, এ বিষয়ে আমার বলার সুযোগ বা অভিজ্ঞতা খুবই কম। নিশ্চয়ই হল মালিকদেরও প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। কেউ তো শখ করে নিজের প্রতিষ্ঠানকে অচল রাখবে না।” সঞ্জয় সমদ্দার খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশে ৯টি মাল্টিপ্লেক্স (একাধিক স্ক্রিন) আর ১৫টি সিনেপ্লেক্স (সিঙ্গেল স্ক্রিন) রয়েছে। মূলত এগুলোই মানসম্মত হল। বাকিগুলোর অবস্থা প্রায় নড়বড়। পর্দা ঠিক আছে তো, সাউন্ড নেই, সাউন্ড ঠিক আছে তো সিট নেই, সিট ঠিক আছে তো এসি নেই, এসি ঠিক আছে তো সিনেমা-ই নেই। চলছে এভাবেই।

তবে কী চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নের মূল অন্তরায় দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা পুরনো প্রেক্ষাগৃহগুলো? মুক্তির পথ কী তবে দেশজুড়ে মাল্টিপ্লেক্স কালচার? কারণ নির্মাতা-প্রযোজকরা দিনশেষে তার সিনেমাটি মাল্টিপ্লেক্সে স্থান দিতে চায়। এর জন্য সরকারি পর্যায়ের লবিংয়ের কথাও শোনা যায় ঈদে-চাঁদে। গত সরকারের আমলে জেলায় জেলায় মাল্টিপ্লেক্স গঠন ও সিনেমা হল সংস্কারের জন্য হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের খবরও মিলেছে। সেটিও সিনেমা শিল্পের উন্নয়নে কোনও কাজে লাগার নজির মেলেনি এখনও। তবু আশার কথা, বেসরকারি উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে ধীরলয়ে হলেও কিছু সিনেপ্লেক্স গড়ে উঠছে। শাখা বাড়ানোর প্রক্রিয়ায় আছে মাল্টিপ্লেক্সগুলো। যদিও সেটি নিতান্তই কম। খড়ের গাদায় সূচ খোঁজার মতো। তবে কী জেলায় জেলায় এখনও টিকে থাকা স্মৃতিকাতর সিনেমা হলগুলো ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর পথেই হাঁটবে?  

জবাবে তরুণ পরিবেশক জাহিদ হাসান অভি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দেখুন সিনেমা হল বাড়ানোর যে প্রক্রিয়া সেটি বেশ জটিল। এটা তো বাস নয়, কিনলাম আর অনুমোদন নিয়ে সড়কে ছেড়ে দিলাম। একটি সিনেমা হল গড়ার ক্ষেত্রে অনেক হিসাব কষতে হয়। তাও আবার সেটি যদি হয় একেবারে ব্যক্তি উদ্যোগে, তাহলে আরও কঠিন। সরকারের পক্ষ থেকে আমরা বরাবরই হাজার হাজার কোটি টাকার গল্প শুনি। সেগুলো গল্পই থেকে যায়। যে কোনও ইন্ডাস্ট্রি দাঁড়াতে হলে সরকারি ব্যাকআপটা জরুরি। যেটা আমাদের এখানে নেই বললেই চলে। ধরুন ২০ কোটি টাকা দামের সম্পদ বন্ধক দিয়ে কেউ ৫ কোটি টাকা লোন নেবে না।’

