X
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪
১৬ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুর ভ্রমণ কাহিনিতে চীনের উন্নয়ন ভাবনা

সাদ্দিফ অভি
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৫:৩০আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৬:৪১

বঙ্গবন্ধুর ‘আমার দেখা নয়াচীন’ বইয়ের প্রচ্ছদ বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’র পর তাঁর লেখা তৃতীয় বই ‘আমার দেখা নয়াচীন’ প্রকাশিত হয়েছে। ১৯৫২ সালে ‘পিস কনফারেন্স অব দি এশিয়ান অ্যান্ড প্যাসিফিক রিজিওনস’-এ তৎকালীন পাকিস্তানের প্রতিনিধি দলের সদস্য হয়ে পূর্ব বাংলার প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার আগে ওই বছরই তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান।

বঙ্গবন্ধুর চোখে দেখা চীনের ভবিষ্যৎ উন্নয়ন, মিয়ানমারের জাতিগত সংঘাত, পূর্ববঙ্গের মানুষ যারা সংখ্যায় বেশি তাদেরকে কীভাবে বঞ্চনা করেছে পাকিস্তানের শাসক শ্রেণি, এ বইয়ে সেই ধারণাও পাওয়া যায়। বইটির মুখবন্ধ লিখেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমার দেখা নয়াচীন’ বইটি পড়লে, আমরা যেমন চীন দেশকে জানতে পারি, আবার চমৎকার একটা ভ্রমণ কাহিনি—যা সে দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, নদীতে নৌকা ভ্রমণ, রিকশায় ভ্রমণ, ট্রেনে ভ্রমণ আর আকাশপথ তো আছেই। সব ভ্রমণে তার হাস্যরসিকতা, প্রবীণ নেতাদের প্রতি দায়িত্ববোধ সবই জানা যায়। এই ভ্রমণ কাহিনি যতবার পড়েছি, আমার ততবারই মনে হয়েছে যে, তিনি (বঙ্গবন্ধু) গভীর পর্যবেক্ষণ করেছেন প্রতিটি ক্ষেত্রে। তার কারণ হলো—তার ভেতরে যে সুপ্ত বাসনা ছিল বাংলার মানুষের মুক্তির আন্দোলন ও স্বাধীনতা অর্জন, সেটাই বারবার ফুটে উঠেছে আমার মনে, এ কথাটা অনুভব করছি।’

রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে মাসব্যাপী অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২০ উদ্বোধনের পর বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বইটি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘কারাগারে খাতা সেন্সর করে দেওয়া হতো। সেই সেন্সরের সিল থেকে আমরা জানতে পারি এটি ১৯৫৪ সালে লেখা। মলাটটি অনেকটা চীনা অক্ষরের মতো করে লেখা। মনোগ্রামটি পিকাসোর তৈরি করা। ৫২ সালে যে শান্তি সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু চীনে গিয়েছিলেন, পূর্ববঙ্গ থেকে প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে তিনি আমন্ত্রিত ছিলেন। সেখানে যাবার পথটি কীভাবে গিয়েছেন, তার বিস্তারিত বর্ণনা আছে।’

মুখবন্ধে প্রধানমন্ত্রী লেখেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫২ সালে চীন ভ্রমণ করেন। পিস কনফারেন্স অব দি এশিয়ান অ্যান্ড প্যাসিফিক রিজিওন্স-এ তদানীন্তন পাকিস্তানের প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসেবে পূর্ব বাংলা থেকে তার নাম দেওয়া হয়। এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় অক্টোবর মাসে। ওই বছরই তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান। ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ থেকে বাংলাকে মাতৃভাষার মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে যে আন্দোলন তিনি করেছিলেন, সেই আন্দোলনের দিন থেকে বারবার কারাগারে বন্দি হয়ে থাকেন। যখনই মুক্তি পেয়েছেন আবারও বাংলা ভাষাকে মাতৃভাষা মর্যাদা দান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের দাবি, ক্ষুধার্ত মানুষের অন্নের দাবিতে আন্দোলন ও ভুখা মিছিল করেন। কৃষক, শ্রমিকদের দাবিসহ বিভিন্ন আন্দোলন—যা সাধারণ জনগণের ন্যায্য অধিকার আদায়ের দাবি ছিল, সেইসব দাবি নিয়ে তিনি আন্দোলন করেছেন। যেখানেই গরিব কৃষক, দাওয়ালরা বঞ্চিত হয়েছেন, তিনি ছুটে গেছেন তাদের কাছে।’

