করোনাভাইরাস থেকে জনসাধারণের সুরক্ষায় রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজার এলাকাকে রেড জোন ঘোষণা করে পরীক্ষামূলকভাবে লকডাউন করা হয়েছে। বুধবার (১০ জুন) থেকে শুরু হওয়া এ লকডাউন চলবে অন্তত ১৪ দিন পর্যন্ত। ওই এলাকায় কাউকেই বের হতে বা প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। প্রয়োজনীয় সব পণ্য সরকারের পক্ষ থেকে ভ্যানে করে পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু তারপরও পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে বাইরে থেকে বিভিন্ন পণ্য প্রবেশ করতে দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার ১১ জুন পূর্ব রাজাবাজারের চারদিকে ঘুরে দেখা গেছে প্রত্যেকটি পথই বন্ধ। শুধু জরুরি চলাচলের জন্য আইবিএ হোস্টেলের পাশের রাস্তাটি খোলা রাখা হয়েছে। এই পথ দিয়ে ওই এলাকায় যাওয়া-আসার বিষয়টি তদারকি করছে পুলিশ। সঙ্গে রয়েছে ৪০ জন স্বেচ্ছাসেবক। আইবিএ হোস্টেলের পাশের গেট এবং তেজগাঁও হোস্টেলের পাশের রাস্তায় স্থায়ীভাবে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। কিন্তু অন্য ছয়টি প্রবেশপথে ভ্রাম্যমাণভাবে টহল দিচ্ছে পুলিশ। আর সেই সুযোগেই কেউ কেউ বাইরে থেকে বাজার করিয়ে আনছেন। এমনটাই দেখা গেছে বিআরবি হাসপাতালের পাশ দিয়ে পূর্ব রাজাবাজার এলাকায় ঢোকার রাস্তার মুখে।
ওই রাস্তার প্রবেশমুখে দাঁড়িয়ে পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, কেউ পাশের দোকান থেকে চা-সিগারেট আনিয়ে খাচ্ছেন। কেউ পরিচিত কাউকে এটিমএম কার্ড দিয়ে টাকা উঠিয়ে আনছেন। আবার কাউকে দেখা গেছে কাঁচাবাজারসহ বাজারের ব্যাগ ভেতরে প্রবেশ করাতে। কেউ তেল-সাবান, কেউ খাওয়ার দুধ আনিয়ে নিচ্ছেন। আবার কেউ খবরের কাগজের জন্য গেটের উপরে উঠে বসে অপেক্ষা করছেন। ভেতরে সরকারের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ বাজার চালু রয়েছে। তারপরও কেন বাইরে থেকে এনে বন্ধ থাকা এই পথ দিয়ে বাজার প্রবেশ করানো হচ্ছে? এমনটা জানতে চাইলে ফারহানা সুলতানা নামে একজন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ভেতরে যে ভ্রাম্যমাণ বাজার রয়েছে, তা আমার জানা ছিল না। গতকাল এমন কোনও বাজার দেখিনি ভিতরে। ঘরে বাজার নেই। তাই বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে বাজার করে আনতে হচ্ছে।’
এমন পরিস্থিতিতে সেখানে কর্তব্যরত শেরেবাংলা নগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমার অজানা। আমি শুধু এই প্রবেশপথের (আইবিএ হোস্টেলের পাশের রাস্তা) দায়িত্বে আছি। আপনার এমন অভিযোগ ঠিক হওয়ার কথা না। মাত্রই কয়েকটি খাবারের গাড়ি ভেতরে প্রবেশ করেছে। ভেতরে তো অনেক গলি। হয়তো অনেকের নজরে আসেনি বিষয়টি। এমন হতে পারে, গাড়িগুলো এক গলিতে ছিল আর উনি আরেক গলিতে খুঁজেছেন। টাইমিংটা হয়নি তাদের সঙ্গে।’
এমন পরিস্থিতিতে লকডাউন বিঘ্নিত হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অবশ্যই লকডাউনের হ্যাম্পার হচ্ছে। পুলিশ কমপ্লিটলি সেটা হ্যান্ডেল করতে পারছে না।’
ছবি: সাজ্জাদ হোসেন