শনিবার, সকাল ১১টা। লালমাটিয়া সি ব্লক। কয়েকজন ছেলেমেয়ে হ্যান্ডমাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথা বলছেন। একইসঙ্গে তারা করোনায় মৃতদের শেষকৃত্য আর অসুস্থদের জন্য অক্সিজেন সরবরাহের জন্য অর্থ সহায়তা চাইছেন। এমন দৃশ্য দেখা গেছে শ্যাওড়াপাড়া ও পাইকপাড়ায়। দল বেধে কিছু ছেলেমেয়ে ঈদের আগে করোনা আক্রান্তদের সহায়তায় কেউ কিছু সহায়তা করতে চান কিনা জানতে চাইছেন। কেউ কিছু সহায়তা দিলে আরেকটু বেশি দেওয়ার আবদারও করছেন।
লালমাটিয়ায়র অর্থ সহায়তা চাওয়া দলের কাছে পরিচয় জানতে চাইলে তারা নিজেদের ‘হোপ ফর লাইফ’নামে একটি সংগঠনের কর্মী বলে দাবি করে। সংগঠনটি কার এমন প্রশ্নে তারা জানায়, ‘মোহম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতির ভাতিজার সংগঠন।’ হ্যান্ডমাইকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা উচ্চস্বরে এ ধরনের বক্তব্য দেওয়ার আগে এলাকার সোসাইটির অনুমতি নিয়েছেন কিনা প্রশ্নে নেতিবাচক উত্তর দেন তারা। কথা হয় সংগঠনের প্রধান আহসান হাবিবের সঙ্গে। তিনি বারবারই বলতে থাকেন, ‘ফেসবুক পেজে গেলেই আমাদের বিষয়ে জানতে পারবেন।‘ কোন কোন এলাকায় তারা কার্যক্রম চালাচ্ছে প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ঢাকার ভেতর।’ কতজন ছেলেমেয়ে কাজ করছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই কয়জনই।’ মাত্র ছয় সাতজন তরুণ কী করে পুরো ঢাকা শহর থেকে সহায়তা নিচ্ছে প্রশ্নে তিনি কোনও উত্তর দেননি।
পাইকপাড়ার দলের কাছেও কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি। ব্যক্তিগত উদ্যোগে সহায়তা তুলছেন দাবি করে টিমের একজন বলেন, ‘আমাদের নিয়ে রিপোর্ট করবেন না প্লিজ।’
এই গ্রুপের কাউকে আগে দেখেননি, চেনেন না উল্লেখ করে দুই হাজার টাকা দিয়ে সহায়তা করা এক ব্যক্তি মমিনুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তারা এসে জানালো উদ্যোগের কথা। আমি সহায়তা করছি আমার নিয়ত থেকে। আশা করছি তারা জায়গা মতো পৌঁছে দেবে। কিন্তু এলাকার বাইরে গিয়ে এধরনের কাজ যখন তারা করবে তখন এলাকার লোকদের সঙ্গে কথা বলে নিলে ভালো।’
করোনা শুরুর সময় থেকেই খাদ্য সহায়তা দিয়ে কাজ করছেন ফেরদৌস আহমেদ উজ্জ্বল। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এধরনের স্বেচ্ছাসেবার কাজ করতে হলে নানা ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। কোনও একজনকে কেউ সন্দেহ করলে বাকি যে সংগঠনগুলো কাজ করে তাদের ওপর প্রভাব পড়ে। কিভাবে সাহায্য চাইবেন এবং প্রাপ্ত সহায়তা ব্যবস্থাপনা কিভাবে করবেন সবকিছুতে বাড়তি মনোযোগ দরকার হয়।’
৩২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ হাসান নূর ইসলাম রাষ্টন বলেন, ‘এধরনের কোনও সংগঠন আমার সঙ্গে কথা বলেনি। আমি খোঁজ নিয়ে দেখবো।’