নয়াচীন নিয়ে বঙ্গবন্ধুর হাতে লেখা খাতার পৃষ্ঠা মুখবন্ধে বলা হয়, রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে বঙ্গবন্ধু সমগ্র পূর্ববঙ্গে যখন সফর করতে যান, তখন ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জসহ বিভিন্ন জায়গায় গ্রেফতার হন। মুক্তি পেয়ে আবারও আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। একপর্যায়ে ১৯৪৯ সালের অক্টোবর মাসে গ্রেফতার হন এবং ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ সালে মুক্তি পান। বঙ্গবন্ধু দীর্ঘদিন অনশন করেছিলেন বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদার দাবি আদায়ের জন্য। এসময় তার শরীর ভেঙে পড়ে। এরপর সুস্থ হয়ে ঢাকায় এসে আবারও কাজ শুরু করেন। সেই সময় চীন দেশে শান্তি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

নয়াচীন হিসেবে চীন দেশকে অভিহিত করা হতো উল্লেখ করে বলা হয়, সেই চীন দেশে শান্তি সম্মেলনে যাওয়ার দাওয়াত আসে এবং তিনি যোগদান করেন। চীন ভ্রমণের সময় বঙ্গবন্ধুর যে অভিজ্ঞতা হয়, তা তিনি বর্ণনা করেন। এখানে একটা বিষয় লক্ষণীয় যে, এই লেখার মধ্য দিয়ে আমরা দেখি, পাকিস্তানি শাসকবর্গ পূর্ববঙ্গের মানুষ যারা সংখ্যায় বেশি অর্থাৎ ৫৬ ভাগ, তাদের কীভাবে বঞ্চনা করেছে, সে ধারণাও পাওয়া যায়। ভ্রমণের প্রস্তুতি হিসেবে পাসপোর্ট বানাতে করাচিতে আবেদন পাঠাতে হবে। তখন পাকিস্তানের রাজধানী করাচিতে ছিল। সেখান থেকে হুকুম এলেই পাসপোর্ট তৈরি হয়ে আসে। বিদেশ যাবার ভিসা পেতে হলে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে প্রতি পদে যে বিড়ম্বনা হতো, বই পড়লে তা অনুধাবন করা যায়।

মিয়ানমারের জাতিগত সংঘাতের চিত্র বঙ্গবন্ধুর এই লেখায় আছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই ভ্রমণ কাহিনির মধ্যে তখনকার বার্মায় (মিয়ানমার) যাত্রা বিরতির কিছু ঘটনাও তিনি উল্লেখ করেছেন। সেখানকার যে অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছেন, তার মধ্য থেকে সে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, আর্থ-সামাজিক অবস্থার বিষয়টা তুলে ধরেছেন। বার্মার আর্থ-সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা নেওয়া যায়। যে সমস্যা এখনও বিদ্যমান, তা হলো জাতিগত  সংঘাত। আমরা বর্তমান সময়েও সেই একই সংঘাতপূর্ণ অবস্থা দেখতে পাচ্ছি।’


খাতাটির বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষের সার্টিফায়েড ভ্রমণ কাহিনি উল্লেখ করে বলা হয়, প্লেনে চড়ে আকাশে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা, এমনকি ছোটখাটো বিষয়ে যেমন মেঘের ভেতরে বাতাস থাকে না বলে প্লেনে যে বাম্পিং হয়, আর সেটা যে কারও ভীতির কারণ, তা সুন্দরভাবে বর্ণনা করেছেন। সুদূর চীন ভ্রমণের সময় বিশ্ব শান্তি সম্মেলনের অনেক খুঁটিনাটি বিষয়, যা হয়তো আমাদের মতো সাধারণ মানুষের চোখে পড়তো না। কিন্তু সেই বিষয়গুলোও চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন। বিশ্ব নেতাদের সাক্ষাৎ, কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক, সমাজসেবক ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের নেতাদের সঙ্গে মেলামেশার সুযোগ পেয়েছেন বঙ্গবন্ধু। চীনের মহান নেতা মাও সে তুং-এর নেতৃত্বে নয়া চীনের জনগণ দীর্ঘ সংগ্রাম ও যুদ্ধ বিজয়ের মধ্য দিয়ে মুক্তি পেয়েছে। স্বাধীন দেশের নাগরিকদের জীবনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে উন্নয়নের যাত্রা শুরুসহ নানান বর্ণনা এই লেখায় উল্লেখ রয়েছে।

বিপ্লবের পর সামাজিক ক্ষেত্রে যে একটা পরিবর্তন আসে, তা নিয়ন্ত্রণ করে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে দেশ কীভাবে পরিচালিত করা যায়, তা তিনি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন। একটা ধর্মান্ধ জাতিকে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে দেশের সব শ্রেণি-পেশার উন্নয়নে অংশগ্রহণ, দেশপ্রেম, কর্তব্যবোধ সম্পর্কে সচেতন করা এবং মৌলিক চাহিদা পূরণ করে নিজেদের মাতৃভূমিকে গড়ে তোলার স্বপ্ন ও পরিকল্পনার চিত্র এই লেখায় পাওয়া যাবে।