এ তো গেলো আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। কিন্তু প্রশ্ন হলো আধুনিক মাল্টি ও সিনেপ্লেক্সের সময়ে এখনও দেশজুড়ে টিকে থাকা পুরনো সিনেমা হলগুলোকে টিকিয়ে রাখার বা থাকার কী কোনও প্রয়োজনীয়তা আছে? যার বেশিরভাগই সিনেমা প্রদর্শনের যোগ্যতা হারিয়েছে। এমন প্রশ্নের জবাবে বেশিরভাগ সিনেমা সংশ্লিষ্টরাই জানিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। প্রায় সবাই আশা করছেন, হলের পর্দা ও পরিবেশটা যেন মন্দের ভালো হলেও হয়। যেটা বেশিরভাগ সিঙ্গেল হলের নেই। যার ফলে জেলা-উপজেলা শহরের বেশিরভাগ মধ্যবিত্ত এখনও সিনেমা হলের বাইরেই রয়ে গেছেন। যে অঙ্কটা বিশাল।  

এমন পরিস্থিতিতে অন্যদের চেয়ে খানিকটা ব্যতিক্রম দুটি পয়েন্ট দিয়েছেন পরিবেশক অভি। তিনি বলেন, ‘সিনেপ্লেক্স বা মাল্টিপ্লেক্স নিয়ে দর্শক ও নির্মাতা-প্রযোজকের আগ্রহ আছে এখন। সন্দেহ নেই। কারণ একটাই- পরিবেশ। কিন্তু এটাও আমাদের ভাবতে হবে, সিনেপ্লেক্সের বাইরে এখনও সিনেমার বেশিরভাগ দর্শক। আমি ঢাকা-চট্টগ্রামের দর্শকদের কথাই বলছি। এই দুই শহরের অধিকাংশ মানুষের সামর্থ্য নেই যখন তখন মাল্টিপ্লেক্সে টিকিট কেটে সিনেমা দেখার। সাধারণ প্রেক্ষাগৃহে টিকিটের দাম এক থেকে দেড়শ টাকা। আর মাল্টিপ্লেক্সে সেটা শুধু সাড়ে তিনশ’ থেকে। তাহলে এক থেকে দেড়শ টাকার যে বিপুল দর্শক আমার, তাদের জন্য হলেও সিঙ্গেল স্ক্রিনের সিনেমাহলগুলোকে বাঁচিয়ে রাখা প্রয়োজন। সঙ্গে এটাও প্রয়োজন, মাল্টিপ্লেক্সগুলো মর্নিং শোয়ের টিকিট হাফ করে দেওয়া। সেটি শিক্ষার্থীদের জন্য হতে পারে। যে ছেলে বা মেয়েটা ঢাকায় কষ্ট করে মেসে বা হলে থেকে পড়াশোনা করছে, তারও তো সিনেমা দেখার অধিকার আছে। তার জন্য মাল্টিপ্লেক্সগুলো এটুকু ছাড়া দিতে পারে। পুরো শিল্পটাকে বাঁচাতে হলে আমাদের এসব নিয়ে আরও ভাবতে হবে।’ ছন্দ সিনেমা হলের প্রবেশ পথ দেশে টিকে থাকা একক পর্দার সিনেমা হলগুলোর অবস্থা কতটা ভয়ংকর, সেটি দেখতে বা বুঝতে টেকনাফ কিংবা তেঁতুলিয়া যাওয়ার দরকার পড়ে না। খোদ রাজধানীর বুকেই ধুঁকে ধুঁকে টিকে আছে বেশিরভাগ ঐতিহ্যবাহী সিনেমা হল। শহরের সবচেয়ে সচল প্রেক্ষাগৃহ ‘বলাকা’ ও ‘বিনাকা’ বন্ধ হয়েছে বেশ আগেই, খুব নীরবে। শহরের একেবারে প্রাণকেন্দ্র ফার্মগেটের বুকে অবস্থিত আরেক যমজ সিনেমা হল ‘ছন্দ’ ও ‘আনন্দ’র পরিস্থিতি লিখে বর্ণনা করার মতো নয়। হল দুটি নাম নিয়ে টিকে থাকলেও মানের বিচারে সেটি পরিণত হয়েছে ডাস্টবিনে।

