২০২০-২০২১ অর্থ বছরের বাজেটে ইন্টারনেট বিলের ওপর অতিরিক্ত ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে দেশের বিশিষ্ট ৪৪ জন ব্যক্তি বিবৃতি দিয়েছেন। শনিবার (২৫ জুলাই) গণমাধ্যমে এই বিবৃতি পাঠানো হয়। মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেটের ওপর আরোপিত অতিরিক্ত কর/ভ্যাটের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করেছেন বিবৃতিদাতারা।
স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও ঢাকা স্কুল অব ইকোনোমিক্স-এর প্রতিষ্ঠাতা ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দীন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাফর ইকবাল, কথা সাহিত্যিক ও বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান সেলিনা হোসেন, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব সাইখ সিরাজ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, বাংলাদেশ ফেডারেশন অব ওমেনের প্রেসিডেন্ট রোকেয়া আফজাল রহমান, বুয়েটের কম্পিউটার সাইন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে. চৌধুরীসহ ৪৪ জন।
বিবৃতিতে বিশিষ্টজনরা বলেন, করোনা মহামারির কারণে শিক্ষা ক্রমশ তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে ডিজিটাল ডিভাইস ও ইন্টারনেট ছাড়া সব ধরনের শিক্ষার্থীর শিক্ষণ-শিখন প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করা কঠিন হবে। কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে এবং নতুন প্রজন্মের মেধা ও সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হলে ডিজিটাল প্রযুক্তির বিকল্প নেই। ঠিক এসময় তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষ করে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেটের ওপর আরোপিত অতিরিক্ত কর/ভ্যাটের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন ।
তারা বলেন, এখন প্রযুক্তিকে আরও সহজলভ্য করে তোলা প্রয়োজন। কিন্তু আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, ২০২০-২১ অর্থবছরে ইন্টারনেটের ওপর কর কমানোর পরিবর্তে বাড়ানো হয়েছে!! বাজেটে দুই ধাপে (ব্যান্ডউইথ পাইকারি কেনা এবং খুচরা বিক্রির জন্য) ১৫% হারে ভ্যাট আরোপ করার ফলে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী শিক্ষার্থীদের প্রায় ৩২.২৫% অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হবে। এটা অবশ্যই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ লক্ষ্য অর্জনের পরিপন্থী।
তারা বলেন, আমরা আশা করছি সরকার বাংলাদেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিনামূল্যে উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করবেন। তবে আমরা জানি নিরবচ্ছিন্নভাবে এই সেবা নিশ্চিত করতে বেশ কিছুদিন সময় লাগতে পারে। তাই বর্তমানে ইন্টারনেট বিলের ওপর আরোপিত অতিরিক্ত ভ্যাট মওকুফ করে এবং মোবাইল ফোনের কল রেটের ওপর মূল্য ছাড় দিয়ে সরকার প্রযুক্তি সেবা সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার পথ সুগম করবেন, এটা আমাদের জোর দাবি।