বঙ্গবন্ধু গভীরভাবে চীনকে পর্যবেক্ষণ করেছেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, তাদের জীবনযাত্রা, অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ মৌলিক চাহিদাগুলো মেটানোর জন্য চীন সরকার বিপ্লবের পর কীভাবে উন্নতি করেছে এবং  কীভাবে  পরিবর্তন এনেছে, দেশটির মানুষের আচরণে তাও জানা যায়। তিনি (বঙ্গবন্ধু) শুধু সম্মেলনেই অংশগ্রহণ করেন নাই, তিনি এই দেশকে খুব গভীরভাবে দেখেছেন। কৃষকের বাড়ি, শ্রমিকের বাড়ি, তাদের কর্মসংস্থান, জীবনমান সবই তিনি দেখেছেন। ছোট ছোট শিশু ও ছাত্রছাত্রীদের গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন। শিশু বয়স থেকেই দেশপ্রেম ও কর্তব্যবোধ জাগ্রত করার যে প্রচেষ্টা ও কর্মপন্থা, তাও অবলোকন করেছেন। তিনি মুক্তমন নিয়ে যেমন ভ্রমণ করেছেন, আবার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দিয়ে পর্যবেক্ষণ করেছেন। প্রতিটি বিষয় গভীর দৃষ্টি দিয়ে দেখেছেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই ভ্রমণ কাহিনি অতি প্রাঞ্জল বর্ণনা দিয়ে তিনি পাঠকের জন্য উপভোগ্য করেছেন। প্রতিটি শব্দ, বাক্য, রচনার যে পারদর্শিতা আমরা দেখি, তাতে মুগ্ধ হয়ে যাই। বাঙালি জাতিকে তিনি অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে সংগ্রামের পথ পাড়ি দিয়ে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে বাংলাদেশ ক্ষত-বিক্ষত হয়েছিল। সমগ্র বাংলাদেশকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে গণহত্যা ও নারী ধর্ষণের মধ্য দিয়ে এক বীভৎস পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল। আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি। স্বাধীনতা অর্জনের নেতৃত্ব ১৯৪৮ সাল থেকে ভাষা-আন্দোলনের পথ বেয়ে ১৯৭১ সালে বিজয় অর্জন করি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে। তাঁরই লেখা এ ভ্রমণ কাহিনি। ১৯৫২ সালের চীন ভ্রমণের এ কাহিনি তিনি রচনা করেছিলেন ১৯৫৪ সালে যখন কারাগারে ছিলেন। তাঁর লেখা খাতাটির ওপর গোয়েন্দা সংস্থার সেন্সর ও কারাগার কর্তৃপক্ষের যে সিল দেওয়া আছে, তা থেকেই সময়কালটা জানা যায়।’

চীনে ১৯৫২ সালে অনুষ্ঠিত ‘পিস কনফারেন্স অব দ্য এশিয়ান অ্যান্ড প্যাসিফিক রিজিওনস’-এ অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিরা বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় চীন সফর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৫৭ সালে তিনি আরও একবার চীন ভ্রমণ করেছিলেন—যখন শিল্প, বাণিজ্য, শ্রম, দুর্নীতি দমন ও ভিলেজ-এইড দফতরের মন্ত্রী ছিলেন। সে সময় চীন সরকারের আমন্ত্রণে পাকিস্তান সংসদীয় দলের নেতা হিসেবে চীন ভ্রমণে যান তিনি। তবে সেই ভ্রমণের কোনও লেখা পাই নাই। সে সময়ের ছবি আমাকে উপহার দিয়েছেন চীনের বর্তমান রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং। তিনি যখন বাংলাদেশ ভ্রমণে আসেন, তখন একটা অ্যালবাম আমাকে উপহার দেন। সেই ছবিগুলো এখানে তুলে দিয়েছি। রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘আমি আশা করি, পাঠকসমাজের কাছে এই বইটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জীবনের অনেক ঘটনা জানার সুযোগ করে দেবে। অনেক অজানা কাহিনি জানারও সুযোগ হবে। তার লেখা ভ্রমণ কাহিনি পড়লে আজকে চীন যে উন্নতি করেছে, তারই যেন ভবিষ্যৎ ধারণা তিনি দিয়েছেন। তার দূরদৃষ্টি এবং পর্যবেক্ষণের গভীরতা আমাকে বিস্মিত করেছে। যখনই চীন ভ্রমণ করেছি, বারবার এই লেখার কথা আমার মনে পড়েছে। কীভাবে তার ভবিষ্যদ্বাণী সত্যে পরিণত হয়েছে। চীন বর্তমান বিশ্বে অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তিশালী দেশ হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। ১৯৫২ সালে চীন ভ্রমণের সময় গভীর দৃষ্টি নিয়ে নয়াচীন পর্যবেক্ষণ করেছিলেন এবং যে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, সেকথাই বাস্তবে রূপ পেয়েছে।’