‘আনন্দ’র মোট আসন ১২০০। যার অর্ধেকের বেশি আসন বসার অযোগ্য। নামে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, ভেতরে ঝুলছে ফ্যান, যার বেশিরভাগ অকেজো। পর্দা ও সাউন্ডের অবস্থা ৯০ দশকের চেয়েও খারাপ। তবে টিকিট এখনও সাশ্রয়ী, মাত্র ১০০ টাকা দিলেই সিনেমা দেখার সুযোগ মেলে! যদিও একটু বৃষ্টি হলেই হলের ভেতরে পর্দার সামনে জমে পানি।

হলটির টিকিট কাউন্টারে কর্মরত কালাম বলেন, ‘কোনও সংস্কার নাই। যেমন ছিল তেমনই পড়ে আছে। বিল্ডিংয়ের বয়স হয়েছে। বৃষ্টি হলে নিচ থেকে পানি উঠে। দেখার কেউ নেই।’ কেন নেই, সে বিষয়ে আর আগাননি কালাম। ভয়, চাকরি হারানোর।

রাজধানীর আরেক অভিজাত হল ‘মধুমিতা’ বন্ধের গুঞ্জন রয়েছে ক’বছর ধরে। এই ঈদেও সেই গুঞ্জন মাথাচাড়া দিয়েছে। হলটি প্রায় সময় বন্ধ থাকে আবার খুলেও যায়!

যদিও হলের মালিক প্রযোজক-পরিবেশক নেতা ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ রবিবার (২২ জুন) বিষয়টি নাকচ করে দেন। বলেন, ‘প্রেক্ষাগৃহ একেবারে বন্ধ করার কথা ভাবিনি কখনও। মাঝে মাঝে কিছু দিনের জন্য বন্ধ থেকেছে বিভিন্ন কারণে। যেমন গত এক সপ্তাহ ধরে এসি নষ্ট হয়ে আছে। অনেকে এটা নিয়ে অভিযোগ করেছেন। সেটা ঠিক করার কাজ চলছে। আগামী কয়েক দিনে ঠিক হয়ে যাবে আশা করছি।’

হলটি যে তিনি পারিবারিক ঐতিহ্য রক্ষা আর সিনেমার প্রতি অগাধ টানের খাতিরে টিকিয়ে রেখেছেন, সেটি বলে আসছেন গত দশ বছর ধরেই। প্রদর্শক সমিতির সাবেক এই সভাপতির মতে, ‘ঈদের বাইরে হল চালানোর খরচও ওঠে না টিকিট বেচে। এভাবে হল বাঁচবে কেমন করে?’

তার মতে, সিনেমার দর্শক ধরে রাখতে হলে সিঙ্গেল স্ক্রিন বাঁচাতে হবে। আর সিঙ্গেল স্ক্রিন বাঁচাতে হলে গোটা দুনিয়ার সিনেমা লাগবে। শুধু দেশের সিনেমায় একটি হল কনটিনিউ করা সম্ভব নয়। সাফটা চুক্তির মাধ্যমে দেশে বিদেশি তথা বলিউডের সিনেমা আমদানির লক্ষ্যে লম্বা সময় ধরে বক্তব্য দিয়ে আসছেন এই হল মালিক তথা পরিবেশক নেতা। এর মধ্যে কয়েকটি বলিউডের সিনেমা এলেও সেই পথ নানা কারণে থমকে আছে এখনও।

এ প্রসঙ্গে নওশাদের পুরনো বক্তব্যে বেশ স্পষ্ট, ‘‌আমি অনেক আগে থেকেই বলছি, দেশের সিঙ্গেল স্ক্রিন বাঁচাতে হলে কেবল হিন্দি সিনেমা নয়, বিশ্বের সব দেশের ভালো সিনেমাই আসা উচিত। হলিউডের সিনেমা যদি আসতে পারে, তাহলে অন্যগুলো কেন নয়? মাল্টিপ্লেক্সের অবস্থার উন্নতি হচ্ছে, কারণ হলিউড সিনেমা তাদের বিকল্প। আমাদের দেশে তাই মাল্টিপ্লেক্সে লোকসান গুনতে হচ্ছে না। অন্যদিকে সিঙ্গেল স্ক্রিন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’ ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ এই হল মালিক আরও বলেন, ‘সিনেমা দেখানোই আমাদের কাজ। যতো সিনেমা দেখাবো, ততোই লাভ। কিন্তু একটা সিনেমার জন্য তো হল খুলবো না। নিয়মিত সিনেমা যদি না থাকে, তবে একটা সিনেমার জন্য হল খুলে পরের সপ্তাহে আবার বন্ধ করতে হবে। এভাবে তো হয় না। আর দর্শক যদি না আসে, তাহলে আমাদের লোকসান গুনতে হয়। এভাবে কতকাল আর।’   

বলা দরকার, এক দশক আগেও ৪০টির বেশি সিনেমা হল ছিল রাজধানীতে। স্টার সিনেপ্লেক্স ও ব্লকবাস্টারের বাইরে বর্তমানে সেই সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে ৭টিতে। এগুলো হলো আনন্দ, ছন্দ, আজাদ, শ্যামলী, চিত্রামহল, সৈনিক ক্লাব ও নিউ গুলশান। যে চিত্রটি দেশজুড়ে আরও ভয়াবহ।

সংশ্লিষ্টদের মতে, দেশজুড়ে হল বাঁচানো ও বাড়ানোর জন্য সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার বিকল্প নেই। সেটির জন্য প্রয়োজন সম্মিলিত প্রয়াস ও সিনেমার প্রতি আন্তরিকতা। তাদের অভিযোগ, অতীতেও দফায় দফায় এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে বচসা হয়েছে। বাজেট হয়েছে। কিন্তু সমন্বয়হীনতা আর আন্তরিকতার অভাবে সব উদ্যোগই ভেস্তে গেছে।  

এমন হতাশার বিপরীতে গত এক দশক ধরে সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে একমাত্র আশার আলো হয়ে দাঁড়িয়ে আছে মাল্টিপ্লেক্স চেইন স্টার সিনেপ্লেক্স। প্রতিষ্ঠানটি ঢাকায় ছয়টি ও চট্টগ্রামে একটি ব্রাঞ্চ অপারেট করছে সফলতার সঙ্গে। দ্রুতই দুটি ব্রাঞ্চ খুলতে যাচ্ছে বগুড়া ও নারায়ণগঞ্জে। দেশের প্রেক্ষাগৃহের সার্বিক অবস্থা প্রসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ বিপণন কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমার অভিজ্ঞতা বলে, মানুষ আসলে ভালো সিনেমা দেখতে চায়। সেটি দেখার জন্য একটা কমফোর্ট জোন চায়। এটুকু এনশিওর করতে পারলে প্রেক্ষাগৃহে দর্শক আসবেই। শুরু থেকে আমরা সেই চেষ্টাটি চালিয়ে যাচ্ছি। এটা ঠিক, ভালো সিনেমা না পেলে কিংবা করোনার মতো মহামারি এলে আমাদের সারভাইব করা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। কারণ, এটা একটা হিউজ ইনভেস্টমেন্ট ও মেনটেনেন্সের বিষয়। ফলে আমি মনে করি, সিনেমা হল আধুনিক করলেই হবে না, আধুনিক সিনেমার ধারাবাহিকতাও থাকতে হবে। যেমন রাজনৈতিক অস্থিরতার পর গত রোজার ঈদ থেকে এখন পর্যন্ত আমাদের সেল খুবই ভালো। এই ধারাটি অব্যাহত থাকলে পুরো ইন্ডাস্ট্রি বদলে যেতে খুব বেশি সময় লাগবে না। আই প্রমিজ। এখানে ব্লেমগেমের সুযোগ নেই। নির্মাতা, হল মালিক, প্রযোজক, দর্শক, পরিবেশক- সবাই কিন্তু এক সুতোয় গাঁথা। মালার মতো। সুতোটা হচ্ছে সিনেমা। এই সুতোটাকে আমাদের সবাই মিলে মজবুত ও ধারাবাহিক করতে হবে। আমি বুঝি এটুকু।’ মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশের সিনেমা ও হল প্রসঙ্গে দাফতরিক কোনও পূর্ণাঙ্গ তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ২০২১ সালে ভয়েস অব আমেরিকা অবলম্বনে বাংলা মুভি ডাটাবেজ (বিএমডিবি) থেকে কিছু তথ্য মিলেছে।

দেশে ১৯৯৪ সালে সিনেমা হলের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৪৩৫টি। বর্তমানে চালু ৬০টি সিনেমা হল। যে কোনও সময়ে আরও ১০টি বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

ঢাকার ঐতিহ্যবাহী হলগুলোর মধ্যে গুলিস্তান ভাঙা হয় ১৯৯৬ সালের পর। ১২ তলা ভবনের বাণিজ্যিক স্থাপনায় শপিং মলের সঙ্গে হল করারও কথা ছিল। কিন্তু তা শেষ পর্যন্ত হয়নি। এরপর ঢাকার রূপমহল, তাজমহল, বিউটি, মুন, মল্লিকা, জ্যোতি, লায়ন, শাবিস্তান, গ্যারিসন, পর্বত, সাগরিকা, মেঘনা, যমুনা, ডায়না, আগমন, অতিথি, পূর্ণিমা, রাজমণি, বলাকা, বিনাকা ভেঙে ফেলা হয়েছে। ঢাকা সিটিতে সিনেমা হল ছিল ৪৪টি। এখন আছে ২০টি। ঢাকা জেলার মফস্বল এলাকার ১৭টি হলের মধ্যে এখন ৫টি আছে। নারায়ণগঞ্জে ৩৪টি সিনেমা হলের এখন আছে ১২টি। গাজীপুরের ১৯টি হলের মাত্র ৭টি আছে। মুন্সীগঞ্জের ১৬টি হলের ৪টি টিকে আছে। মানিকগঞ্জ জেলায় ১৭টি হলের ১টি মাত্র আছে। নরসিংদী জেলার মফস্বল এলাকায় এখন আর কোনও সিনেমা হল নেই। জেলা শহরের ২১টি সিনেমা হলের মধ্যে আছে ৪টি।

ময়মনসিংহকে একসময় বলা হতো সংস্কৃতির শহর। সেই জেলার ৪১টি হলের ১০টি টিকে আছে। কিশোরগঞ্জের অবস্থা আরও ভয়াবহ। ২২ হলের একটি কোনোমতে আছে। সেটিও যেকোনও সময়ে বন্ধ হতে পারে। টাঙ্গাইলের ৪৭টি হলের ১০টি টিকে আছে। শেরপুরের ১৭টি সিনেমা হলের মধ্যে আছে ৬টি। জামালপুর জেলায় ১৪টি হলের মধ্যে ৩টি আছে।

ফরিদপুর জেলার শহর ও মফস্বলের বিভিন্ন এলাকা মিলিয়ে ১৭টির মধ্যে আছে মাত্র ২টি।গোপালগঞ্জ ৬টি হলের একটি টিকে আছে। রাজবাড়ী জেলার সব সিনেমা হল এখন বন্ধ। একসময় এই জেলায় ছিল ৮টি হল। এখন একটিও নেই। এর চেয়েও খারাপ চিত্র শরীয়তপুরের। এখানে ৯টি হলের সবই বন্ধ। মাদারীপুর জেলায় ৯টির মধ্যে সবই বন্ধ। তবে ইউনাইটেড ও ইউনিভার্সেল টকিজ নামে দুটি হল অনিয়মিতভাবে চলে।

চট্টগ্রাম শহরে একসময় সিনেমা হলের ঐতিহ্য ছিল। সিটি ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় ৩৬টি হল ছিল। আর এখন আছে মাত্র ৪টি। এই ৪টি হচ্ছে আলমাস, দিনার, সিনেমা প্যালেস, সুগন্ধা। জেলা শহরের পর্যটন শহর কক্সবাজারের ৪টি হলের একটিও নেই। রাঙামাটির ৩টি হলের সবই বন্ধ। কাপ্তাইতে তিনটি হলও বন্ধ। রামগড় ৫টি হলের সব বন্ধ হয়ে গেছে। খাগড়াছড়ি ৭টি হলের সবই বন্ধ। একই অবস্থা বান্দরবানের। ৩টির সবই বন্ধ।

কাজী নজরুল ও শচিন দেব বর্মণের স্মৃতির কুমিল্লা শহর ও জেলার মফস্বল ২৩টি হলের মাত্র ৩টি টিকে আছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ১৩টি হলের দুটি আছে। চাঁদপুর শহর ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ১৬টি হলের মধ্যে ৪টি আছে। নোয়াখালী ১১টি হলের দুটি আছে চৌমুহনী ও মাইজদীতে।

লক্ষ্মীপুর জেলা শহরের দুটির একটিও নেই। জেলার অন্য এলাকার ৯টির মধ্যে চর আলেকজান্ডারে মাত্র দুটি আছে।
দেশের প্রথম ও জনপ্রিয় মাল্টিপ্লেক্স স্টার সিনেপ্লেক্স-এর ভেতরের পরিবেশ সিলেট শহরের ৮টি হলের একটি আছে। সারা জেলার ১৪টির একটিও নেই। হাছন রাজার স্মৃতির সুনামগঞ্জ শহরের ৩টির একটিও নেই। জেলার বাকি ৬টিও বন্ধ। মৌলভীবাজারের ১৮টির একটি আছে কোনমতে। হবিগঞ্জ ৯টি হলের তিনটি আছে। ফেনীর ৫টির মধ্যে দুটি আছে। খুলনা শহরের ১৪টির মধ্যে আছে ৫টি। সারা জেলায় ১৭টির একটিও নেই। বাগেরহাট এখন সিনেমা হলশূন্য জেলা। ১১ হলের সবই বন্ধ। সাতক্ষীরা শহরের ৩টির মধ্যে দুটি আছে। শহরের বাইরের বিভিন্ন অঞ্চলের ১২টির সব বন্ধ। ঐতিহ্যবাহী মনিহার সিনেমা হল ছাড়া যশোর শহরের বাকি ৫টি বন্ধ। সারা জেলার ১৮টির মধ্যে দুটি আছে। ঝিনাইদহের ১৩টির মধ্যে ১টি আছে। নড়াইল জেলার ৫টি হলই বন্ধ। মাগুরা জেলার ৬টি হলের মধ্যে আছে দুটি। কুষ্টিয়ার ২০টি হলের মধ্যে দুটি আছে। চুয়াডাঙ্গায় ১১ হলের মধ্যে শহরের একটি কোনভাবে আছে। বাকি সব বন্ধ।

মেহেরপুর জেলা এখন সিনেমা হলবিহীন। ৭টির সবই বন্ধ। বরিশালের ১৬টি হলের একটি সিটিতে আছে। কিন্তু অবস্থা ভালো নয়। ঝালকাঠি জেলা শহরের ৩টি হলের সবই বন্ধ। পিরোজপুর জেলা ও জেলা শহরের ৭টি সিনেমা হলের সবই বন্ধ।

ভোলার ১২টি হলের ৪টি আছে। রাজশাহী শহরের ৬টির একটিও নেই। জেলার অন্য এলাকার ২৫টির মধ্যে ৩টি আছে। নাটোরের ২৩টি হলের মধ্যে ১টি আছে। নওগাঁ শহরে আছে একটি, জেলায় ১৬টির মধ্যে ২টি আছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ১৪টি হলের মধ্যে ১টি আছে। রংপুর জেলা শহরে ৯টি হলের মধ্যে একটি আছে। সারা জেলার ২৪টির মধ্যে ৩টি আছে। লালমনিরহাট জেলা শহরে ছিল ২টি, আছে ১টি। সারা জেলার ৫টির সবই বন্ধ। গাইবান্ধা শহরের ৩টি হলের সব বন্ধ। সারা জেলার ১১টির মধ্যে আছে ৩টি।

কুড়িগ্রাম শহরের ৪টি, জেলার ১৫টির সবই বন্ধ। পাবনার ৪০টি হলের ৩টি আছে। দিনাজপুরের সারা জেলায় ২৮টি হলের মধ্যে ৪টি আছে। ঠাকুরগাঁও ৩০টি হলের ৩টি লড়াই করছে টিকে থাকতে। পঞ্চগড় এখন সিনেমা হলবিহীন জেলা। শহরে ২টিসহ জেলার বাকি ১১টি হলের সবই বন্ধ। বগুড়ার ৪৩ হলের মধ্যে মাত্র ৮টি আছে। জয়পুরহাটের ১৯টি হলের মধ্যে ৩টি আছে। সিরাজগঞ্জ জেলা শহরে ছিল ৭টির মধ্যে ২টি খোলা থাকলেও চলে না। সারা জেলায় ছিল ৩৩টি। আছে ৩টি। নীলফামারীর ১৫টি হলের মধ্যে দুটি আছে। বরগুনাতে এখন আর কোনও হল নেই। পটুয়াখালীর ৭টির মধ্যে ২টি আছে। আনন্দ সিনেমা হলের ভেতরের পরিবেশ

/এমএম/এমওএফ/
টাইমলাইন: শিল্প খাত
২৪ জুন ২০২৫, ১৪:০০
সিনেমা: হাদ আছে হু আছে, দুধ-বাটি নাই!
সম্পর্কিত
ভোক্তা ব্যয় হ্রাসে শিল্প উৎপাদন ও খুচরা বিক্রিতে মন্দা: অর্থনীতির বাস্তবচিত্র
ভোক্তা ব্যয় হ্রাসে শিল্প উৎপাদন ও খুচরা বিক্রিতে মন্দা: অর্থনীতির বাস্তবচিত্র
রিকন্ডিশনড গাড়ির বাজারে খরা, নির্বাচনের অপেক্ষায় ব্যবসায়ীরা
রিকন্ডিশনড গাড়ির বাজারে খরা, নির্বাচনের অপেক্ষায় ব্যবসায়ীরা
ফ্ল্যাট বিক্রিতে ধস, নির্মাণ খাতে ছাঁটাইয়ের শঙ্কা
ফ্ল্যাট বিক্রিতে ধস, নির্মাণ খাতে ছাঁটাইয়ের শঙ্কা
ধুঁকছে শিল্প খাত, কী বলছেন ব্যবসায়ীরা
ধুঁকছে শিল্প খাত, কী বলছেন ব্যবসায়ীরা
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
পরবাসে থেকে পারসার উপলব্ধি  
পরবাসে থেকে পারসার উপলব্ধি  
রাহাত-রুবাইয়াতের গান: রেকর্ডিং দুবাই, ভিডিও লন্ডনে
রাহাত-রুবাইয়াতের গান: রেকর্ডিং দুবাই, ভিডিও লন্ডনে
৩১ বছর পর দুই বন্ধুর দেখা!
৩১ বছর পর দুই বন্ধুর দেখা!
২৩তম প্রযোজনার ৩৩তম মঞ্চায়ন
২৩তম প্রযোজনার ৩৩তম মঞ্চায়ন
মীনা কুমারীর চরিত্রে কিয়ারা আদভানি!
মীনা কুমারীর চরিত্রে কিয়ারা আদভানি!