প্রায় ২০০ পৃষ্ঠার এই বইটি প্রকাশ করেছে বাংলা একাডেমি। বইটির শুরুতেই ভ্রমণের সময় বঙ্গবন্ধুর হাতে লেখা কয়েকটি পৃষ্ঠার ছবি সংযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া, বঙ্গবন্ধুর কিছু দুর্লভ ছবি বইটির শেষে যুক্ত করা হয়েছে।

‘আমার দেখা নয়াচীন’ বইয়ের ফ্ল্যাপ

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবসময় আমার মায়ের কথাই মনে পড়ে। আমার মা যে কত রাজনীতি-সচেতন ছিলেন, কত দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ছিলেন, আমার আব্বাকে তিনি লেখার প্রেরণা দিতেন। খাতাগুলো কিনে দিতেন। আবার আব্বা যখন জেল থেকে মুক্তি পেতেন, তখন খাতাগুলো সংগ্রহ করে সযত্নে রেখে দিতেন। তিনি নিশ্চয়ই আশা করেছিলেন, এই লেখাগুলো একসময় বই আকারে ছাপা হবে। কিন্তু তিনি তা দেখে যেতে পারলেন না। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে বাবার সঙ্গেই মা শাহাদত বরণ করেছেন। ঘাতকের বুলেটের নির্মম আঘাতে চিরদিনের মতো না ফেরার দেশে চলে গেছেন। আমার ভাই কামাল ও জামাল এবং তাদের নব পরিণীতা স্ত্রী সুলতানা ও রোজি, আমার ১০ বছরের ছোট ভাই শেখ রাসেল, একমাত্র চাচা শেখ নাসেরসহ পরিবারের ১৮ জন সদস্য নিহত হয়েছেন। আমার মা দেখে যেতে পারলেন না, তারই সযত্নে রাখা অমূল্য সম্পদ জনতার কাছে পৌঁছে গেছে। মায়ের কথাই সবসময় আমার মনে পড়ে। মাকে যদি একবার বলতে পারতাম, দেখাতে পারতাম, আব্বার লেখাগুলো পুস্তক আকারে প্রকাশিত হয়েছে, তাহলে কত খুশি হতেন। মা, তোমার কথাই বারবার মনে পড়ে মা।’

প্রধানমন্ত্রী জানান, দীর্ঘদিন ধরে এই বইয়ের ওপর কাজ করেছেন প্রয়াত বেবী মওদুদ ও তিনি (প্রধানমন্ত্রী) নিজে। আর বইটির ইংরেজি অনুবাদ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক ও সাহিত্যিক ড. ফখরুল আলম। এছাড়া, শান্তি সম্মেলনের অনেক ছবি সংগ্রহ করে দিয়েছেন কবি তারিক সুজাত।

/এপিএইচ/এমএমজে/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
‘“সুলতান পদক” পেয়ে আমি গর্বিত ও ধন্য’
‘“সুলতান পদক” পেয়ে আমি গর্বিত ও ধন্য’
বুয়েটকে হিজবুত তাহরীর-মুক্ত করতে ৬ শিক্ষার্থীর স্মারকলিপি
বুয়েটকে হিজবুত তাহরীর-মুক্ত করতে ৬ শিক্ষার্থীর স্মারকলিপি
বরুণের স্পিনের পর সল্ট ঝড়ে দিল্লিকে হারালো কলকাতা
বরুণের স্পিনের পর সল্ট ঝড়ে দিল্লিকে হারালো কলকাতা
বেতন বৈষম্যে উচ্চশিক্ষার মান হারাচ্ছে বেসরকারি কলেজগুলো
বেতন বৈষম্যে উচ্চশিক্ষার মান হারাচ্ছে বেসরকারি কলেজগুলো
সর্বাধিক পঠিত
‘পুলিশ’ স্টিকার লাগানো গাড়িতে অভিযান চালাবে পুলিশ
‘পুলিশ’ স্টিকার লাগানো গাড়িতে অভিযান চালাবে পুলিশ
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
আজ কি বৃষ্টি হবে?
আজ কি বৃষ্টি হবে?
জালিয়াতির মামলায় সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তার ২৬ বছরের কারাদণ্ড
জালিয়াতির মামলায় সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তার ২৬ বছরের কারাদণ্ড
মঙ্গলবার দুই বিভাগের সব, তিন বিভাগের আংশিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে
মঙ্গলবার দুই বিভাগের সব, তিন বিভাগের আংশিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে